ট্যাক্সিতে বসে নিছক মজা করেই নিজের মোবাইলে ছবি তুলেছিলেন এক ব্যক্তি। আর সেই ছবির দৌলতেই তিনি ফেরত পেলেন কয়েক হাজার টাকা, সোনার গয়না, মূল্যবান নথি-সহ খোওয়া যাওয়া ব্যাগ।
ব্যাগ ফেরত পেয়ে অবশ্য ট্যাক্সি চালককে কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি বেহালার রবীন্দ্র নগরের বাসিন্দা মানস মুখোপাধ্যায়। মানসবাবু জানিয়েছেন, বুধবার সকালে বেহালা থেকে ট্যাক্সিতে ওঠেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী ঐশ্বর্য মুখোপাধ্যায়। ট্যাক্সিতে নিছকই মজা করতে পরিবারের সকলের ছবি মোবাইলে তুলে রাখেন মানসবাবু। এর পরে সাড়ে এগারোটা নাগাদ থিয়েটার রোডের কাছে ট্যাক্সি থেকে নেমে যান তাঁরা। কিন্তু পিছনের সিটে রাখা ব্যাগটি নিতে ভুলে যান।
মানসবাবু আরও জানিয়েছেন, এ দিন তাঁরা হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। হঠাত্ ব্যাগ হারিয়ে যাওয়ায় অকূল পাথারে পড়েন তাঁরা। তখনই ঐশ্বর্যদেবী তাঁকে ট্যাক্সিতে তোলা ওই ছবিগুলি দেখার কথা মনে করিয়ে দেন। তার পরেই কেল্লাফতে! ওই ছবিতে দেখা যায়, ট্যাক্সির দরজার পাশে লেখা রয়েছে ট্যাক্সির শেষ চারটি নম্বর৫৪৬১।
ওই নম্বর ধরে শুরু হয় ট্যাক্সিচালককে খোঁজা। মানসবাবুরা বিষয়টি জানান বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিমল গুহকেও। সেখান থেকে খোঁজ মেলে ট্যাক্সিচালক ও মালিকের। বিকেল তিনটে নাগাদ উদ্ধার হয় ব্যাগটি। মানসবাবু এ দিন বলেন, “বিমলবাবু এবং ট্যাক্সিচালকের সহযোগিতা না পেলে ব্যাগ ফিরে পেতাম না। ভাগ্যিস ট্যাক্সিতে বসে ছবিটা তুলেছিলাম।” তবে এর পাশাপাশি চালকের সততার কথা বলতেও ভোলেননি তিনি।
ওই ট্যাক্সির চালক হাওড়ার সালকিয়ার বাসিন্দা অজয় সিংহ জানান, থিয়েটার রোডে মানসবাবুরা নেমে যাওয়ার পরে অন্য যাত্রী নিয়ে গড়িয়াহাটে যান তিনি। সেই যাত্রীরা নামার সময়ে চালক দেখেন, পিছনের সিটে একটি ব্যাগ পড়ে রয়েছে। অজয়বাবু যাত্রীদের ব্যাগ নিতে বললে তাঁরা জানান সেটি তাঁদের নয়। অজয়বাবু বলেন, “এর পরে ব্যাগ খুলে দেখি ভিতরে একটি ফোন নম্বর লেখা পরিচয়পত্র রয়েছে। কিন্তু তাতে ফোন করে কোনও সাড়া পাইনি।” এর পরেই তিনি ঠিক করেন ট্যাক্সির মালিককে ব্যাগটি ফেরত দেবেন।
কিন্তু ততক্ষণে বিমলবাবু খোঁজ পান ট্যাক্সির মালিক বিকাশকুমার মাহাতোর। বিকাশবাবুই চালককে ফোনে বিষয়টি জানান। বিকেল তিনটে নাগাদ টালিগঞ্জ থেকে মানসবাবু ফিরে পান তাঁর ব্যাগ।
মানসবাবু জানান, ওই ব্যাগে সোনার গয়না, টাকা, ব্যাঙ্কের বই, এটিএম ও পরিচয়পত্র সবই ঠিক মতো ছিল। এ দিন বিমল গুহ বলেন, “ব্যাগে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ছিল। মানসবাবু তা ফেরত পাওয়ায় আমি খুশি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy