নমিতা দত্ত
একটি ঘরে পুজো করতে ঢুকেছিলেন বছর ৬৫-র এক বৃদ্ধা। অভিযোগ, তখনই মেজ ভাসুরের ছেলে পিছন থেকে এসে একটি হাতুড়ি দিয়ে ওই বৃদ্ধার মাথা এবং হাতে বারবার আঘাত করতে থাকে।
বৃদ্ধা চিৎকার করে উঠতে পাশের একটি ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন তাঁর ছোট জা। পরে বাড়ির সবাই উপস্থিত হলে খবর দেওয়া হয় পুলিশে। শুক্রবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় বৃদ্ধার।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পর্ণশ্রী থানা এলাকার রবীন্দ্রনগর রোডে। মৃতার নাম নমিতা দত্ত। রক্তাক্ত অবস্থায় বৃদ্ধাকে পুলিশ প্রথমে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে মোমিনপুরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই শুক্রবার সকালে মৃত্যু হয় বৃদ্ধার।
পুলিশ জানিয়েছে, নমিতাদেবীর স্বামী ফণীন্দ্রনাথ দত্তের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁর ভাইপো শুভাশিস দত্তকে গ্রেফতার করেছে। সরকারি কৌঁসুলি সৌরীন ঘোষাল জানান, ধৃতকে শুক্রবার আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজত হয়েছে।
নমিতাদেবীর শ্বশুরবাড়ির লোকজন শুক্রবার জানান, ফণীন্দ্রনাথবাবুরা পাঁচ ভাই। তিনি স্থানীয় ক্ষেত্রমোহন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তাঁর মেজদার ছেলে শুভাশিস। একই বাড়িতে থাকলেও তাঁদের সকলের সংসার আলাদা। পরিবারের লোকজন জানান, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টা নাগাদ নমিতাদেবী দোতলা থেকে নীচে নামেন পুজো করতে। ঘরের দরজা খোলা ছিল। আচমকা চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে নমিতাদেবীর
ছোট জা দেখেন, শুভাশিস একটি হাতুড়ি দিয়ে তাঁর মাথায় পরপর মেরে চলেছে। এর পরে পরিবারের বাকি সদস্যরা চলে আসেন। তাঁদের অভিযোগ, কাকিমাকে আঘাত করার পরেই নিজের ঘরে গিয়ে মদ্যপান করতে শুরু করে শুভাশিস। এর পরেই পুলিশে খবর দেন পরিবারের লোকজন।
নমিতাদেবীর এক জায়ের পুত্রবধূ জানান, শুভাশিসের বাবা-মা অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। শুভাশিস এক সময়ে কলকাতা পুলিশের ওয়্যারলেস বিভাগে কাজ করত। তার স্নায়ুরোগ ও মানসিক কিছু সমস্যা রয়েছে। কিন্তু শুভাশিস চিকিৎসা করাত না বলেই পরিবারের দাবি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, শুভাশিস যে পুলিশে কাজ করত, তার কোনও জোরালো প্রমাণ মেলেনি। তবে কলকাতা পুলিশ লেখা একটি প্রশিক্ষণের শংসাপত্র মিলেছে। পাশাপাশি, মানসিক অসুস্থতার কোনও প্রমাণও মেলেনি বলেও দাবি পুলিশের। তবে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ দবি, শুভাশিস জানিয়েছে, নমিতাদেবী ও পরিবারের বাকিরা তাকে সম্পত্তির ভাগ দিচ্ছিলেন না। তার জেরেই রেগে গিয়ে সে কাকিমার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে। পুলিশ নমিতাদেবীর দেহ ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy