গোড়ায় উঠেছিল খুনেরই অভিযোগ। কিন্তু রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশের চার্জশিটে বলা হচ্ছে, আত্মহত্যা। এর পিছনে চক্রান্তের ছায়া দেখছেন নিহত বধূ মিতা মণ্ডলের পরিজনেরা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে সিআইডি-র প্রতি তাঁদের অনাস্থার কথাও জানিয়েছেন মিতার ভাই খোকন দাস। তাঁর দাবি, ঠিকঠাক তদন্তের স্বার্থে এ বার সিবিআই-এর হাতে দায়িত্বভার তুলে দেওয়া হোক। এর আগেও বেশ কয়েকবার মমতাকে চিঠি দিয়েছেন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই সিআইডি মাঠে নেমেছিল। সেই তদন্ত কার্যত নস্যাৎ করে এখন ফের আদালতে যাওয়ার তোড়জোড় করছেন খোকনবাবুরা।
মিতার দেহে চোট-আঘাতের অজস্র চিহ্ন মেলায় তাঁকে গলা টিপে খুন করা হয়েছিল বলেই সন্দেহ হয় পরিজনদের। এখনও ওই দাবিতেই তাঁরা অনড়। কিন্তু পুলিশ বলছে, ময়না তদন্ত ও বিভিন্ন ফরেন্সিক রিপোর্টে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ওই তরুণীর আত্মহত্যারই প্রমাণ মিলছে। খোকনবাবুর অভিযোগ, ‘‘নিরপেক্ষ তদন্ত হয়নি। বোনের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের রাজনৈতিক যোগসাজসের ফলেই সিআইডি মামলাটা লঘু করতে চাইছে।’’
সিআইডি-র চার্জশিটে কিন্তু মিতা পণপ্রথার বলি হয়েছেন বলেই জানানো হয়েছে। ১০ অক্টোবর দুর্গাপুজোর নবমীর রাতে ফুলেশ্বরের কুশবেড়িয়া গ্রামের বধূ মিতার মৃত্যু নিয়ে রহস্য দানা বাঁধে। পুলিশ মৃতার স্বামী রানা মণ্ডল, শ্বশুর বীজেন্দ্রনাথ মণ্ডল, শাশুড়ি কল্পনা মণ্ডল ও দেওর রাহুল মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছিল। এখন সকলেই জামিনে আছেন। চার্জশিটে পুলিশের দাবি, সাত মাসের বিবাহিত জীবনে শ্বশুরবাড়ির লক্ষ টাকা পণের দাবি থেকেই অশান্তির শুরু। নবমীর রাতেও স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হয়। তখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন মিতার স্বামী রানা। রাত ১২টা থেকে দু’টোর মধ্যে মিতা তাঁর স্বামীকে ২০ বার ফোনও করেছিলেন। এর পরই তিনি গলায় দড়ি দেন বলে পুলিশের দাবি। মিতার দেহ যাঁরা দরজা ভেঙে উদ্ধার করেন, তাঁদের বয়ানও নথিভুক্ত হয়েছে। তথ্যপ্রমাণ হিসেবে
মিতার ‘সুইসাইড নোট’-এর কথাও বলছে পুলিশ।
আদালত সূত্রের খবর, চার্জশিটে মিতার স্বামী, দেওর, শ্বশুর এবং শ্বাশুড়ির নাম রয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪বি (পণের বলি) ১২০বি (ষড়যন্ত্র) ৪৯৮এ (বধু নির্যাতন) ধারায় ওই চার জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মিতার পরিবারের তরফে অবশ্য সিআইডি তদন্তে নানা গাফিলতির কথা বলা হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, ময়না তদন্তের ভিডিও রেকর্ডিং হয়নি। নানা তথ্যপ্রমাণে বিকৃতিরও আভাস মিলছে। দরকারে তাঁরা উচ্চ আদালতে যাবেন বলেও জানিয়েছে মৃতার পরিবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy