Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলের নলকূপে আর্সেনিক, সমস্যা মেটেনি ৪ বছরেও 

বিপত্তির এখানেই শেষ নয়। পানীয় জলের অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল রান্নাও। ওই স্কুলের কিছুটা দূর দিয়ে মাটির নীচে দিয়ে গিয়েছে সরকারি পানীয় জলের পাইপ। বাধ্য হয়ে সেই পাইপ ফুটো করে, সেখান থেকে সংযোগ এনে স্কুলের মধ্যেই বসানো হয়েছে ছোট একটি জলের ট্যাঙ্ক।

বিপত্তি: আর্সেনিক মেলায় লাল রং করে দেওয়া হয়েছে দেগঙ্গার সেই স্কুলের নলকূপে (বাঁ দিকে)। সরকারি জলের পাইপ ফুটো করে আনা জলই আপাতত ভরসা পড়ুয়াদের (ডান দিকে)। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

বিপত্তি: আর্সেনিক মেলায় লাল রং করে দেওয়া হয়েছে দেগঙ্গার সেই স্কুলের নলকূপে (বাঁ দিকে)। সরকারি জলের পাইপ ফুটো করে আনা জলই আপাতত ভরসা পড়ুয়াদের (ডান দিকে)। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৯ ০৩:০৮
Share: Save:

পড়ুয়াদের জন্য স্কুলে পানীয় জলের ব্যবস্থা বলতে রয়েছে একটি নলকূপ। সেই নলকূপের জলে আবার বিপদসীমার চেয়ে অনেক বেশি মাত্রায় মিলেছে আর্সেনিক। সেই নলকূপে সরকারের তরফে লাল রঙ করে দেওয়া হয়েছে। ওই নলকূপের জল পান না করার জন্য ঝোলানো হয়েছে নোটিসও। ২০১৫ সালে এই রিপোর্ট মেলার পরে কেটে গিয়েছে চারটি বছর। বিশুদ্ধ পানীয় জলের কলের জন্য সরকারি দফতরে আবেদন করেও হয়নি সুরাহা। এই চিত্র দেগঙ্গার অম্বিকানগর প্রাথমিক স্কুলের।

বিপত্তির এখানেই শেষ নয়। পানীয় জলের অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল রান্নাও। ওই স্কুলের কিছুটা দূর দিয়ে মাটির নীচে দিয়ে গিয়েছে সরকারি পানীয় জলের পাইপ। বাধ্য হয়ে সেই পাইপ ফুটো করে, সেখান থেকে সংযোগ এনে স্কুলের মধ্যেই বসানো হয়েছে ছোট একটি জলের ট্যাঙ্ক। এখন সেই জলাধারেই কল লাগিয়ে পড়ুয়াদের পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই জলেই চলছে মিড-ডে মিল রান্না। কিন্তু তাতেও মেটেনি সমস্যা। সরকারি পানীয় জল সরবরাহ যখন বন্ধ থাকে, তখন পড়ুয়ারাও জল পায় না। বন্ধ হয়ে যায় রান্নাও। স্কুলে মিড-ডে মিল রান্নার কাজ করেন অর্চনা সরকার। তাঁর কথায়, ‘‘যে দিন জল থাকে না, সে দিন রান্না বন্ধ রাখতে হয়। ওই দূষিত জলে তো আর বাচ্চাদের রান্না করা যায় না।’’

স্বপ্না দাস নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘স্কুলে কখন পানীয় জল শেষ হয়ে যাবে, সেই আশঙ্কায় আমরা বোতলে জল ভরে তবেই বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাই। কিন্তু ভয়ে থাকি, সেই জলও ফুরিয়ে গেলে যদি বাচ্চারা দূষিত জল খেয়ে ফেলে?’’ আর্জিনাবিবি নামে আর এক অভিভাবক বলেন, ‘‘স্কুলে অনুরোধ করেছি, জল না পেলে কিছুতেই যেন ওই দূষিত জলে রান্না না হয়। ওই জলে এতটা আর্সেনিক রয়েছে যে খেলেই বিপদ।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বিষয়টি নিয়ে নাজেহাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুশান্তমোহন রায়। তিনি বলেন, ‘‘বিডিও, স্কুল পরিদর্শক সকলকেই বিষয়টি বারবার জানিয়েছি। সমাধান হয়নি।’’ তিনি জানান, স্কুল যাতে বন্ধ না থাকে, সে জন্য বিনা অনুমতিতে রাস্তার জলের পাইপলাইন ফুটো করে জলের ব্যবস্থাও করতে হয়েছে।বেড়াচাঁপা চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক হাবিবুল্লা মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই স্কুলের নলকূপের জল পরীক্ষা করে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক মেলায় প্রশাসনের তরফে লাল রঙ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এত দিন পরেও আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়নি। বাধ্য হয়েই রাস্তার পাইপ ফুটো করে পড়ুয়াদের জন্য পানীয় দলের ব্যবস্থা করতে হয়েছে।’’

কী বলছে প্রশাসন?

তিনি সদ্য কাজে যোগ দিয়েছেন বলে বিষয়টি জানা নেই মন্তব্য করে দেগঙ্গার বিডিও সুব্রত মল্লিক বলেন, ‘‘খুব বাজে ঘটনা। পড়ুয়াদের জন্য অবশ্যই আর্সেনিকমুক্ত জল থাকা উচিত। শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School Arsenic Tube Well
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE