Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সদস্য সংগ্রহ ঘিরে দফায় দফায় সংঘর্ষ পঞ্চসায়রে

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন ওই এলাকায় শিবির করে চলছিল বিজেপির সদস্য সংগ্রহের কাজ। অভিযোগ, সেই শিবিরে আচমকাই এসে হামলা চালান তৃণমূল সমর্থকেরা। ভাঙচুরও চালানো হয়।

উত্তপ্ত: সংঘর্ষের পরে এলাকায় র‌্যাফ। রবিবার, পঞ্চসায়রে। ছবি: সুমন বল্লভ

উত্তপ্ত: সংঘর্ষের পরে এলাকায় র‌্যাফ। রবিবার, পঞ্চসায়রে। ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৯ ০২:০৫
Share: Save:

বিজেপির সদস্য সংগ্রহ ঘিরে দফায় দফায় সংঘর্ষ। আর তার জেরে রবিবার সকাল থেকে বিকেল অগ্নিগর্ভ রইল পঞ্চসায়র থানা এলাকার ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের শহিদ স্মৃতি কলোনি। দু’পক্ষের সংঘর্ষে আক্রাম্ত হলেন মহিলা-সহ বেশ কয়েক জন। শেষে ডিসি (পূর্ব) দেবাশিস ঘোষের নেতৃত্বে বিশাল বাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন ওই এলাকায় শিবির করে চলছিল বিজেপির সদস্য সংগ্রহের কাজ। অভিযোগ, সেই শিবিরে আচমকাই এসে হামলা চালান তৃণমূল সমর্থকেরা। ভাঙচুরও চালানো হয়। বিজেপি সমর্থকেরা জানান, লোকসভা ভোটের ফল বেরোনোর পর থেকে তাঁরা প্রতি রবিবার এলাকায় শিবির করে সদস্যদের নাম নথিভুক্ত করছেন। এ দিনও তেমনই শিবির চলছিল। স্থানীয় বিজেপি নেতা পার্থ নস্কর বলেন, ‘‘ক্যাম্পটি একটু রাস্তা ঘেঁষে থাকায় পুলিশ এক সময়ে এসে সেটি সরিয়ে নিতে বলে। সেই মতো আমরা শিবির সরিয়ে নিই। তার পরেও তৃণমূলের কয়েক জন সমর্থক এসে এলাকায় কেন সদস্য সংগ্রহ করা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তোলেন।’’ পার্থবাবুর অভিযোগ, এলাকায় বিজেপি কোনও সভা, মিছিল এমনকি ক্যাম্প করতে পারবে না বলেও শাসানি দেন তৃণমূলের ওই সমর্থকেরা। এর প্রতিবাদ করায় তাঁদের উপরে হামলা হয়। লাঠি, রড, পাঞ্চার দিয়ে তাঁদের মারধর করে তৃণমূল। ওই নেতার দাবি, গোলমালে আহত হয়েছেন তাঁদের দলের বেশ কয়েক জন।

যদিও বিজেপির সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছেন, সদস্য সংগ্রহের নাম করে বাইরে থেকে লোকজন এনে বিজেপি-ই স্থানীয়দের ভয় দেখিয়ে জোর করে ফর্মে সই করাচ্ছে। যাঁরা সই করতে রাজি হননি, তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এমনকি, বহিরাগতদের নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল সমর্থকদের বাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয় বলে অভিযোগ। রেহাই পাননি মহিলা ও শিশুরাও।

যদিও বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, ভাঙচুর চালিয়েছে তৃণমূলের লোকজনই। দফায় দফায় সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক দেশে যে যার নিজের পছন্দ মতো দল করতে পারেন। কিন্তু বিজেপি জোর করে, হুমকি দিয়ে সদস্য সংগ্রহের ফর্মে সই করাচ্ছে। আমাদের দলের লোকেদের এমন মেরেছে যে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।’’ এমন ভাবে অত্যাচার চালিয়ে সদস্য হতে বাধ্য করলে তা মানা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন কাউন্সিলর। তাঁর আরও অভিযোগ, পুলিশকে বার বার জানিয়েও লাভ হয়নি। অনন্যা বলেন, ‘‘পুলিশের ভূমিকায় আমরা হতাশ।’’

এই গোলমালের মধ্যে কিছু সাধারণ মানুষের বাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনই এক জন বাপি ভড়। বাপি বলেন, ‘‘আমি বিজেপি বা তৃণমূল, কিছুই করি না। বিজেপি সমর্থক ক্যানসার আক্রাম্ত এক মহিলাকে মারধর করা হচ্ছে দেখে প্রতিবাদ করেছিলাম। তার পরেই আমার দোকান ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে যায় শাসক দলের লোকজন।’’ সন্ধ্যায় পঞ্চসায়র থানার বাইরে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন তৃণমূলের সমর্থকেরা। গভীর রাতে গরফা থানা এলাকাতেও সেই গোলমাল ছড়িয়ে পড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Violence Pancha Sayar BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE