Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

জলাশয়ের ধারের আবর্জনা সাফ নিয়ে টানাপড়েন

কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘‘পুর নোটিসে শুধু পুকুরপাড় বা জলাশয়ের আবর্জনা সাফ করাই নয়, ভেঙে যাওয়া পাড় সারানোর ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট বরো থেকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল।

 অপরিষ্কার: বিদ্যাসাগর কলোনির পুকুরের পাশে এ ভাবেই জমেছে আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র

অপরিষ্কার: বিদ্যাসাগর কলোনির পুকুরের পাশে এ ভাবেই জমেছে আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র

কৌশিক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৯ ০০:১৫
Share: Save:

স্তূপীকৃত জঞ্জালে ডিম পাড়ে ডেঙ্গির জীবাণুবাহী মশা। শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাশয় বা পুকুরের ধারে জমে থাকা আবর্জনা সাফ করার দায়িত্ব কার, তা নিয়ে বিতর্ক ছিল পুরসভার অন্দরেই। পুর কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে জরুরি ভিত্তিতে স্থানীয় বরোকে ওই ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, অধিকাংশ ওয়ার্ডে এই নিয়ম মানা হচ্ছে না। অথচ ডেঙ্গি প্রতিরোধ অভিযানে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর অন্য সব দফতরগুলিকে যৌথ ভাবে শামিল হওয়ার ডাক দিয়েছে। এ হেন পরিস্থিতিতে জলাশয়ের আবর্জনা সাফ করা নিয়ে থেকেই গিয়েছে প্রশ্নচিহ্ন।

কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘‘পুর নোটিসে শুধু পুকুরপাড় বা জলাশয়ের আবর্জনা সাফ করাই নয়, ভেঙে যাওয়া পাড় সারানোর ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট বরো থেকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। তার জন্য যে পরিকাঠামো দরকার, তা তৈরি করছেন পুর কর্তৃপক্ষ। তবে সব জায়গায় ওই পরিকাঠামো এখনও পুরোপুরি তৈরি হয়নি।’’ স্বপনবাবুর দাবি, এমন ক্ষেত্রে মূল দায়িত্ব নিতে হবে এলাকার কাউন্সিলরকেই।

কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, পুরসভার অন্তর্গত কোনও জলাশয় বা পুকুর সংস্কার এবং তার ধারে জমে থাকা জঞ্জাল পরিষ্কারের দায়িত্ব থাকে প্রজেক্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের উপরে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গি সচেতনতা অভিযানের সময়ে পুর কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানান, ডেঙ্গি মোকাবিলায় প্রয়োজনে জলাশয় বা পুকুরপাড় পরিষ্কার করবে সংশ্লিষ্ট বরো। পাশাপাশি যে সব জায়গায় জলাশয়ের পাড় ভেঙে গিয়েছে, তা-ও মেরামত করবে তারা। বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছিল পুর স্বাস্থ্য দফতর। দফতরের উপদেষ্টা তপন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ডেঙ্গি এবং ম্যালেরিয়া ঠেকাতে যাতে এলাকা পরিষ্কার রাখা যায়, সে কারণেই এই সার্কুলার জারি করেছিল পুর প্রশাসন। সব গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মধ্যে সমন্বয় করার কথাও বলা হয়েছিল।’’ চলতি বছরের শুরু থেকেই ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের নেতৃত্বে শুরু হয়েছে ডেঙ্গি সচেতনতা অভিযান। স্বাস্থ্য দফতর থেকেও এলাকা পরিষ্কার রাখার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পুর কর্তৃপক্ষ জানান, পুরসভার ১০ নম্বর বরো সবচেয়ে বড়। সেখানে বেশ কয়েকটি বড় জলাশয় রয়েছে। ওই বরোর অন্তর্গত ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, আরএসপির দেবাশিস মুখোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, তাঁর এলাকায় মোট পুকুরের সংখ্যা ২২। বাঘা যতীন এলাকার রামগড়, বিদ্যাসাগর কলোনির জলাশয় এবং পুকুরগুলির ধারে জমে আছে জঞ্জাল। একাধিক বার বলা সত্ত্বেও তা সাফ হয়নি। ১১ নম্বর বরোর অন্তর্ভুক্ত ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডেও জলাশয় সংস্কার না হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় সিপিএম কাউন্সিলর নন্দিতা রায়। তিনি বলেন, ‘‘ডেঙ্গির প্রকোপ রুখতে পুরসভার এই উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। কিন্তু তার পরে কোনও কাজ হয়নি।’’ যদিও ১০ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘একেবারে কোথাও কাজ হয়নি, তেমন নয়। তবে স্থানীয় বরো থেকে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pollution Environment Kolkata Municipal Corporation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE