এই ড্রপ বক্সেই ‘বায়োডেটা’ জমা দিতে পারেন যে কেউ।
কলকাতায় বিজেপির সদর কার্যালয়ে একটি ড্রপ বক্স। আসন্ন পুরসভা ভোটে প্রার্থী হতে চাইলে ওই বক্সে ‘বায়োডেটা’ জমা দিতে পারেন যে কেউ। পুরভোটের মুখে এমন উদ্যোগ ঘিরে এক দিকে যেমন রাজনৈতিক মহলে তীব্র জল্পনা, তেমনই শুরু হয়েছে চাপানউতোরও। প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না বলেই এমন আহ্বান, কটাক্ষ তৃণমূলের। বিজেপির পাল্টা দাবি, দলে সবার মতামতকে গুরুত্ব দিতেই এই অভিনব পন্থা।
রাজ্য বিজেপি কার্যালয়ের দোতলায় সাধারণ সম্পাদকদের ঘরের দিকে যাওয়ার করিডোরের পাশেই সম্প্রতি রাখা হয়েছে একটি ড্রপ বক্স। তাতে লেখা, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ পৌর নির্বাচন ২০২০, প্রার্থী হবার আবেদনপত্র এই বাক্সে ফেলুন।’’ তালা-চাবি দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে ওই ড্রপ বক্সটি। ইতিমধ্যেই অনেকে সেই বাক্সে আবেদনপত্র জমাও দিয়ে গিয়েছেন বলে বিজেপি সূত্রে খবর।
একটা সময় এ রাজ্যে প্রার্থী খুঁজে পেতে সমস্যা হত। কিন্তু গত লোকসভা ভোটে নজরকাড়া ফল করার পর এ রাজ্যে বিজেপির পায়ের তলার মাটি অনেকটাই শক্ত। পুর এলাকাতেও অনেকেই দলের হয়ে দাঁড়াতে ইচ্ছুক। এমনকি, প্রার্থী হওয়ার জন্য ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে বলেও খবর পেয়েছেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। এমনকি, যে সব ওয়ার্ডে জেতার সম্ভাবনা নেই, সেখানেও একাধিক ব্যক্তি প্রার্থী হওয়ার আশায় বসে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: অথ ব্যানার কথা: নেপথ্যে শোভনের ঘনিষ্ঠরা, নাকি অন্য কোনও রহস্য?
তৃণমূল নেতৃত্ব এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। দলের নেতাদের বক্তব্য, লোকসভা ভোটের হাওয়া আর নেই। বিজেপির দিক থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছেন না দলের নেতৃত্ব। তাই বাধ্য হয়ে ড্রপ বক্স রেখে আবেদনপত্র চাইতে হচ্ছে।
কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, অনেকে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক। সংশ্লিষ্ট পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা সব প্রার্থীর নাম নাও পাঠাতে পারেন। তাই প্রার্থী বাছাইয়ের ভার পুরোপুরি তাঁদের উপর ছেড়ে দিতে চাইছেন না দলের রাজ্য নেতৃত্ব। যে হেতু টিকিটের চাহিদা প্রবল, তাই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত লবি এলাকার নেতাদের চাহিদার ঠিকঠাক প্রতিফলন ঘটাচ্ছেন কি না, সেটা যাচাই করা যাবে। ফলে ভোটের আগে গোষ্ঠীকোন্দল যাতে মাথাচাড়া না দেয়, সেই জন্য সবার সামনে সুযোগ খুলে দেওয়া হয়েছে।
তার অর্থ অবশ্য এই নয় যে, দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল স্তরের নেতাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে না এমনটা নয়। দলের নেতারা বলছেন, বরং তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেই টিকিট বণ্টন করা হবে। তবে ওই ড্রপবক্সের আবেদনপত্রগুলি খতিয়ে দেখে যদি নেতাদের তালিকার বাইরেও কারও নাম পাওয়া যায়, তাঁর নামও বিবেচনা করা হতে পারে।
আরও পড়ুন: মেয়রের ঘরই দলীয় অফিস! দলবদল প্রশাসনিক ভবনে, বিতর্কে ফিরহাদ
দলের অন্য একটি সূত্রে খবর, আদৌ ওই বাক্স খুলে সব আবেদনপত্র খুলে দেখে বাছাই করে খতিয়ে দেখা হবে কি না, তা নিয়ে বিজেপির অন্দরেই সংশয় রয়েছ। ওই অংশের মতে, একে তো বিপুল সংখ্যক আবেদনপত্র খতিয়ে দেখার ঝক্কি রয়েছে। তার উপর এই প্রক্রিয়ায় প্রার্থী নির্বাচন করলে তৃণমূল স্তরের নেতাদের মধ্যে অসন্তোষও দেখা দিতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy