Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

হুঁশ ফেরেনি, ফের ছাই বিলকান্দার তিন কারখানা

আগুন লাগার খবর পেয়ে কিছু ক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু।

দাউদাউ: জ্বলছে হোসিয়ারি কারখানা। বৃহস্পতিবার রাতে। নিজস্ব চিত্র

দাউদাউ: জ্বলছে হোসিয়ারি কারখানা। বৃহস্পতিবার রাতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৯ ০১:২৫
Share: Save:

মাত্র দু’মাসের ব্যবধান। ফের আগুনের ছোবলে ছাই হল তিনটি কারখানা। ঘটনাস্থল সেই নিউ ব্যারাকপুরের বিলকান্দার বোদাই শিল্পতালুক। দু’মাস আগে সেখানেই একটি চেয়ার কারখানায় অগ্নিকাণ্ড প্রাণ কেড়েছিল পাঁচ শ্রমিকের। বৃহস্পতিবার রাতের আগুনে প্রাণহানি না হলেও দু’মাসে সচেতনতা যে বিন্দুমাত্র বাড়েনি, তা আবার প্রমাণিত হল। নিউ ব্যারাকপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ একটি হোসিয়ারি কারখানায় প্রথম আগুন লাগে। ওই কারখানার পাশে বেশ কয়েকটি ডাই কারখানা রয়েছে। দু’টি ডাই কারখানায় মুহূর্তে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তার মধ্যে একটি কারখানা তিন দিন আগে চালু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কারখানাগুলিতে প্রচুর রাসায়নিক মজুত ছিল। ভিতর থেকে সিলিন্ডার জাতীয় কিছু ফাটার আওয়াজও পাওয়া গিয়েছে।

দ্রুত দমকলের কয়েকটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। তবে তাতে ওই তিনটি কারখানা রক্ষা পায়নি। সব মিলিয়ে আসে মোট ১৭টি ইঞ্জিন। জলের পাশাপাশি ফোম দিয়েও আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ঘণ্টা তিনেকের চেষ্টায় আগুন নেভে। কারখানার পাশাপাশি বেশ কিছু বসত বাড়ি ছিল। তবে দমকলের তৎপরতায় আগুন সেখানে ছড়াতে পারেনি।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

আগুন লাগার খবর পেয়ে কিছু ক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে আগুন নেভানোর তদারকি করেন। কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করার জন্য দমকলের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন মন্ত্রী। পরে সুজিতবাবু বলেন, ‘‘কারখানার আশপাশে অনেক বাড়ি ছিল। আগুন দ্রুত না নেভালে বড় ক্ষতি হতে পারত। আগের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারখানার মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এই ঘটনা খতিয়ে দেখেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানুষের জীবন নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলছে, তাদের ছাড়া হবে না।’’

মাস দুই আগে বিলকান্দার চেয়ার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পরে জানা গিয়েছিল, অত বড় কারখানাটিতে আগুন মোকাবিলার কোনও ব্যবস্থাই ছিল না। তখন প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, শিল্পতালুকের সব কারখানার অগ্নি-নির্বাপণ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু সেই কাজও হয়নি বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার যে কারখানাগুলি পুড়ে গিয়েছে, সেগুলির বিরুদ্ধে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ এনেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

নতুন কারখানাটিকে কীসের ভিত্তিতে লাইসেন্স দেওয়া হল? বিলকান্দা (১) পঞ্চায়েতের প্রধান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল বলেন, ‘‘সাধারণ বাসিন্দাদের আপত্তি না থাকলে আমরা ট্রেড লাইসেন্স দিই। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। দূষণ নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছিল, তার জন্য কারখানা মালিকদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করেছিলাম।’’ কিন্তু এত দিনেও কোনও কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল না কেন? ব্যারাকপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী সোমা ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা একটা দল তৈরি করেছিলাম। কিন্তু ভোটের কাজে তাদের তুলে নেওয়ায় সেই কাজ থমকে যায়। ভোট মিটলে ফের সেই কাজ শুরু হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Barrackpore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE