অরুণ বিশ্বাস
বন্ধুদের হেনস্থার প্রতিবাদ করায় এক যুবককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যদের বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রের খবর, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি অরুণ বিশ্বাস (২৮) নামে ওই যুবককে কয়েক দফায় মারধর করা হয়। এর পরে গত মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৪ তারিখ বারুইপুর থানার কল্যাণপুরের ত্রিপুরানগর এলাকায় অরুণের বাড়িতে তাঁর দুই বন্ধু ও দুই বান্ধবী আসেন। পেশায় ডাব বিক্রেতা অরুণ সে সময়ে বাড়িতে ছিলেন না। অভিযোগ, বন্ধুরা অরুণের বাড়িতে ঢোকার আগেই স্থানীয় ক্লাবের একদল যুবক এসে তাঁদের পথ আটকায়। তার পরে ওই চার জনকে ক্লাবঘরে ডেকে নিয়ে যায় তারা। অভিযোগ, সেখানে ওই চার জনের কাছ থেকে নগদ টাকা চায় ক্লাবের ছেলেরা। শুধু তা-ই নয়, অরুণের দুই বান্ধবীর সোনার দুল খুলে নেওয়ারও চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ।
পরে খবর পেয়ে অরুণ প্রতিবাদ করতে ওই ক্লাবে গেলে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এক বার নয়, অরুণকে বেশ কয়েক দফায় মারধর করা হয়। সন্ধ্যার পরে মদের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাঁকে খাওয়ানোর চেষ্টা হয় বলেও অভিযোগ। অরুণের ভাই সন্তু বিশ্বাস বলেন, ‘‘দাদাকে এক বার মারধর করার পরে ফের বাড়িতে এসে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। ক্লাবের ভিতরে আবার মারধর করে ওরা। তার পরে দাদা বাড়ি ফিরে আসে। কয়েক জন প্রতিবেশী ওই ঘটনার প্রতিবাদ করেছিলেন। তাঁদেরও শাসানি দেয় ক্লাবের ছেলেরা। সন্ধ্যার পরে দাদাকে ফের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় ওরা। তার পরে একটা ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে মারধর করে। পুলিশকে
বিষয়টি জানালে পরিবারের সবাইকে শেষ করে দেওয়া হবে বলে শাসানি দেয় ওরা।’’
বছর কয়েক আগে অরুণের স্ত্রী মারা গিয়েছেন। তাঁর ছোট দু’টি ছেলে রয়েছে। অরুণের মা লীলা বিশ্বাস বলেন, ‘‘ছেলেকে বাঁচাতে গিয়েছিলাম। আমাকেও ওরা মারধর করেছে।’’ অরুণের বাড়িতে তাঁর শাশুড়ি কল্পনা নস্করও থাকেন। ওই ক্লাবের ছেলেরা তাঁকেও মারধর করেছে বলে অভিযোগ। অরুণের ভাই সন্তুর কথায়, ‘‘রাতে দাদাকে ওরা ছেড়ে দেয়। কিন্তু দাদার অবস্থা তখন খুবই খারাপ। আমরা ওকে প্রথমে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় এম আর বাঙুরে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার রাতে দাদা মারা যায়। তার পরেই আমরা ওই ক্লাবের কয়েক জনের বিরুদ্ধে বুধবার রাতে বারুইপুর থানায় অভিযোগ করেছি।’’
তবে ঘটনার পর থেকেই ওই ক্লাবের সদস্যেরা পলাতক। ক্লাবঘরটিও বন্ধ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই ক্লাবে সন্ধ্যার পরে মদ-গাঁজার আসর বসে। এলাকার কেউ প্রতিবাদ করলেই তাঁদের মারধর করা হয় ও খুনের হুমকি দেওয়া হয়। অরুণের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এক পুলিশকর্তা জানান, তদন্ত চলছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy