নিহত রেজাউল।
মদ খাইয়ে ন’বছরের বালককে খুনের অভিযোগে এক কিশোর ও তার বাবাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার রাতে মন্দিরবাজারের সেকেন্দরপুর গ্রাম থেকে তাদের ধরা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, বাবা-ছেলেকে ডায়মন্ড হারবার আদালতে তোলা হয়েছিল। বিচারক বাবাকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ছেলেকে জুভেনাইল থেকে হোমে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে খেলতে যাচ্ছি বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল রেজাউল জোতদার নামে ওই বালক। তারপর থেকেই তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। এরপরে সোমবার খালের ধার থেকে রেজাউলের দেহ মেলে। এরপরেই উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত ছেলেটির বা়ড়ি ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ এলে জনতা অভিযুক্ত কিশোর ও তার বাবাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
পুলিশকে কিশোরটি জানিয়েছে, পরিকল্পনা করেই সে এই খুন করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে তার ছোট ভাই বিদ্যুতের খুঁটিতে উঠে পাখি পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে সে সুস্থ হয়ে যায়। সে সময় তার সঙ্গে অভিযুক্ত কিশোরটিও ছিল। ওই কিশোরের ধারণা, তার ভাইকে মেরে ফেলার জন্যই ওর বন্ধুরা বিদ্যুতের খুঁটিতে উঠতে বলেছিল।
ভাঙচুর: ধৃতদের বাড়ি। ছবি: দিলীপ নস্কর
পুলিশ জানিয়েছে, ওই দিন অভিযুক্ত কিশোর বাড়ি থেকে খেলার জন্য ডেকে নিয়ে যায় রেজাউলকে। অভিযোগ, তারপর প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে একটি খাল পাড়ের ঝোপের ধারে নিয়ে গিয়ে তাকে মদ খাওয়ায় সে। রেজাউল জ্ঞান হারায়। এরপরেই ওই কিশোর তার গলায় গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে বলে অভিযোগ। পুলিশকে সে জানিয়েছে, দেহ পচে গেলে আর চেনা যাবে না। কিন্তু লুঙ্গি দেখে চেনা যেত। সে কারণে রেজাউলের লুঙ্গিটিও খুলে খালে ফেলে দিয়েছিল সে।
ছেলে বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে রেজাউলের পরিবার। রেজাউলের বাবা ইদ্রিস জানান, তাঁদের কয়েকটি বাড়ির পরেই ওই অভিযুক্ত কিশোরের বাড়ি। শনিবার থেকে ওই কিশোরকে বাড়িতে বেশি দেখা যাচ্ছিল না। প্রতিবেশীদেরও বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হয়। সোমবার বিকেলে ওই কিশোরকে জেরা শুরু করা হয়। প্রথমে স্বীকার না করলেও মারধর শুরু হতেই সে খুনের কথা স্বীকার করে। খালের ধারে নিয়ে গিয়ে পচাগলা দেহ দেখায়।
গ্রমাবাসীদের দাবি, কিশোরটির বাবা বিষয়টি শনিবার থেকেই জানত। কিন্তু চুপ করে থেকে সে ছেলেকে প্রশ্রয় দিয়েছে। রেজাউলের মা বলেন, ‘‘বিনা কারণে ও আমার ছেলেকে খুন করল। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’’ পুলিশ জানিয়েছে, গ্রামে পুলিশি টহল চলছে। নিহতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। দেহ ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy