Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বান্ধবীর আবদারেই জাল অ্যাডমিট

জাল অ্যাডমিট-সহ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষার খোঁজ নিতে এসে শুক্রবার গ্রেফতার হন দুর্গাপুরের বাসিন্দা প্রদীপকুমার মণ্ডল এবং তাঁর সঙ্গী সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার প্রদীপবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, তাঁর মেয়ের গৃহশিক্ষক সুমন ভট্টাচার্য ওই অ্যাডমিট কার্ড জোগা়ড় করে দিয়েছেন।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:১৮
Share: Save:

বান্ধবীর আবদার ছিল, তিনি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন। এমন ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন বান্ধবীর মা-ও। তাঁদের দাবি মেটাতে গিয়েই তিনি জাল অ্যাডমিট তৈরি করেন। গ্রেফতারের পরে এমনটাই দাবি করলেন সুমন ভট্টাচার্য নামে ওই ‘গৃহশিক্ষক’।

জাল অ্যাডমিট-সহ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষার খোঁজ নিতে এসে শুক্রবার গ্রেফতার হন দুর্গাপুরের বাসিন্দা প্রদীপকুমার মণ্ডল এবং তাঁর সঙ্গী সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার প্রদীপবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, তাঁর মেয়ের গৃহশিক্ষক সুমন ভট্টাচার্য ওই অ্যাডমিট কার্ড জোগা়ড় করে দিয়েছেন। প্রদীপবাবু দাবি করেন, সুমন তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এর জন্য সুমনকে টাকাও দিয়েছেন তিনি। শনিবারই গভীর রাতে জোড়াসাঁকোর থানার একটি তদন্তকারী দল দুর্গাপুরের এম এ এম সি কলোনি থেকে গ্রেফতার করে সুমনকে। রবিবার আদালতে তোলা হলে তাঁর ২০ তারিখ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়।

পুলিশ সূত্রের খবর, প্রদীপবাবুর মেয়েকে দীর্ঘ দিন ধরে পড়াতেন সুমন। সেই সূত্রেই দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানতেন প্রদীপবাবুর বাড়ির লোকেরা। পুলিশের কাছে সুমন দাবি করেছেন, জুলাই মাসে প্রদীপবাবুর মেয়ে তাঁকে জানান, তাকে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এতে সায় দেন প্রদীপবাবুর স্ত্রী-ও। বান্ধবী সুমনকে জানান, বিসিএ (ব্যাচেলর অব কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন) কোর্সে ভর্তি হতে চান তিনি তদন্তকারীরা জানান, বান্ধবীর এমন আবদারে ঘাবড়ে যান বলে দাবি করেছেন সুমন। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিসিএ কোর্স পড়ানো হয় না, এ কথাও প্রদীপবাবুর স্ত্রী ও মেয়েকে জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আমল দেননি তাঁরা। জেরায় ধৃতের দাবি, প্রেসিডেন্সিতেই ভর্তি করিয়ে দেওয়ার জন্য মা-মেয়ে গোঁ ধরে থাকেন। এর পরেই সম্পর্কে ফাটল ধরার আশঙ্কায় সুমন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো এবং পরীক্ষা নিয়ামকের জাল সই ব্যবহার করে কম্পিউটারে একটি নকল অ্যাডমিট কার্ড তৈরি করেন। তবে প্রেসিডেন্সিত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি করিয়ে দেওয়ার জন্য কোনও টাকা নেননি বলে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্নাতক সুমন দুর্গাপুরে একটি বাড়িতে থেকে গৃহশিক্ষকতা করেন। তিনি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নামে অন্য কাউকে জাল অ্যাডমিট সরবরাহ করেছেন এমন প্রমাণ এখনও মেলেনি।
শুধু প্রেম টিকিয়ে রাখতেই তিনি এ কাজ করেছেন বলে দাবি করেছেন সুমন। তবে সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE