নীলেশ সিংহ
দেশের বাড়িতে যাচ্ছেন বলে বেরিয়েছিলেন আঠেরো বছরের তরুণ। এর পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। রবিবার রাতে ভিন্ রাজ্যের পুলিশ মারফত খবর আসে, মালগাড়ি থেকে অর্ধদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ওই তরুণকে।
পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে নীলেশ সিংহ নামে ওই তরুণের। তিনি বেলুড়ের বি কে পাল টেম্পল রোডের বাসিন্দা। তদন্তকারীদের দাবি, হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন নীলেশ জানিয়ে গিয়েছেন, কয়েক জন বন্ধু তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। মৃত্যুর পরে ধানবাদ রেলপুলিশের তরফে বেলুড়ে খবর পাঠানো হয়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বি কে পাল টেম্পল রোডের বাসিন্দা কমলেশ সিংহের প্রথম পক্ষের ছেলে নীলেশ। সৎ মায়ের সঙ্গে প্রায়ই অশান্তি লেগে থাকত ওই তরুণের। গত ৭ জুন, বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান নীলেশ। প্রতিবেশী বিশ্বজিৎ ভঞ্জচৌধুরী বলেন, ‘‘কোথায় যাচ্ছে জিজ্ঞাসা করায় নীলেশ জানিয়েছিল দেশে চলে যাচ্ছে।’’ প্রতিবেশীরা জানান, মাঝে এক বারই ফোনে নীলেশ জানিয়েছিল, কানপুরে দেশের বাড়ি যেতে ট্রেন ধরছে। পরের দিন নিখোঁজ ডায়েরি করেন পরিজনেরা।
এ দিন ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নীলেশদের ফ্ল্যাট তালাবন্ধ। প্রতিবেশীরা জানান, ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে কমলেশবাবুরা ধানবাদ গিয়েছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, গত ১০ জুন রবিবার ধানবাদ রেলপুলিশ একটি মালগাড়ি পরীক্ষা করার সময়ে কামরার ভিতরে অর্ধদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে নীলেশকে। তাঁকে ধানবাদ হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশই। তদন্তকারীদের দাবি, মৃত্যুর আগে ওই তরুণ তাঁর জবানবন্দিতে জানান, ৭ জুন হাওড়া স্টেশনে পৌঁছনোর পরে তাঁর সঙ্গে কয়েক জন বন্ধুর দেখা হয়। তাঁদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেন তিনি। এর পরে একটি বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে বচসা হয়। পুলিশের অনুমান, ওই তরুণের গায়ে আগুন ধরিয়ে মালগাড়ির ভিতরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ৭ জুন বাড়ি থেকে বেরিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়েছিল নীলেশের। তার তিন দিনের মাথায় ধানবাদে মালগাড়ি থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। তা হলে মাঝের দিনগুলিতে তিনি কোথায় ছিলেন? কী ভাবেই বা গায়ে আগুন ধরিয়ে ওই তরুণকে মালগাড়িতে ফেলা হল? সব দিকই খতিয়ে দেখছে ধানবাদ পুলিশ। সেখানকার রেলপুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ অন্য দিকে, বেলুড়েও একটি খুনের মামলা দায়ের করেছে নীলেশের পরিবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy