Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Bike

বাইকে স্টান্টবাজি দেখাতে গিয়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে মৃত্যু কিশোরের

এ দিন সকালে কাউকে কিছু না জানিয়েই দাদার বাইক নিয়ে বন্ধুর সঙ্গে বেরিয়েছিল স্যামুয়েল। প্রথমে তারা প্রিন্সেপ ঘাটে যায়। সেখান থেকে দু’জনে দ্বিতীয় হুগলি সেতু পেরিয়ে ওপারে চলে যায়। সেখান থেকে ফেরার পথেই দুর্ঘটনা ঘটে।

গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৮ ১৪:৩২
Share: Save:

বাইকে স্টান্টবাজি দেখাতে গিয়ে মৃত্যু হল এক কিশোরের। মৃতের নাম লালু সাহানি ওরফে স্যামুয়েল (১৭)। শনিবার সকাল সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, সেতুর উপরে উঠে ওই কিশোর হাত ছেড়ে বাইক চালাচ্ছিল। তার বাইকের পিছনে অন্য এক কিশোরও ছিল। দ্রুত গতিতে হাওড়ার দিক থেকে কলকাতার দিকে বাইক চালিয়ে যাওয়ার সময় আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর ধারের ডিভাইডারে ধাক্কা মারে। দু’জনের কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। দুর্ঘটনার পর দু’জনেই রাস্তায় ছিটকে পড়ে। সেতুর উপরে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা তাদের উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই ভবানীপুরের বাসিন্দা স্যামুয়েলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। কলকাতার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পড়ত সে। তবে তার বন্ধুর শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল।আহতের নাম অমিত বাল্মীকি (২১)। দু’জনের বাড়িই বেলতলা রোডের পেয়ারাবাগান বস্তিতে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে কাউকে কিছু না জানিয়েই দাদার বাইক নিয়ে বন্ধুর সঙ্গে বেরিয়েছিল স্যামুয়েল। প্রথমে তারা প্রিন্সেপ ঘাটে যায়। সেখান থেকে দু’জনে দ্বিতীয় হুগলি সেতু পেরিয়ে ওপারে চলে যায়। সেখান থেকে ফেরার পথেই দুর্ঘটনা ঘটে। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে, ওই এলাকায় সিসি ক্যামেরা ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই পুলিশ বাইকে আরোহী ওই কিশোরের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে, দুই বন্ধু মাঝেমধ্যেই বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ত। পুজোর সময়েও বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছে। দুর্ঘটনার পর স্যামুয়েলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, এ দিন সকালে কাউকে না জানিয়েই দাদার বাইক নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল সে।

লালুর পরিজনেদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, এ দিন সকাল ছ’টা নাগাদ দাদার মোটরবাইক নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন তিনি। অথচ মোটরবাইক চালানোর লাইসেন্স ছিল না তাঁর। পাড়ার দাদা অমিতকে প্রায় জোর করে সঙ্গে নেন লালু। অমিত পুলিশকে জানান, প্রিন্সেপ ঘাট ঘুরে বিদ্যাসাগর সেতুতে ওঠেন তাঁরা। লালু কখনও এক হাতে হাতল ধরছিলেন, কখনও দু’হাত ছেড়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। রেস কোর্সের দিকে নামার সময়ে আচমকাই দু’হাত শূন্যে তুলে করজোড়ে প্রণাম করতে যান লালু। তখনই নিয়ন্ত্রণ হারান তিনি।

পুলিশ জানায়, ডিভাইডারে ধাক্কা খেয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান ওই যুবক। তাঁর কান দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে থাকে। হাত-পায়ে চোট পান অমিতও। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে অমিতকে ছেড়ে দেন চিকিৎসকেরা। তাঁর থেকেই ফোন নম্বর নিয়ে লালুর বাড়িতে দুর্ঘটনার খবর দেয় পুলিশ। পাড়ার ছেলের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে লালুর মা এবং বড় দাদাকে নিয়ে হেস্টিংস থানায় জড়ো হন পেয়ারাবাগান বস্তির লোকজন। এ দিকে লালুর বাবা কার্তিক সাহানিকে নিয়ে কয়েক জন প্রতিবেশী হাসপাতালে চলে যান।

স্থানীয় সূত্রে খবর, পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি কার্তিকবাবুর তিন ছেলে। লালু ছোট। এ দিন সকালে প্রথমে ঘুমন্ত কার্তিকবাবুর পকেট হাতড়ে তাঁর স্কুটির চাবি নিতে গিয়েছিলেন লালু। কিন্তু বাবা চাবি না দেওয়ায় বড় দাদা সুপ্রিয়র মোটরবাইকের লুকিয়ে রাখা চাবি হাতিয়ে বেরোন তিনি। পরিজনেদের দাবি, লালুকে মোটরবাইক চালাতে দিতেন না তাঁর বাবা বা দাদা। তবু মাঝেমধ্যে চাবি জোগাড় করে বেরিয়ে পড়তেন একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র।

আরও পড়ুন: চার কিমি যেতে ২৪০ টাকা, পুজোর সুযোগে ফায়দা তুলল অ্যাপ ক্যাব

(কলকাতার ঘটনা এবং দুর্ঘটনা, কলকাতার ক্রাইম, কলকাতার প্রেম - শহরের সব ধরনের সেরা খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE