প্রতীকী ছবি।
মূল রাস্তা থেকে গলির ভিতরে কিছুটা ঢুকতেই একটি জানলার সামনে থেকে হিন্দিতে এক তরুণীর কণ্ঠস্বর কানে এসেছিল স্থানীয় এক বাসিন্দার। রাত তখন সাড়ে দশটা বেজে গিয়েছে। বছর পঁচিশের ওই তরুণী পথচারীকে হিন্দিতে বারবার অনুরোধ করছিলেন, ‘‘আমাকে তালা আটকে চলে গিয়েছে। দয়া করে তালা ভেঙে উদ্ধার করুন।’’
পথচারীরা এসে দেখেন, দরজায় বাইরে থেকে তালা দেওয়া। খবর যায় বাগুইআটি থানায়। পুলিশ এসে তালা ভেঙে তরুণীকে উদ্ধার করে। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে কেষ্টপুরের হানাপাড়ায়। ওই তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তারক সাউ নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। সে কলকাতার একটি পানশালায় এজেন্ট হিসেবে কাজ করে।
পুলিশ জেনেছে, ওই তরুণী পঞ্জাবের পিটকোথের বাসিন্দা। অভিযোগ, তারক তাঁকে মোটা মাইনের লোভ দেখিয়ে কলকাতায় আনে। রাখে কেষ্টপুরের ওই বাড়িতে। তার পরে তাঁকে মধ্য কলকাতার পানশালায় নর্তকীর কাজ করতে নিয়ে যায়। তরুণীর আরও অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে তিনি কাজে যেতে রাজি না হওয়ায় তারক তাঁকে ঘরে আটকে চলে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, কয়েক মাস ধরে ওই বাড়ির একতলায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছিল তারক। গৃহকর্তার বড় ছেলে অভিজিৎ দে-কে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, তারকের ঘরে মাঝেমধ্যেই অচেনা লোকের যাতায়াত ছিল। তারকের আচরণ নিয়ে কেন অভিজিৎবাবুদের এত দিন সন্দেহ হয়নি, দেখছে পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের বারবার বলা হয়েছে, অচেনা কেউ ভাড়া এলে তাঁরা যেন সেই ব্যক্তির বিস্তারিত তথ্য থানায় জানান। নিজেদের কাছেও তা রাখেন। কিন্তু তার পরেও বাসিন্দাদের একাংশ সচেতন হচ্ছেন না।
কেষ্টপুর ও রাজারহাট এলাকা থেকে আগেও ভিন্ রাজ্যের তরুণীদের উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে ক্ষেত্রেও তাঁদের চাকরির টোপ দিয়ে পানশালায় কাজ করতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছিল। তদন্তকারীদের অনুমান, নারী পাচারের একটি বড় চক্র কেষ্টপুর ও রাজারহাটে সক্রিয়। বিধাননগরের গোয়েন্দা প্রধান সবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘তারককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আন্তঃরাজ্য নারী পাচার চক্রের সঙ্গে তার যোগ আছে কি না, দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy