Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

যক্ষ্মা সংস্থা দেওয়া হল লিজে, অন্ধকারে মুখ্যমন্ত্রী

সংস্থার প্রেসিডেন্ট পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৩৩
Share: Save:

সংস্থার প্রেসিডেন্ট পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের মাথায় রেখে ৪০ জনের কমিটির হাতে রয়েছে ১৯৩৯ সালে বিধানচন্দ্র রায়-প্রতিষ্ঠিত জনসেবামূলক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ‘বঙ্গীয় যক্ষ্মা নিবারণী সমিতি’ বা বিটিএ চালানোর ভার। অভিযোগ, রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীকে না-জানিয়েই সংস্থার কিছু কর্তাব্যক্তি মউ বা সমঝোতাপত্র সই করে এই প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারি সংস্থার কাছে লিজে দিচ্ছেন।

লিজের কথা অভিযুক্তেরা স্বীকার করেছেন। আগেই অভিযোগ ছিল, কিছু কর্তার ইন্ধনে সংস্থায় ব্যাপক আর্থিক নয়ছয় হচ্ছে। দান করা কয়েক কোটি টাকা জমেছিল বিটিএ-র তহবিলে। সেই তহবিলও তলানিতে পৌঁছেছে। বেসরকারি সংস্থা থেকে গত বছর ১০ লক্ষ টাকাও নেন বিটিএ-র কিছু কর্তা। সেই টাকা খরচও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের ভগ্নদশার কোনও পরিবর্তন হয়নি। অগত্যা লিজ!

কর্মীদের অভিযোগ, যে-উদ্দেশ্য নিয়ে বিটিএ-র জন্ম, সেই যক্ষ্মার চিকিৎসা, পরীক্ষানিরীক্ষা, গবেষণাও শিকেয় উঠেছে। প্রায় ন’মাস ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে তাঁদের বেতন। প্রায় ১০ বছর অডিট হয়নি। গত আড়াই দশকে হয়নি অ্যানুয়াল জেনারেল মিটিং (এজিএম) বা বার্ষিক সাধারণ সভাও।

কর্মীদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর দফতর, রাজ্যপালের অফিস, স্বাস্থ্য ভবন থেকে নবান্ন— সর্বত্র গত কয়েক মাসে বারবার চিঠি দিয়ে অনিয়মের কথা জানিয়ে সাহায্য চেয়েছেন তাঁরা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সুরাহা হয়নি। গত বছর ১৩ এপ্রিল নবান্ন থেকে সহকারী সচিব তপনচন্দ্র ঘোষ একটি চিঠি লেখেন বিটিএ-র চেয়ারম্যানকে। তাতে আর্থিক দুর্নীতি এবং বেসরকারি সংস্থার হাতে সংস্থাকে লিজ দেওয়ার ঘটনার তদন্ত করতে বলা হয়।

বিটিএ-র সাম্মানিক সচিব, চিকিৎসক রঞ্জনকুমার দাসের দাবি, ‘‘এমন কোনও চিঠি আমরা পাইনি। পেলে নিশ্চয়ই তদন্ত করতাম।’’ সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, গত বছর জুনে স্বাস্থ্য দফতরের যুগ্মসচিবকে এ বিষয়ে তদন্ত চেয়ে চিঠি দেন রাজ্যপালের সচিবালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি। কিন্তু তদন্ত রিপোর্ট এখনও তৈরি হয়নি। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে তাঁর কিছুই জানা নেই।

বিটিএ-র সাম্মানিক সচিব রঞ্জনবাবুর দাবি, সংস্থাকে বাঁচাতে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে মউ সই করা হয়েছে। ‘‘সরকারের থেকে কোনও সাড়া পাইনি। রাজ্যপালের অনুমতি চেয়েছিলাম। উত্তর পাইনি। বিটিএ-কে বাঁচাতে কিছু তো করতে হবে,’’ বলেন রঞ্জনবাবু। যে-সংস্থা মউ সই করেছে, তাদের প্রতিনিধি এসএন শর্মার এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE