গাছ কাটার কাজ চলছে। ফাইল চিত্র
গাছ কাটবে কে, তা নিয়ে এক প্রকার ‘গৃহযুদ্ধে’র পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কলকাতা পুরসভায়।
কারণ, পুরসভার উদ্যান দফতর লিখিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় শহরের গাছ কাটার দায়িত্ব শুধুই তারা নেবে না। প্রসঙ্গত, শহরের গাছ কাটার দায়িত্ব উদ্যান দফতরেরই। সে ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ুক কিংবা পুর প্রকল্পের জন্য গাছ কাটা হোক।
সম্প্রতি উদ্যান দফতরের তরফে পুর কমিশনার খলিল আহমেদের কাছে নোট পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, পুর প্রকল্পের জন্য গাছ কাটার দায়িত্ব তারা আর নেবে না! যে দফতরের প্রকল্প, তাদেরকেই ওই দায়িত্ব নিতে হবে। খুব বেশি হলে উদ্যান দফতর ‘এনওসি’ দিতে পারবে। উদ্যান দফতরের এই সিদ্ধান্তের পরেই পুরসভার অন্দরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। একাধিক দফতরের প্রশ্ন, তা হলে গাছ কাটবে কে? পুরসভার এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘গাছ কাটা এবং ডাল ছাঁটার দায়িত্ব তো উদ্যান দফতরেরই। হঠাৎ করে তারা গাছ কাটবে না বলে সিদ্ধান্ত নিল! এটা কী করে হয়।’’
উদ্যান দফতর অবশ্য পুর কমিশনারের কাছে লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছে, পুরসভার বিভিন্ন দফতর নানা সময়ে তাদের কাছে গাছ কাটার আবেদন করে থাকে। এমনকি দ্রুত গাছ কাটতে ‘চাপ’ সৃষ্টি করা হয়। অথচ গাছ কাটতে বন দফতরেরও অনুমোদন লাগে, প্রতিদিনের কাজ সামলে উদ্যান দফতরের পক্ষে তা দ্রুত জোগাড় করা সম্ভব হয় না! ফলে এখন থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বন দফতরের কাছ থেকে গাছ কাটার অনুমোদন জোগাড় করতে হবে সংশ্লিষ্ট দফতরকেই। উদ্যান দফতর আরও জানিয়েছে, ‘এনওসি’ দেওয়ার পাশাপাশি, তারা শুধুই গাছ কাটতে সাহায্য করবে। উদ্যান দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রকল্প এলাকায় গাছ কাটার দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হয়। অথচ অনেক সময়ে দেখা যায়, প্রকল্পের নকশা সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে আমাদের দেওয়া হচ্ছে না। ফলে সমন্বয়ের অভাব হয়। এ দিকে বন দফতরের থেকে গাছ কাটার অনুমোদন জোগাড় করতে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়।’’
পুর প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, পরিকাঠামোর অভাবের সঙ্গে আরও একটি বিষয় রয়েছে। ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছ বা পুর প্রকল্পের গাছ, যেটাই হোক তা কাটতে গিয়ে উদ্যান দফতরের কর্মীদের বাধার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক ক্ষেত্রেই পুরকর্মীরা গাছ কাটতে গেলে সাধারণ মানুষ বাধা দেন। সে কারণে দু’বছর আগে শহরের বিপজ্জনক গাছ চিহ্নিত করেও তা কাটতে পারেনি উদ্যান দফতর। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছ। কর্মীর অভাবে সে কাজেও সময় লাগছে। ফলে গত এপ্রিলের কালবৈশাখী ঝড়ে শহর জুড়ে যে গাছ পড়েছিল, তার সব এখনও
সরানো যায়নি।
এক পুর আধিকারিকের মতে, ‘‘গাছ কাটতে গিয়ে উদ্যান দফতরের কর্মীদের নানা ভাবে হেনস্থা হতে হয়, এটা ঠিকই। তার উপরে পুর প্রকল্পের জন্য গাছ কাটার দায়িত্বও তাদেরই পালন করতে হয়, সেটা তো অসুবিধারই বিষয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy