পরিদর্শন: হাসনাবাদে খাদ্যমন্ত্রী
বিপত্তি পিছু ছাড়ছে না হাসনাবাদ ও পার হাসনাবাদের মধ্যে কাঠাখালি সেতু তৈরিতে।
বৃহস্পতিবার রাতে জলের তোড়ে ভেঙে পড়েছে সেতুর পিলার ধরে রাখার অস্থায়ী একটি স্টিলের কাঠামো। তলিয়ে গিয়েছে আস্ত একটি বার্জ। তাতে মূল সেতুর কোনও ক্ষতি হবে না বলে দাবি করেছে পূর্ত ও সড়ক দফতর। কিন্তু সেতুটি তৈরিতে যে ভাবে একের পর এক বাধা-বিঘ্ন দেখা দিচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ। ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার বিকেলে হাসনাবাদে আসেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
২০০৬ সালের জানুয়ারি মাসে বাম আমলে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এই সেতুর শিলান্যাস করেছিলেন। জনসভায় বলা হয়েছিল, তিন বছরের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হবে। গাড়িতে সরাসরি সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ কলকাতায় যেতে পারবেন বলে আশায় বুক বেঁধেছিলেন সকলে। দেশ-বিদেশের পর্যটকেরাও সুন্দরবনে সরাসরি গাড়িতে আসতে পারবেন এই সেতু ধরে। বসিরহাট বা বারাসত জেলা হাসপাতালে রোগীকে আনা সহজ হবে। গাড়িতে ফসল নিয়ে সহজে বাজারে পৌঁছতে পারবেন চাষিরা। সব মিলিয়ে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকার অর্থনীতিই বদলে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে এই সেতু তৈরি হলে। কিন্তু সেতুর কাজ শেষ হচ্ছে কই! সাড়ে ৭ মিটার চওড়া দু’লেনের সেতুটি লম্বায় হবে ৮৬৪ মিটার। নানা টালবাহানার শেষে ছ’বছর পরে নদীর মধ্যে ৩৫ মিটার উচুঁ দু’টি পিলার এবং দু’পাশে খানিকটা করে রাস্তা হয়। হঠাৎ একদিন এক মৎস্যজীবী নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে দেখেন, নদীর মধ্যে তৈরি দু’টি পিলারে বড় ফাটল ধরেছে। সেই খবর ছড়িয়ে পড়লে পূর্ত ও সড়ক দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা এসে দেখেন, পিলারের জোড়ার মুখে ৬ ইঞ্চির মতো ফাঁকা। মুম্বই, যাদবপুর এবং খড়গপুর-সহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে বিশেষজ্ঞ দলের আসা-যাওয়া শুরু হয়। শেষে ঠিক হয়, আগের তৈরি পিলার দু’টি ভেঙে নতুন করে করতে হবে।
২০১২ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৎকালীন পূর্ত ও সড়ক দফতরের মন্ত্রী সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার হাসনাবাদে এসে বলেছিলেন, এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ করে সেতুর উদ্বোধন করা হবে। ইতিমধ্যে পুরনো ঠিকাদার বদলে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। সেতু তৈরির খরচ ২৫ কোটি থেকে বেড়ে ৮১ কোটি ছাড়িয়েছে। এরই মধ্যে বর্তমানে সেতুর দু’পাশের অ্যাপ্রোচ রোড এবং তিনটি পিলারের বড় অংশের কাজ শেষ হয়েছে। এমন সময়ে ফের দুর্ঘটনার খবর শুনে সেতুর ভবিষ্যৎ নিয়ে ফের সিঁদুরে মেঘ দেখছেন স্থানীয় মানুষ। পূর্ত ও সড়ক দফতরের সহকারী বাস্তুকার রানা তারাং বলেন, ‘‘একটি অস্থায়ী কাঠামো এবং সেই সঙ্গে একটি বার্জ ডুবে গিয়েছে। এ জন্য মূল সেতুর কোনও রকম ক্ষতি হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy