অভিনব: যুবভারতীতে সেই ‘টিফো’। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
এনআরসি-র প্রতিবাদেও হাজির ‘বাঁটুল দ্য গ্রেট’! তাই ফুটবল মাঠে বাঙাল-ঘটির দ্বৈরথের মধ্যেই খবরের শিরোনামে বাঁটুল। সঙ্গে হাজির তার দুই শাগরেদ বাচ্চু-বিচ্ছুও। যেখানে তারা বাঁটুলকে বলছে— ‘কিরে বাঙাল, এনআরসি আসছে, যা পালা’। উত্তরে মিলেছে বাঁটুলের ঘুসি।
রবিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচে এমনই ‘টিফো’ নিয়ে লাল-হলুদ শিবিরের সমর্থকেরা খেলা
দেখতে এসেছিলেন। সেখানে বাঁটুলকে নিজেদের জার্সি পরিয়ে ‘বাঙাল দি গ্রেট’-ও বলা হয়েছে। পাশাপাশি, সবুজ-মেরুন শিবিরও হাজির ছিল অন্য এক ‘টিফো’ নিয়ে, যাতে লেখা— ‘পলাশি প্রান্তরে সূর্যাস্তের পর চোখে চোখ রেখে লড়াই
শিখিয়েছি আমরাই’। দলের পতাকার সঙ্গেই হাতে হাতে ঘুরেছে জাতীয় পতাকাও।
এ দিনের মাঠে ব্যানার-ফেস্টুনে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদও ছিল। কোথাও সোজাসুজি পোস্টারে লেখা ‘নো এনআরসি’, ‘নো সিএএ’, ‘নো এনপিআর’। কোথাও আবার বিশাল ব্যানারে হাজির বাঁটুলকে বাঙাল সমর্থকেরা তাঁদের দলভুক্ত করে বলেন, ‘বাঁটুল আমাদের। আমরা তারই মতো শক্তিধারী।’ সুতরাং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন হলে এ দেশ ছেড়ে তাকে পাড়ি জমাতে হবে অন্যত্র।
বাঁটুল দ্য গ্রেটের স্বত্ব যে প্রকাশনা সংস্থার হাতে, তাদেরই এক কর্ণধার রাজর্ষি মজুমদার এ দিন বলেন, ‘‘নারায়ণ দেবনাথের বাঁটুল
কখনওই বাঙাল ছিল না। তবে খেলার মাঠেও যে বাঁটুল প্রতিবাদের হাতিয়ার হয়েছে, সেটা টিভিতে দেখে খুব
ভাল লাগল।’’
গ্যালারিতে বিশাল ব্যানারে লেখা ছিল ‘রক্ত দিয়ে কেনা মাটি, কাগজ দিয়ে নয়’। গ্যালারিতে উপস্থিত ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকেরা
জানাচ্ছেন, এটাও নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে স্লোগান। এক সমর্থকের মতে, ‘‘এই দেশে আমাদের জমি অর্জিত। দেশভাগের মতো যন্ত্রণার বিষয় নিয়ে যাঁরা আমাদের ব্যাঙ্গ করেন, তাঁদের জবাব দিতেই এই ব্যানার নিয়ে আসা হয়েছে।’’
কৃষ্ণেন্দু দত্ত নামে এক সমর্থক বলেন, ‘‘অনেক সময়ই আমাদের বিদ্রুপ করে বলা হয়, কাগজ নেই। ইস্টবেঙ্গল সমর্থক মানেই যেন রিফিউজ়ি। এ সবের প্রতিবাদ দরকার। তাই ডার্বি ম্যাচকে প্রতিবাদের মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করেছি।’’
এসএফআই-এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সদস্য শুভজিৎ সরকার বলেন, ‘‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন তা আরও দৃঢ় করতে এসএফআই সমর্থকেরা এ দিনের ম্যাচে পোস্টার লিখে নিয়ে গিয়েছেন। এতে অসংখ্য দৃষ্টি আকর্ষণ করা গেল।’’
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগে এনআরসি নিয়ে প্রতিবাদকারীদের ওয়াংখেড়ের মাঠে ঢুকতে দেয়নি সেখানকার পুলিশ। এ দিনের ডার্বি ম্যাচের প্রতিবাদ দেখাল অন্য কলকাতাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy