প্রতীকী ছবি।
নেশার টাকা না পেয়ে ৭৪ বছরের অধ্যাপক বাবাকে খুন করল ছেলে। খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে ছেলে। বুধবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে রাজারহাটের সালুয়ার স্বরাজ পার্কের একটি ফ্ল্যাটে। পুলিশ জেনেছে, বাবা যোগমায়া দেবী কলেজের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক। টাকাপয়সা নিয়ে বাবা-ছেলের মধ্যে মাঝেমধ্যেই ঝগড়া হত। ওই রাতে সেই অশান্তিই চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। এর পরেই ছেলে বাবাকে ছুরি মেরে খুন করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিমানবন্দর থানা সূত্রের খবর, ওই রাতে স্বরাজ পার্কের আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী গোবিন্দ চক্রবর্তী পুলিশে ফোন করে জানান, আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে বড় কোনও অঘটন ঘটেছে বলে আশঙ্কা তাঁর। সেই বার্তা পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিমানবন্দর থানার পুলিশ। নিরাপত্তারক্ষীকে সঙ্গে নিয়ে ফ্ল্যাটে পৌঁছলে দরজা খুলে দেন সেই ফ্ল্যাটের বাসিন্দা সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়। পুলিশ সূত্রের খবর, সব্যসাচী সেই সময়ে মত্ত অবস্থায় ছিল। ফ্ল্যাটের ভিতরে ঢুকে তদন্তকারীরা দেখেন, বসার ঘরে ৭৪ বছরের বৃদ্ধ সুনীতিকুমার মুখোপাধ্যায়ের দেহ পড় রয়েছে। এর পরেই তাঁর ছেলে সব্যসাচীকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুনীতিবাবু পদার্থবিদ্যার শিক্ষক ছিলেন। তাঁর স্ত্রী আগেই মারা গিয়েছেন। ছেলে সব্যসাচী দু’বার বিয়ে করে। যদিও দু’টি বিয়েই ভেঙে গিয়েছে।
নিরাপত্তারক্ষী পুলিশকে জানিয়েছেন, রাত ন’টা নাগাদ চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে সিঁড়ি দিয়ে ১০৫ নম্বর ফ্ল্যাটের কাছে যান তিনি। বাবা-ছেলের মধ্যে বাদানুবাদ চলছে বলেই কানে আসে তাঁর। তখন তিনি আবার নীচে নেমে আসেন। গভীর রাতে ওই ফ্ল্যাট থেকে কান্নার আওয়াজ শুনে সিকিয়োরিটি ইনচার্জকে নিয়ে ফের উপরে যান তিনি। কিন্তু বারবার ডাকার পরেও কেউ দরজা না খোলায় এ বার থানায় খবর দেন ওই নিরাপত্তারক্ষী।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পুলিশ সূত্রের খবর, নিহত সুনীতিবাবুর আসল বাড়ি টালিগঞ্জ থানার অন্তর্গত ১০ নম্বর আন্দুল রাজ রোডে। সেই বাড়ি প্রোমোটিংয়ে দিয়েছিলেন সুনীতিবাবু। যতদিন না নির্মাণকাজ শেষ হচ্ছে, ততদিন সালুয়ার ওই আবাসনে বাবা এবং ছেলের থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন প্রোমোটার। পুলিশ জানিয়েছে, সব্যসাচী এক সময়ে গড়িয়ার একটি হোটেল ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করলেও, এখন কোনও কাজ ছিল না তার। নিয়মিত নেশাও করত সে।
এই পরিস্থিতিতে বাবার কাছে টাকা চাইলে অশান্তি ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন টিভি দেখা নিয়ে দু’জনের ঝগড়া হয়েছিল। বাবা ছিলেন নিরামিষাশী। ছেলের মুরগির মাংস খাওয়া নিয়েও ঝগড়া হত মাঝেমধ্যে। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, ঘুমন্ত অবস্থায় বাবাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেছে ছেলে। এ দিন ধৃতকে ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে তাকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy