বিয়ের টোপ তো ছিলই। সেই সঙ্গে গরিব পরিবারের কিশোরীকে লোভ দেখানো হয়েছিল দামি স্মার্টফোনেরও। আর সেই ফাঁদে পা দিয়েই পাচার হয়ে যায় কুলতলির বাসিন্দা সেই নাবালিকা। তাকে উদ্ধারের পরে এমনই তথ্য সামনে এসেছে বারুইপুর মহিলা থানার পুলিশের। ঘটনার পিছনে একটি বড় পাচার চক্র কাজ করেছে বলেই মনে করছে পুলিশ। খোঁজ চলছে ২০১৬ সালের ওই পাচার-কাণ্ডে ধৃত সাজু লস্করের সঙ্গে থাকা লোকজনেরও।
ওই নাবালিকা ও তাঁর দুই শিশুপুত্রকে মঙ্গলবার বারুইপুর অতিরিক্ত বিচার বিভাগীয় বিচারকের আদালতে পেশ করে পুলিশ। সন্তানদের সঙ্গে নিয়েই তাঁকে সোনারপুর একটি হোমে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। কুলতলির ওই কিশোরীকে গত শনিবার রাজস্থান থেকে গ্রেফতার করে বারুইপুরের পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানান, ওই কিশোরীর বয়স এখন ১৭। তিন বছর আগে যখন সে পাচার হয়ে যায় তখন সে ছিল এক অত্যন্ত নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে। সাত বোন ও সাত ভাইয়ের পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন কিশোরীর বাবা। তিনি পেশায় জনমজুর ছিলেন। কিশোরীর দারিদ্রের সুযোগকে কাজে লাগায় ধৃত সাজু ও তার এক সঙ্গী। সাজু ওই নাবালিকার এক প্রতিবেশীর জামাই। সেখানে তার যাতায়াত ছিল। আসলে তারা দু’জনেই নারী পাচার চক্রেরই পান্ডা ছিল বলেই দাবি পুলিশের।
নাবালিকার সঙ্গে কথা বলে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জেনেছে তাদের অভাবের সংসারে ঠিক মতো খাওয়া জুটত না। ফলে স্মার্টফোন ছিল ওই কিশোরীর কাছে স্বপ্নের মতো। এ সব দেখেই সাজুরা কিশোরীটিকে ফুসলিয়ে বাড়ি থেকে বার করে নিয়ে গিয়ে পাচারের ছক কষে। তদন্তকারীরা জানান, স্মার্টফোনের ফোনের টোপ দিয়ে সাজুরা এক দিন বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি বাজারে ডেকে এনেছিল ওই কিশোরীকে। সেখানে একটি দোকানে বসেছিল সাজু ও তার সঙ্গী। সাজুর সেই সঙ্গীই ওই কিশোরীকে বিয়ের টোপ দেয়। পুলিশ তাকে খুঁজছে।
তদন্তকারীরা জানান, দোকানে ডেকে এনে কিশোরীর একটি রুমাল নাকে গুঁজে দিয়েছিল সাজু। জ্ঞান ফেরার পরে কিশোরীটি বুঝতে পারে সে ট্রেনে রয়েছে। সে তার সামনের আসনে দু’ জনকে বসে থাকতেও দেখে। কয়েক ঘণ্টা পরে ট্রেনটি একটি স্টেশনে থামার পরে এক জন হিন্দি ভাষী ব্যক্তি তাকে নিয়ে যায়। কয়েক দিন একটি হোটেলে রাখা হয়। তার পরে এক জনের কাছে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয় ওই নাবালিকাকে। সেখান থেকে সে রাজস্থানের আলোয়ারা গ্রামের একটি বাড়িতে পৌঁছে যায়। কিশোরী পুলিশকে জানিয়েছে, সেই পরিবারে তাকে পরিচারিকার কাজ করতে হত। সেখানে তার উপরে একাধিক বার যৌন নির্যাতন হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy