পরিচ্ছন্ন: বাহারি গাছে সেজে উঠছে বাইপাস। সুভাষ সরোবর থেকে বেলেঘাটা কানেক্টর পর্যন্ত। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
ব্যস্ত শহর। সোঁ সোঁ করে ছুটছে গাড়ি। তারই মাঝে জানলা দিয়ে উঁকি মারছে ঘর্মাক্ত মুখ। গাড়ি থেকে বাইরে তাকালে শুধুই রোদ আর ধুলো। এমন অবস্থায় শরীরের সঙ্গে বেড়ে যায় মনের ক্লান্তিও। তবু এটাই ছিল দস্তুর। এ বার কংক্রিটের এই শহরে সেই ছবিতে বদল আসতে শুরু করল। বিস্তীর্ণ ই এম বাইপাসে মাঝেমধ্যেই দেখা যাবে কঞ্চির বেড়া দিয়ে ঘেরা খেজুর, ঝাউ, পাতাবাহার-সহ রকমারি গাছের বাগান। যাতে চোখের আরামও মিলবে।
উপলক্ষ অনূর্ধ্ব সতেরো বিশ্বকাপ। আট অক্টোবর থেকে সল্টলেকের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে শুরু হচ্ছে এই আয়োজন। ফলে কিছু দিনের মধ্যেই শহরে দেশ-বিদেশ থেকে আসা অতিথিদের ভিড় শুরু হয়ে যাবে। অথচ মেট্রো রেলের কাজের জন্য শহরের পূর্ব এবং দক্ষিণ দিকের বেশ কিছু জায়গা ভাঙাচোরা। সেই ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’ নেমে কয়েকটি সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে রাজ্যের পূর্ত ও নগরোন্নয়ন দফতর।
যুবভারতীকে পাখির চোখ ধরে সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হয়েছে। যুবভারতীর সামনে বাইপাসের সুভাষ সরোবর থেকে বেলেঘাটা কানেক্টর পর্যন্ত মি়ডিয়ান ডিভাইডারে নীল-সাদা রং করা হয়ে গিয়েছে। তার সামনে থাকছে লম্বাটে সবুজ চাকা লাগানো ধাতব টব। প্রতি টবে রয়েছে সাদা মুসান্ডা ও কাগজ ফুলগাছ। এর আগে বিদ্যাসাগর সেতুতেও এমন টব রেখে সৌন্দর্যায়ন হয়েছে। ওই অংশের বাইপাস ও সার্ভিস রোডের মাঝের উঁচু অংশেও। সেখানে বুলডোজার দিয়ে আবর্জনা সরিয়ে সমান করা হচ্ছে। এ বার বাগান করে আলো ও নকশা করা চেয়ার বসানো হবে। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে খেলা দেখতে আসা অতিথিদের গাড়ি বাইপাস থেকে এসে ঢুকে যাবে সুভাষ সরোবরের নব নির্মিত পার্কিংয়ে। এ জন্য সুভাষ সরোবরের একাংশে গ্রিল দিয়ে ফেন্সিং করে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। সেখানেও সৌন্দর্যায়ন চলছে জোরকদমে। কাজ করছে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, উল্টোডাঙা থেকে গড়িয়া ঢালাই ব্রিজ পর্যন্ত বাইপাসের দু’ধারে সৌন্দর্যায়নের আরও একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সংস্থা। সবুজ রঙের কঞ্চির বেড়া দিয়ে ঘিরে বিভিন্ন ধরনের বাহারি গাছ বসানো হয়েছে। কেএমডিএ-র (রোডস্, সিটি সেক্টর) এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো-পথের নীচের রাস্তাতেও কঞ্চির বেড়া দিয়ে ঘিরে একই ভাবে সৌন্দর্যায়ন হবে। চারা বসানো এবং আগামী তিন বছর সে সবের রক্ষণাবেক্ষণ করবে বন দফতর। এ জন্য ১২ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে কেএমডিএ-র।’’ তিনি জানান, সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি, মেট্রোর স্তম্ভগুলিকে নিরাপদ ও দখলদারমুক্ত রাখা এর উদ্দেশ্য।
উৎসবে রঙের প্রলেপ পড়ছে শহরের কয়েকটি সার্ভিস রোডে। বাইপাস বা বড় রাস্তার চাপ কমাতে এক সময়ে এগুলি তৈরি হয়েছিল। অভিযোগ, বেশির ভাগ সময়ে অবহেলিত হয়ে থাকে সার্ভিস রোড। কিছু দিন আগেও অসম্পূর্ণ ও ভাঙাচোরা ছিল বেলেঘাটা মেন
রোড কানেক্টর পর্যন্ত বাইপাস সংলগ্ন সার্ভিস রোডটি। ফুটবল উৎসব উপলক্ষে সেই রাস্তা সম্প্রসারণ করে তৈরি হচ্ছে। রুবির বিপরীতে
এবং পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন দু’টি সার্ভিস রোডে জোড়াতালি দেওয়ার কাজ চলছে। তবে এখনও বেহাল অবস্থায় পরিবেশ ভবনের সামনের সার্ভিস রোডটি। সেই রাস্তায় আপাতত রুবির বিপরীতের সার্ভিস রোডের সংস্কার শুরু হয়েছে। কেএমডিএ সূত্রের খবর, পরিবেশ ভবনের সামনের সার্ভিস রোডের সংস্কার দ্রুত শুরু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy