কান কেটে নেওয়ার পর তনভীর। অভিয়ুক্ত স্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
মাঝেমধ্যেই অত্যাচার করতেন। কিন্তু প্রায় দ্বিগুণ বয়সের স্ত্রী যে এতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন, তা হয়তো কল্পনাও করতে পারেননি নারকেলডাঙা নর্থ রোডের বছর কুড়ির যুবক মহম্মদ তনভীর। বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে তাঁর দু’টি কানই কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠল স্ত্রী মুমতাজ বিবির বিরুদ্ধে। মুমতাজের সঙ্গে তাঁর বোনেরাও এ কাজে সাহায্য করেছে বলে অভিযোগ তনভীরের। কোনওক্রমে পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করেছেন তনভীর। পরে এলাকার বাসিন্দারা তাঁকে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যান। নারকেলডাঙা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্ত মুমতাজ বিবি ও তাঁর বোনেদের খুঁজছে পুলিশ।
তনভীর মঙ্গলবার অভিযোগ করেন, বছর দুয়েক আগে বিয়ের পর থেকেই স্ত্রী প্রচণ্ড অত্যাচার করতেন। সেই ভয়ে প্রায়ই বাড়ি ছেড়ে এদিক সেদিক পালিয়ে যেতেন। কিন্তু প্রতিবারই নিজের বাপের বাড়ির লোকজন দিয়ে তাঁকে ধরে বাড়িতে নিয়ে আসতেন স্ত্রী মুমতাজ। চলত মারধর। সোমবার রাতেও মল্লিকপুরে পালিয়ে গিয়েছিলেন তনভীর। কিন্তু সেখান থেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন মুমতাজ ও তাঁর বোনেরা। তনভীর আরও অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার ভোরে মুমতাজ ও তাঁর বোনেরা প্রচণ্ড মারধর করে। তারপর সবাই মিলে তাঁকে চেপে ধরে বুকে বন্দুক ধরে। এরপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে দু’টি কানই কেটে নেওয়া হয়।
তনভীর বলেন, ‘‘স্ত্রী ও শ্যালিকারা ভেবেছিলেন, আমি মারা গিয়েছি। তাই ওই ভাবে ফেলে রেখেছিল। তার পর সুযোগ পেয়ে কোনওরকমে বাইরে বেরিয়ে আসি। এলাকার লোকজন আমাকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যান।’’
আরও পড়ুন: বৃদ্ধার প্রাণ বাঁচাতে ব্যর্থ, মৃত্যু যুবকেরও
তনভীরের বাড়ি নারকেলডাঙা নর্থ রোডের কসাই বস্তি সেকেন্ড লেনে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে মুমতাজের বাড়িতেই থাকতেন তনভীর। তনভীরের অভিযোগ, ‘‘এই অত্যাচারের কারণে আমার মা মুমতাজকে বলেছিলেন আমাকে ছেড়ে দিতে। এতে প্রাথমিকভাবে রাজি হয়ে আমাদের একটি বাড়ি বিক্রি করে টাকাও নিয়ে নেন মুমতাজ। কিন্তু আমাকে ছাড়েননি। উল্টে আমার বাড়িতে যেতে বা পরিবারের কারও সঙ্গে দেখা করতে দিতেন না।’’
আরও পড়ুন: চিকিৎসক-খুনে জড়িত একাধিক দুষ্কৃতী, সন্দেহ
কিন্তু তাঁর থেকে প্রায় বছর কুড়ির বড় মুমতাজকে কেন বিয়ে করলেন তনভীর। এক্ষেত্রে তাঁর যুক্তি, দাদার এক বন্ধু তাঁকে ফাঁসিয়ে দিয়েছিলেন। তাই বাধ্য হয়ে মুমতাজকে বিয়ে করতে হয়েছিল।
এদিকে নারকেলডাঙা থানার বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন তনভীরের পরিবারের লোকজন। তাঁদের দাবি, থানায় অভিযোগ জানালেও এফআইআর-এর কপি দেয়নি পুলিশ। কাউকে গ্রেফতারের চেষ্টাও করা হচ্ছে না। এই সব অভিযোগ নিয়ে রাতে ফের নারকেলডাঙা থানায় যান তনভীরের পরিবারের লোকজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy