দোকান বনধ, হকারদের পোয়াবারো চলছেই। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।
মেয়রের সূত্র খারিজ করে বন্ধে সামিল হলেন নিউ মার্কেট চত্বরের ব্যবসায়ীরা। বুধবার প্রথম দিনেই দোকানপাট বন্ধ রেখে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন প্রশাসনকে। বনধের উদ্যোক্তারা এ দিন জানান, আগামী দু’দিনও দোকানের ঝাঁপ খুলবে না। পাশাপাশি জানিয়ে দেন, প্রশাসন হকার-‘দৌরাত্ম্য’ ঠেকাতে কোনও ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তী সময়ে অন্য বাজারের ব্যবসায়ীরাও তাঁদের এলাকার বাজার বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানাবেন।
এ দিনের জয়েন্ট ট্রেডার্স ফেডারেশনের মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য বেলা ১১টা নাগাদ গ্লোব সিনেমার কাছে হাজার খানেক ব্যবসায়ী জড়ো হন। সেখান থেকে মিছিল করে তাঁরা নিউ মার্কেট চত্বর ঘোরেন। পরে ফেডারেশনের সম্পাদক রাজীব সিংহ জানান, তাঁদের এই বনধকে সমর্থন জানিয়েছেন শহরের আর কিছু বাজারের ব্যবসায়ীরা। তাঁরাও এ দিনের মিছিলে যোগ দেন। তবে অন্য বাজার থেকে ব্যবসায়ীরা এই কর্মসূচিতে সামিল হলেও, নিউ মার্কেট চত্বরের হকারদের মধ্যে কোনও হেলদোল চোখে পড়েনি। প্রতি দিনের মতো এ দিনও তাঁরা পসরা সাজিয়ে নিউ মার্কেট চত্বরের বিভিন্ন জায়গায় বসেছেন। যার প্রেক্ষিতে জয়েন্ট ট্রেডার্স ফেডারেশনের বক্তব্য, নিউ মার্কেট চত্বরের বাজারের ব্যবসা নিয়ে হকারদের কোনও দিনই মাথা ব্যথা ছিল না। বরং যত দিন যাচ্ছে হকাররা আরও জায়গা দখল করছে। বার বার এই বিষয়ে পুরসভাকে জানালেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই তাঁরা বাজারগুলি বন্ধ রেখে এই প্রতিবাদে নেমেছেন।
এ দিকে পুর ভোটের আগে নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বনধ ডাকায় অস্বস্তি বেড়েছে পুর-প্রশাসনের। কারণ ব্যবসায়ীদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানতে পেরে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেয়রের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানান বনধ তুলে নেওয়ার জন্য। মুখমন্ত্রীর এই বার্তা পৌঁছতে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় মঙ্গলবারই ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। ওই দিন মেয়র তাঁদের জানান, মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে বনধ তুলে নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। এমনকী আগামী শুক্রবার হকারদের সঙ্গে সভায় মুখ্যমন্ত্রীর এই নিয়ে হকারদের পরামর্শ দিতে পারেন, এমন আভাসও জয়েন্ট ট্রেডার্স ফেডারেশনের প্রতিনিধিদের জানানো হয়। কিন্তু প্রতিনিধিরা সব অগ্রাহ্য করে সে দিনই মেয়রকে নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকার কথা জানিয়ে আসেন। তাঁরা ফের জানান, সংগঠনের তরফে এর আগে মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি দিয়ে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। তাই তাঁরা আর কোনও অনুরোধ রাখতে পারছেন না।
এ দিকে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধকে উপেক্ষা করে জয়েন্ট ট্রেডার্স ফেডারেশন বাজারগুলি বন্ধ রাখায়, বুধবার পুরসভা আগ বাড়িয়ে কোনও কথা বলতে চায়নি। এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy