Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

রাস্তায় মৃত্যু, দায় এড়াতে ঠেলাঠেলি চার থানার

সকলেই যাতে আলোয় আলোয় পথ চলতে পারেন, সেই জন্য রাস্তায় বাল্ব লাগাতে গিয়েছিলেন তিনি। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তখনই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর সেই মৃত্যু আর তাঁর মৃতদেহ নিয়ে অন্তত চারটি থানার দায় এড়ানোর তৎপরতা দেখল বুধবার রাতের কলকাতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৫ ০২:১২
Share: Save:

সকলেই যাতে আলোয় আলোয় পথ চলতে পারেন, সেই জন্য রাস্তায় বাল্ব লাগাতে গিয়েছিলেন তিনি। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তখনই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর সেই মৃত্যু আর তাঁর মৃতদেহ নিয়ে অন্তত চারটি থানার দায় এড়ানোর তৎপরতা দেখল বুধবার রাতের কলকাতা।

কখনও নিষ্ক্রিয়তা, আবার কখনও অতি-সক্রিয়তার জন্য ইদানীং নানা মামলায় আদালতে দুরমুশ হতে হচ্ছে পুলিশকে। এই মহানগরেই নিজেদের থানার মধ্যে মারমুখী জনতার হাত থেকে মাথা বাঁচাতে পুলিশকর্মী সেঁধিয়ে যাচ্ছেন টেবিলের তলায়। আবার দায়সারা তদন্তের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই আদালতে তিরস্কৃত হচ্ছে পুলিশ। কিন্তু নিজেদের ভাবমূর্তি উদ্ধারে আইনরক্ষকদের কোনও উদ্যোগই নেই। তড়িৎস্পৃষ্ট হয়ে একটি অপমৃত্যুর ঘটনা কোন থানা নথিভুক্ত করবে, তা নিয়ে চার-চারটি থানার টানাপড়েন পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাকেই ফের বেআব্রু করে দিল।

পুলিশের দায় এড়ানোর এই খেলার প্রতিবাদে রাস্তায় নামল জনতাও। উল্টোডাঙায় ভিআইপি রোডের সেতু অবরোধ করে তারা বিপর্যস্ত করে দিল যান চলাচল। ঘরমুখী মানুষজন বিপাকে পড়লেন। তবে নগর-পুলিশ যে-ভাবে নিজেদের উর্দিতে নিজেরাই আরও এক পোঁচ কালি মাখিয়ে নিল, তাতে এলাকার মানুষজন হতবাক হয়ে গিয়েছেন।

ঠিক কী ঘটেছিল? পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রাস্তায় অন্ধকার দেখে বুধবার সন্ধ্যায় উল্টোডাঙার দুর্গাপুর ব্রিজের লাগোয়া এলাকার এক বাসিন্দা আলো লাগাতে গিয়েছিলেন। তখনই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। বাসিন্দারা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও বাঁচাতে পারেননি। মৃতের আত্মীয়স্বজন এবং এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ বিষয়টিকে গুরুত্বই দেয়নি। প্রথমে উল্টোডাঙা থানায় বিষয়টি জানাতে গেলে তারা বলে, যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেই জায়গাটি তাদের এলাকার মধ্যে পড়ে না। তারা কিছু করতে পারবে না। তার পরে বাসিন্দারা পরপর বিধাননগর, মানিকতলা, লেক টাউন থানায় যান। অভিযোগ, ওই তিনটি থানাও ঘটনাটি তাদের এলাকার নয় বলে দায় এড়িয়ে যায়।

ক্ষুব্ধ জনতা ভিআইপি রোডের ওই সেতু অবরোধ করে। ব্যাপক যানজট হয়। শেষ পর্যন্ত উল্টোডাঙা থানাই বিষয়টি নথিভুক্ত করে। অবরোধও উঠে যায়। কিন্তু তত ক্ষণে অফিস-ফেরত যাত্রীদের ঘরে ফেরার ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

death police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE