Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে প্রতারিত, ওসিকে ফোন কিশোরীর

বোকার মতো প্রেমে পড়েঠিল মেয়েটি। ভেবেছিল ফোনে কথা বলা ও-পারের মানুষটি হয়তো হয়ে উঠবে তার আশ্রয়। বলাই বাহুল্য ভেঙেছে সে বিশ্বাস। তবে প্রেমের বোকামি কাটিয়েও তার নিজের বুদ্ধির জয় হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া ও বাসন্তী শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৫ ০২:১৩
Share: Save:

বোকার মতো প্রেমে পড়েঠিল মেয়েটি। ভেবেছিল ফোনে কথা বলা ও-পারের মানুষটি হয়তো হয়ে উঠবে তার আশ্রয়। বলাই বাহুল্য ভেঙেছে সে বিশ্বাস। তবে প্রেমের বোকামি কাটিয়েও তার নিজের বুদ্ধির জয় হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত মাস তিনেক আগে। কিশোরীর ফোনে এসেছিল ‘মিসড কল’, তা থেকে বন্ধুত্ব, বন্ধুত্ব গড়িয়ে প্রেম। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির বছর সতেরোর কিশোরীটি বুধবার ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়েছিল নতুন সংসার করতে। পাত্র পবিত্র হলদিয়ার সুতাহাটা এলাকার বাসিন্দা বলেই তার জানা ছিল।

পবিত্র বুধবার সকালেই চলে এসেছিল। সারাদিন মেয়েটির সঙ্গে ঘোরাঘুরি করে। ডায়মন্ড হারবারে সিনেমা দেখে। তারপর হুগলি নদী পেরিয়ে সোজা পূর্ব মেদিনীপুরের সুতাহাটায়। যাবতীয় খরচ করে মেেয়েটিই। তারপর কথা ছিল বিয়ে করার। কিন্তু সিঁদুর কোথায়? সিঁদুর আনতেই যুবক তার বাড়ির পথ ধরে। কিশোরী বসে থাকে অপেক্ষায়। এক সময়ে পবিত্রর মোবাইলও ‘সুইচড অফ’ হয়ে যায়। মেয়েটি এ বার সরাসরি ফোন করে বাসন্তী থানার ওসি কৌশিক কুণ্ডুকে। বলে, ‘‘স্যার, আপনি তো রায়দিঘির ওসি, আমার খুব বিপদ। আমাকে বাঁচান।’’

বছর তিনেক আগে কৌশিকবাবু ছিলেন রায়দিঘির ওসি। সে সময় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে আলোচনা সভায় যোগ দিয়েছিলেন। স্কুল পড়ুয়া মেয়েদের নিয়ে সভায় নিজের ফোন নম্বর দিয়ে কৌশিকবাবু বলেছিলেন, বাবা-মা জোর করে বিয়ে দিতে চাইলে বা যে কোনও বিপদে পড়লেই যেন তাঁকে ফোন করে ছাত্রীরা। সভায় ছিল এই কিশোরীও। এত দিন ধরে সেই নম্বর নিজের কাছেই রেখে দিয়েছিলে। বিপদ বুঝে ফোনও করে। এতেই খুশি কৌশিকবাবু। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েটি ভুল করেছিল। কিন্তু বুদ্ধি খাটিয়ে পুলিশে ফোনও তো করেছে। এই সচেতনতাটাই দরকার। এ ভাবে বাড়ি ছাড়াটা ভুল।’’

বুধবার রাতে কিশোরীর ফোন পেয়ে বাসন্তী থানার ওসি ফোন করেন আলিপুর কন্ট্রোল রুমে। সেখান থেকে খবর পান সিআই মহিষাদল শুভঙ্কর দে। তিনিই এ দিন রাত প্রায় ১২টা নাগাদ সুতাহাটা থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে কুকড়াহাটি থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন। খবর যায় মেয়েটির বাবা-মার কাছে। বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের শিশু কল্যাণ সমিতির কাছে উপস্থিত করা হয় কিশোরীকে। আপাতত তাকে হোমে রেখে তদন্ত করার কথা বলা হয়েছে।

আপাতত পুলিশ খুঁজছে পবিত্রকে। তবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ওই মেয়েটির পরিবার কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police lover diamond harbour midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE