প্রতীকী ছবি।
বোনের শ্বশুরবাড়িতে রাতে এসে ছিলেন দাদা। রবিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে তিনি শৌচাগারে গিয়েছিলেন। হঠাৎই শুনতে পান, শোয়ার ঘর থেকে বোন ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছেন। ছুটে এসে দাদা সুমন মণ্ডল দেখেন, দাউদাউ করে জ্বলছেন তাঁর বোন। অভিযোগ, স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি কাছে থাকলেও কেউ তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেননি। সুমনই তখন ঘর থেকে একটি কাঁথা এনে বোনের গায়ে জড়িয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তত ক্ষণে তাঁর শরীরের বেশির ভাগ অংশ পুড়ে গিয়েছে।
রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গা থানার শ্বেতপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, অগ্নিদগ্ধ ওই তরুণীর নাম সীমা মল্লিক (১৮)। তাঁকে প্রথমে বারাসত জেলা হাসপাতাল, পরে সেখান থেকে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সীমা সেখানেই ভর্তি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই তরুণীর শরীরের প্রায় ১০০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে সীমার বয়ান নথিভুক্ত করেছে দেগঙ্গা থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, সীমা তাঁর বয়ানে অভিযোগ করেছেন, টাকার জন্য স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার রাতেই সীমার শ্বশুর শিবু মল্লিক ও শাশুড়ি গীতা মল্লিককে গ্রেফতার করা হয়। স্বামী মৃত্যুঞ্জয় পলাতক। তাঁর খোঁজ চলছে। সুমনও ওই তিন জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে বোনকে খুনের চেষ্টার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, দু’বছর আগে শাসন থানার তেঘরিয়ার বাসিন্দা সীমার সঙ্গে বিয়ে হয় মৃত্যুঞ্জয়ের। সীমার বাপের বাড়ির দাবি, বিয়েতে শ্বশুরবাড়ির দাবি মতো তাঁরা নগদ ৩৫ হাজার টাকা, সোনার গয়না, আসবাব ও হাতঘড়ি দিয়েছিলেন যৌতুক হিসেবে। সুমন অভিযোগ করেছেন, ‘‘সব দেওয়ার পরেও শ্বশুরবাড়ির লোকজন আরও টাকার জন্য বোনকে চাপ দিত। টাকা দিতে না পারায় ওকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। ঠিক মতো খেতে পর্যন্ত দেওয়া হত না। আমরা বোনের স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’ পুলিশ জানিয়েছে, খুনের চেষ্টার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy