Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
আলোচনা

পারদর্শিতাই শেষ কথা

আদিত্য বসাকের ছবি দুটি গভীর তাৎপর্যপূর্ণ। সাধারণ কামনা-বাসনা থেকে শুরু। তার পরে পরতে পরতে নাট্যশৈলীর ভেতর দিয়ে এসে, দুর্বোধ্য রহস্যাবৃত এক ধ্যানতন্ময়তায় এনে ফেলেন। চমৎকার ছবি।

অনুচিত্র: প্রদর্শিত ছবিটি শিল্পী শ্রীকান্ত পালের

অনুচিত্র: প্রদর্শিত ছবিটি শিল্পী শ্রীকান্ত পালের

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:২৪
Share: Save:

সোসাইটি অব কনটেম্পোরারি আর্টিস্টদের অনুচিত্রের প্রদর্শনীটি বেশ পরিচ্ছন্ন। শিল্পীরা হলেন আদিত্য বসাক, অখিলচন্দ্র দাস, অতীন বসাক, অতনু ভট্টাচার্য, বিমল কুণ্ডু, দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়, গণেশ হালুই, লালুপ্রসাদ সাউ, মানিক তালুকদার, মনোজ দত্ত, মনোজ মিত্র, মানু পারেখ, নিরঞ্জন প্রধান, পঙ্কজ পানোয়ার, পার্থ দাশগুপ্ত, প্রদীপ মিত্র, রাজেন মণ্ডল, সনৎ কর, শ্রীকান্ত পাল এবং সুনীলকুমার দাস। এই সব শিল্পীরা সকলেই অভিজ্ঞ।

আদিত্য বসাকের ছবি দুটি গভীর তাৎপর্যপূর্ণ। সাধারণ কামনা-বাসনা থেকে শুরু। তার পরে পরতে পরতে নাট্যশৈলীর ভেতর দিয়ে এসে, দুর্বোধ্য রহস্যাবৃত এক ধ্যানতন্ময়তায় এনে ফেলেন। চমৎকার ছবি। শিল্পী অতনু ভট্টাচার্যের কালি-তুলিতে রঙিন কাগজে করা দুটি মানুষের আকৃতি। দ্বিমাত্রিক চিত্র। শিল্পীর পারদর্শিতার প্রমাণ রাখে।

গণেশ হালুইয়ের রেখাচিত্র তাঁর প্রতিভার, অসাধারণ কার্যকুশলতার পরিচয় রাখে। এই মহান শিল্পী বহু কমবয়সি শিল্পীকে অনুপ্রাণিত করেছেন। ভাবীকাল তাঁকে সম্মান জানাতে ভুল করবে না। শিল্পী লালুপ্রসাদ সাউয়ের কাজগুলি খুবই আকর্ষণীয়। সহজ রঙের বিন্যাস। জায়গা বিভাজন পরিচ্ছন্ন। শিল্পী সনৎ করের কাজ আপাতদৃষ্টিতে সহজ সরল মনে হলেও ওঁর সৃজন-কল্পনার দৃষ্টি দর্শক-মস্তিস্কে এক তীব্র ইন্দ্রিয়-চেতনা জাগায়। তাঁর কাজ সত্যিই অনবদ্য। ছোট ছিমছাম প্রদর্শনী। বাকি শিল্পীরা নিজের মতো করে ছবি এঁকে দর্শককে মুগ্ধ করেছেন।

শমিতা বসু

দুঃসাহসিক প্রয়াস

সম্প্রতি মধুসূদন মঞ্চে সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ উপলক্ষে ‘নবনালন্দা’ আয়োজন করেছিল মধুসূদন দত্তের নৃত্যনাট্যরূপ ‘মেঘনাদবধ কাব্য’। মধুসূদনের এই কাব্যটি নৃত্যনাট্যরূপে মঞ্চস্থ করা নিঃসন্দেহে একটি দুঃসাহসিক প্রয়াস।

একটি সঙ্গীতহীন প্রযোজনায় নৃত্য সংযোজন সহজ নয়। তবু এই নৃত্য পরিকল্পনার তুলনাহীন কৃতিত্ব দেখিয়েছেন শিল্পী অনাদিপ্রসাদ। নৃত্যনাট্যরূপ পরিকল্পনায় ভারতী মিত্র প্রশংসার দাবি রাখেন। এই নৃত্যনাট্যে নামভূমিকায় ছিলেন শুভাশিস ভট্টাচার্য। আহত বীরদর্প, কাপুরুষের হাতে আসন্ন মৃত্যুর লজ্জা, বিভীষণের প্রতি তিরস্কার ও করুণ মৃত্যুর দৃশ্য তাঁর নৃত্যাভিনয়ে জীবন্ত হয়ে উঠেছে। প্রমীলার চরিত্রে মধুবনী চট্টোপাধ্যায় তাঁর অপরূপ নৃত্যশৈলী ও অভিনয়ের পারদর্শিতায় দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন। তেজ, লাবণ্য, একনিষ্ঠ প্রেম ও আত্মদানের মহিমায় মহীয়সী নারীরূপে ফুটে উঠেছেন মধুবনী। এ ছাড়াও রাবণ চরিত্রে নীহার ঘোষ, বিভীষণ বাসব গুপ্ত, মহামায়া গার্গী নিয়োগি, লক্ষ্মী অরিঘ্নি মিত্র, রাম প্রদ্যুম্ন মুখোপাধ্যায়, লক্ষ্মণ দীপ্তাংশু পাল ও হনুমান চরিত্রে তিমির রায় প্রশংসনীয়। সম্মেলক নৃত্যে ছিলেন অন্বেষা, অঙ্গিকা, গীতশ্রী, ইনা, অঙ্কিতা, কৃত্তিকা, দিয়াশা, রুশিতা, সর্বাণী প্রমুখ।

সংলাপ ছিল নৃত্যনাট্যের প্রধান আকর্ষণ। সংলাপে ছিলেন দেবেশ রায়চৌধুরী, অদিতি গুপ্ত, নীহার ঘোষ, অরিজিৎ মিত্র, দেবযানী ঘোষ, জীবন কুণ্ডু প্রমুখ। নৃত্য পরিচালনায় ভাস্বতী দত্ত, দেবযানী ঘোষ, বাসব গুপ্ত, মিতা পাল। অনুষ্ঠানটির পরিচালনায় ছিলেন অরিজিৎ মিত্র।

জয়শ্রী মুখোপাধ্যায়

মন টানে

দেবব্রত বিশ্বাসের ১০৬ তম জন্মদিন উপলক্ষে রবীন্দ্রসদনে সুন্দর অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল দেবব্রত বিশ্বাস অ্যাকাডেমি। অনুষ্ঠানের শুরু এই প্রবাদপ্রতিম শিল্পীর কণ্ঠে দুটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনিয়ে। যা মনকে স্পর্শ করে। পরে শিল্পী সম্পর্কে নানা তথ্য শোনালেন সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। সমবেত সঙ্গীত শোনাল ‘অমৃতায়ন’। পরিচালনায় বিভা সেনগুপ্ত। শিল্পীর সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রে নানা তথ্য ও গান শোনালেন আশিস সেনগুপ্ত ও শৈবাল মুখোপাধ্যায়। অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে গান শোনান বিভা সেনগুপ্ত, স্বপন গুপ্ত, হৈমন্তী শুক্ল, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, অনন্যব্রত দাস, জয়তী চক্রবর্তী ও দুর্নিবার সাহা। সবার গানেই ছিল আন্তরিকতার ছোঁয়া।

তবে দেবব্রত বিশ্বাসের সঙ্গে যেহেতু ভারতীয় গণনাট্য সংঘের গভীর যোগাযোগ ছিল, সে কারণে এ দিনের অনুষ্ঠানে গণসংগীত পরিবেশিত হলে ভাল হত। অনুষ্ঠানে মাউথ অর্গানে রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুর বাজিয়ে শোনান শুভ্রনীল সরকার। আবৃত্তি পাঠে খুবই আন্তরিক ছিলেন বিজয়লক্ষ্মী বর্মণ, রত্না মিত্র, কৃষ্ণপদ দাস, দেবাশিস কুমার। অনুষ্ঠান শেষ হয় ‘আকাশ ভরা সূর্যতারা’ সমবেত গানটির মাধ্যমে।

কাশীনাথ রায়

অনুষ্ঠান

• সম্প্রতি ‘দিঠি’র আয়োজনে ‘সঙ্গে ঋতুপর্ণ’ শীর্ষক একটি মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান নিবেদিত হল বাংলা আকাদেমিতে। প্রথমার্ধে গান ও কবিতার কোলাজ ‘তাসের ঘর’ পরিবেশন করলেন তমাল, মৌমি, দেবলীনা, শ্রীতমা প্রমুখ। রবীন্দ্রনাথ ও ঋতুপর্ণ রচিত গান এবং ঋতুপর্ণকে আধার করে রচিত কবিতা শোনা গেল এই অংশে। দ্বিতীয়ার্ধে ঋতুপর্ণ ঘোষের অগ্রন্থিত আত্মজীবনীমূলক সংকলনে সৃষ্ট ‘সৌরনীলের মুহূর্তলিপি’ পরিবেশন করলেন সৌম্য দে এবং ঐশ্বর্যা বাগ। মন ছুঁয়ে গেল আবহসঙ্গীত।

• রামকৃষ্ণ মিশন গোলপার্কে অনুষ্ঠিত হল ‘হৃদি ভেসে যায়...’। কবিতা, সেতার ও তবলার মেলবন্ধন। শিল্পীরা ছিলেন রাহুল চট্টোপাধ্যায়, জয় নন্দী ও সাম্য কার্ফা।

• শ্রাবণী সেন অ্যাকাডেমি জি ডি বিড়লায় আয়োজন করেছিল বিরহী মনের দহনবেলার গান। কথায় ও গানে বেজে ওঠে মনের বিরহ-সুর। শিল্পীরা ছিলেন রত্না মিত্র, শ্রাবণী সেন, জয় সরকার। শুরুর প্রাক কথনে ছিলেন ইন্দ্রাণী সেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Drama Painting আলোচনা
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE