জল জমেছে উত্তর বন্দর থানা চত্বরে। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
থানার সামনে একহাঁটু জল। থানা লাগোয়া শৌচাগারে বৃষ্টির জল ভরে রয়েছে। থানার সামনে রান্নাঘরের পাশে বৃষ্টির জলে ভাসছে মল, প্লাস্টিকের বোতল থেকে শুরু করে নানা আবর্জনা। টানা বৃষ্টিতে এমনই বেহাল দশা উত্তর বন্দর থানার।
থানার উপরে রয়েছে পুলিশকর্মীদের ব্যারাক। আবার থানার পাশেই আবার হাওড়া ব্রিজ ট্র্যাফিক গার্ডের অফিস। থানা ও ট্র্যাফিক গার্ড মিলে প্রায় চারশো জন পুলিশকর্মী থাকেন। অভিযোগ, জল জমার কারণে মশাবাহিত এবং জলবাহিত রোগে ভুগছেন পুলিশকর্মীদের অনেকে। চলতি বছরে মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন দশ জন পুলিশকর্মী। তাঁদের মধ্যে দু’জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। থানার ভিতরে এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ দেখে আতঙ্কিত পুলিশকর্মীরা ডিউটি করতে চাইছেন না বলেই খবর। পুলিশকর্মীদের অভিযোগ, এক জনই মাত্র সাফাইকর্মী রয়েছেন থানায়। তবে তিনিও অনিয়মিত। ফলে নিয়মিত জঞ্জাল পরিষ্কার হয় না।
এক পুলিশকর্মীর কথায়, ‘‘প্রতি বছরই উত্তর বন্দর থানায় বৃষ্টিতে এই হাল হয়। অথচ পুলিশের বড়কর্তারা থানার নিকাশি ব্যবস্থা সংস্কারে কোনও উদ্যোগ নিচ্ছেন না।’’
সূত্রের খবর, থানা চত্বরে পুলিশকর্মীদের রান্নাঘরটিও বৃষ্টির জল জমে থাকায় গত তিন দিন ধরে বন্ধ। হোটেলে থেকে খাবার কিনে খাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। রবিবার সকালে থানা ঢুকতেই দেখা গেল একহাঁটু জল। থানার পাশে হাওড়া ব্রিজ ট্র্যাফিক গার্ডের নীচের তলায় শৌচালয় উপচে যাওয়া জলে মল ভাসছে। হাওড়া ব্রিজ ট্র্যাফিক গার্ডের এক সার্জেন্টের অভিযোগ, ‘‘প্রচন্ড অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে কাজ করছি। মশার সাংঘাতিক উপদ্রব।’’
চলতি বছরে উত্তর বন্দর থানারই এক সাব-ইন্সপেক্টর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এ ছাড়াও একাধিক পুলিশকর্মী জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। ওই থানার এক কনস্টেবলও সম্প্রতি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। এমনকি উত্তর বন্দর থানা এলাকা যে ডিভিশনের মধ্যে পড়ে, সেই বন্দর ডিভিশনের ডিসি ওয়াকার রেজাও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে সপ্তাহখানেক আগে কাজে যোগ দিয়েছেন। উত্তর বন্দর থানায় জল জমা সমস্যার কথা স্বীকার করে ডিসি ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য উত্তর বন্দর থানায় জল জমার সমস্যা রয়েছে। জঞ্জাল যাতে নিয়মিত পরিষ্কার হয় সে বিষয়ে নজর দেওয়া হবে।’’ কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত নগরপাল জাভেদ শামিম বলেন, ‘‘আলিপুর বডিগার্ড লাইনের মতো উত্তর বন্দর থানা বেশি নিচু এলাকা হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই জল জমে যায়। থানার জলজমা রুখতে আরও কী কী কাজ করা যায় সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy