Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বাবাকে নিগ্রহের বদলা নিতে ‘খুন’

ছেলে শুনেছিলেন, তাঁর মানসিক ভারসাম্যহীন প্রৌঢ় বাবাকে কটূক্তি করা হয়েছে। এর পরে চাক্ষুষ করলেন, শুধু কটূক্তি নয়, বাবাকে শারীরিক নিগ্রহও করা হচ্ছে। বাবার সঙ্গে এমন আচরণে ক্রুদ্ধ ছেলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলেন প্রতিবেশী এক ব্যক্তিকে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৩৪
Share: Save:

ছেলে শুনেছিলেন, তাঁর মানসিক ভারসাম্যহীন প্রৌঢ় বাবাকে কটূক্তি করা হয়েছে। এর পরে চাক্ষুষ করলেন, শুধু কটূক্তি নয়, বাবাকে শারীরিক নিগ্রহও করা হচ্ছে। বাবার সঙ্গে এমন আচরণে ক্রুদ্ধ ছেলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলেন প্রতিবেশী এক ব্যক্তিকে। রবিবার রাতের ওই ঘটনায় গুরুতর জখম অনুকূল নস্কর (৫২) সোমবার ভোরে মারা যান। খুনের অভিযোগে অমর কর নামে বছর তিরিশের যুবককে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশকে অমর জানান, পেশায় অটোচালক অনুকূলই তাঁর বাবাকে কটূক্তি ও নিগ্রহ করেন।

পুলিশ জানায়, অমরের বাবার নাম সুভাষ কর। সুভাষবাবু ও অনুকূল— দু’জনেরই বাড়ি রবীন্দ্র সরোবর সংলগ্ন গোবিন্দপুর বস্তিতে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মানসিক ভারসাম্যহীন সুভাষবাবুকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন অনুকূল। বহু বার নিষেধ করেও লাভ হয়নি। রবিবার বিকেলে তিনি ফের সেই কাজ করেন। সন্ধ্যায় সুভাষবাবু ছেলে অমরকে ঘটনাটি জানান। বাবার অভিযোগ যাচাই করতে অনুকূলের কাছে বাবাকে নিয়ে যান অমর।

পুলিশ জানায়, অনুকূল তখন রবীন্দ্র সরোবরের সামনে সিমেন্টের বেঞ্চে বসেছিলেন। তাঁর সামনে বাবাকে হেঁটে যেতে বলেন অমর। তিনি আড়াল থেকে লক্ষ রাখেন। অমরের বোন পলির অভিযোগ, অনুকূল সুভাষবাবুকে উত্ত্যক্ত করেন, মাথায় চড়ও মারেন। তখন আড়াল অমর বেরিয়ে এলে অনুকূলের সঙ্গে তাঁর তীব্র বাদানুবাদ শুরু হয়। পুলিশ জেনেছে, অনুকূলকে অমর একের পর এক ঘুষি মারেন। অনুকূল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাঁর মাথায় ছুরি
মারেন অমর।

খবর পেয়ে পুলিশ এসে অনুকূলকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার ভোরে সেখানেই মারা যান অনুকূল।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জয়রঞ্জন রাম বলেন, ‘‘খুনটা তো অপরাধ। তবে মানসিক ভারসাম্যহীনদের সঙ্গে রসিকতা থেকে সমাজকে বেরিয়ে আসতে হবে।’’ আর এক মনোচিকিৎসক সুজিত সরখেলের কথায়, ‘‘মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষদের উত্ত্যক্ত করা অনুচিত। এই বোধ আসা প্রয়োজন।’’ তবে রবীন্দ্র সরোবরের সুরক্ষায় পুলিশ চৌকি আছে। তার পরেও এমনটা ঘটল কী ভাবে? পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘অল্প সময়ের মধ্যে ঘটনাটি ঘটে গিয়েছে। পরে পুলিশই আহতকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Revenge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE