দুমড়ে যাওয়া গাড়িটি। —নিজস্ব চিত্র
রবিবারের বিকেলে ঘড়ির কাঁটা তখন সাড়ে পাঁচটা ছুঁইছুঁই। নবনির্মিত বহুতলের একতলায় একটি জুতোর শোরুমে ছেলেকে নিয়ে জুতো কিনতে ঢুকেছিলেন বিকাশ মণ্ডল। শোরুমের বাইরে তাঁর সাত আসনের গা়ড়িটি দাঁড় করানো ছিল। হঠাৎ একটা জোর শব্দ। বিকাশবাবু এবং শোরুমের অন্য লোকজন সকলে দৌড়ে বাইরে এসে দেখেন, এক মহিলা উপর থেকে সোজা গাড়ির ছাদে পড়েছেন। গাড়িটি তুবড়ে গিয়েছে তো বটেই, মহিলারও প্রায় দলা পাকানো অবস্থা।
হতবাক করে দেওয়ার মতো এই ঘটনা ঘটেছে ফুলবাগান থেকে কাঁকুড়গাছির পথে বাঁ দিকে ভিআইপি মার্কেটের উল্টো দিকে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বছর বত্রিশের ওই মহিলা আত্মহত্যার উদ্দেশ্যেই বহুতলের ষোলো তলার ছাদ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে বাইপাসের কাছে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। গাড়ির উপরে না পড়লে তাঁর বাঁচার কোনও আশাই ছিল না।
বহুতলটি বছর দু’য়েক আগে তৈরি হয়ে গেলেও সেখানকার কোনও ফ্ল্যাটেই নিয়মিত কেউ থাকেন না। মহিলাও ওই বহুতলের বাসিন্দা নন বলেই জানা গিয়েছে। তাঁর শ্বশুরবাড়ি ফুলবাগানে। এই বহুতলটি থেকে হেঁটে প্রায় দশ মিনিটের পথ। ফুলবাগান থানা সূত্রের খবর, এ দিন বিকেল সওয়া পাঁচটা নাগাদ ‘বাজার করতে যাচ্ছি’ বলে ওই মহিলা বাড়ি থেকে বেরোন। তার পরেই এই ঘটনা। ২০১২ সালে এ ভাবেই সাউথ সিটি মলের পাশে এক বহুতলের ছাদে উঠে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মা ও দুই মেয়ে। তিন জনেই মারা যান। সেই বহুতলে তাঁদেরও কোনও ফ্ল্যাট ছিল না।
নীচে জুতোর শো-রুমে কাজ করেন শাহিদ মির্জ়া খান। তিনি জানিয়েছেন, এ দিন কাজ করার সময়ে আচমকা আওয়াজ পেয়ে বাইরে বেরিয়ে দেখেন, সামনে রাখা গাড়ির ছাদের উপরে মহিলার দেহ পড়ে রয়েছে। আশপাশ থেকে আরও লোক জড়ো হয়ে মহিলাকে নিয়ে তাঁরা হাসপাতালে ছোটেন। গাড়ির মালিক, বিকাশ মণ্ডল জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ি আরামবাগে। তিনি গাড়ি চালিয়ে ছেলেকে নিয়ে কলকাতায় পড়াতে এসেছিলেন। সময় পেয়ে বাইরে গাড়ি রেখে জুতোর দোকানে ঢুকেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, এখন কিছু দিন ওই গাড়িটি থানায় রাখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy