ফাইল চিত্র।
সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেই সকালে ও সন্ধ্যায় মেট্রোর লাইনে ‘ঝাঁপ’ দেওয়ার দু’টি ঘটনার জেরে নাস্তানাবুদ হলেন যাত্রীরা। সোমবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে বেলগাছিয়া স্টেশনে। সেখানে মৃত্যু হয় এক যুবকের। সকালের ঘটনায় সেন্ট্রাল স্টেশনে এক তরুণী দু’টি লাইনের মাঝখানে পড়ায় বেঁচে যান।
মেট্রো সূত্রের খবর, এ দিন সন্ধ্যা ৭টা ৫৫ মিনিট নাগাদ বেলগাছিয়া স্টেশনে কবি সুভাষগামী মেট্রোর সামনে ঝাঁপ দেন এক যুবক। চাকায় পিষে তাঁর মৃত্যু হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা ওই যুবকের নাম দিগন্ত রায় (১৯)। রাত ৮টা ২৫ মিনিট নাগাদ দেহটি উদ্ধার করা হয়।
অন্য দিকে, এ দিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে সেন্ট্রাল স্টেশনে ঢুকছিল কবি সুভাষগামী একটি বাতানুকূল ট্রেন। মেট্রো সূত্রের খবর, আচমকাই পিঠে ব্যাগ নিয়ে লাইনে ঝাঁপ দেন এক তরুণী। সঙ্গে সঙ্গে আপৎকালীন ব্রেক কষেন চালক। ট্রেন থামতে থামতে একটি কামরা পুরো ও একটি কামরার অর্ধেক তরুণীকে পেরিয়ে চলে যায়। কর্তব্যরত আরপিএফ কর্মীরা ছুটে গিয়ে দেখেন, দু’টি লাইনের মাঝে পড়ে রয়েছেন তরুণী। তড়িঘড়ি কন্ট্রোল রুমে খবর পাঠিয়ে মেট্রোর তৃতীয় লাইনের বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করা হয়। ট্রেনটির প্ল্যাটফর্মের মধ্যে থাকা কামরার দরজাগুলি আলাদা করে খুলে যাত্রীদের স্টেশন থেকে বার করা হয়। এর পরে কয়েক জন মেট্রোকর্মী টর্চ হাতে নেমে দু’টি লাইনের মাঝে পরিখার মতো অংশ থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেন বছর পঁচিশের ওই তরুণীকে। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। হাঁটুতে চোট পেলেও তাঁর বড় আঘাত লাগেনি। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।
পুলিশ সূত্রের খবর, নারকেলডাঙা এলাকায় ওই তরুণীর বাড়িতে খবর দেওয়া হয়েছে। পুলিশের অনুমান, পারিবারিক অশান্তির জেরেই তিনি এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্ল্যাটফর্মের উত্তর প্রান্তে কিছু ক্ষণ ধরে পায়চারি করছিলেন তিনি। তখন তাঁর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি। মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কর্মীদের তৎপরতায় দ্রুত ওই যাত্রীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।’’
এই দু’টি ঘটনার জেরে সোমবার ব্যস্ত সময়ে যাত্রীদের ভোগান্তি হয়। মেট্রো সূত্রের খবর, সকালে কবি সুভাষগামী ট্রেনটি সেন্ট্রাল স্টেশনে ঢোকার মুখে আটকে থাকায় দমদম থেকে সেন্ট্রাল পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। থমকে যায় দমদমগামী একাধিক ট্রেনও। পরে ময়দান থেকে একটি ট্রেন ঘুরিয়ে কবি সুভাষের দিকে চালানো হয়। সকাল ৮টা ৪০ মিনিট নাগাদ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়। কিন্তু প্রায় আধ ঘণ্টা দমদম থেকে সেন্ট্রালের মধ্যে ট্রেন না চলায়
অফিসযাত্রীদের একটা বড় অংশ সমস্যায় পড়েন। মেট্রো নিয়মিত চলা শুরু করলেও ঘণ্টাখানেক ভিড়ের রেশ থাকে। সন্ধ্যার ঘটনার জেরেও দমদম থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত মেট্রো চলাচল থমকে যায়। মাঝে কিছুটা সময় গিরিশ পার্ক থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত ট্রেন চালানো হয়। রাত সাড়ে ৮টার পরে পরিষেবা ফের শুরু হলেও রাত পর্যন্ত ট্রেন সময়ে চলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy