Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কোথায় গেলেন সেই হকার? দমদম-বেলঘরিয়ার মাঝে রহস্য জমাট

চলন্ত ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ওই হকারকে ফেলে দেওয়া হয়ে থাকে, তা হলে কি ভোজবাজির মতো তাঁর দেহ উধাও হয়ে গেল?

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:০৭
Share: Save:

লোকাল ট্রেনের মহিলা কামরা থেকে সোমবার এক হকারকে ঠেলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এক তরুণী যাত্রীর বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগে বেলঘরিয়া স্টেশনে জিআরপি-র আউটপোস্ট ঘিরে প্রায় দেড় ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন যাত্রীদের একাংশ। কিন্তু সোমবার রাতের ওই ঘটনার পরে প্রায় ১২ ঘণ্টা কেটে গেলেও হকারের খোঁজ মিলল না! সোমবার গভীর রাত, এমনকী মঙ্গলবার সকালেও দমদম থেকে বেলঘরিয়া স্টেশন— প্রায় সাত কিমি রেললাইন বরাবর তল্লাশি চালিয়েও পুলিশ কোনও দেহের সন্ধান পায়নি।
আর তাতেই উঠে এসেছে প্রশ্ন। যদি চলন্ত ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ওই হকারকে ফেলে দেওয়া হয়ে থাকে, তা হলে কি ভোজবাজির মতো তাঁর দেহ উধাও হয়ে গেল? না কি, ওই যাত্রীর দাবিই ঠিক? তিনি দাবি করেছেন, দমদম থেকে ট্রেন ছাড়ার পরে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় ওই হকারই লাফিয়ে নেমে গিয়েছেন। তবে যা-ই হয়ে থাকুক, হকার-রহস্য উদ্ধারে কার্যত নাজেহাল রেলপুলিশ।
রেলপুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাত ৮টা ২০ মিনিটে শিয়ালদহ থেকে ছেড়েছিল কল্যাণী সীমান্ত লোকাল। অন্য কামরার মতো মহিলা কামরাতেও বেশ ভিড় ছিল। সেখানেই মেয়েদের প্রসাধনের জিনিস নিয়ে উঠেছিলেন এক হকার। ট্রেনটি বিধাননগর রোড স্টেশন ছাড়ার পরে ভিড়ে কোনও ভাবে তাঁর সঙ্গে ধাক্কা লাগে তরুণী যাত্রীর।
ধাক্কায় ওই যাত্রীর চশমা ভাঙতেই শুরু হয় বচসা। এরই মধ্যেই ট্রেনটি দমদম স্টেশনে ঢুকে ফের ছেড়ে দেয়। তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই হকারকে নামতে বললেও তিনি উল্টে তর্ক করছিলেন। তখন তাঁর হাত চেপে ধরে তরুণী বেলঘরিয়া জিআরপি-র হাতে তুলে দেওয়ার
ভয় দেখান।
তরুণীর দাবি, এর পরেই হাত ছাড়িয়ে প্ল্যাটফর্মের একেবারে শেষ প্রান্তে ট্রেন থেকে লাফিয়ে নামেন ওই হকার। আচমকাই তাঁকে লাফাতে দেখে ভিড়ে ঠাসা কামরায় থাকা কয়েক জন যাত্রী ‘কেন ওঁকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হল’ অভিযোগ তুলে চিৎকার জুড়ে দেন। এর পরে বেলঘরিয়া স্টেশনে ওই তরুণীকে নামিয়ে রেলপুলিশের কাছে নিয়ে যান কয়েক জন মহিলা যাত্রী। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন ওই ট্রেন থেকে নামা কিছু পুরুষ যাত্রীও।
পুলিশ জানায়, আউটপোস্টে যাওয়ার পরে ওই তরুণীকে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে বাঁচাতে ভিতরে বসান পুলিশকর্মীরা। কিন্তু যাত্রীরা দাবি তোলেন, তরুণীকে তাঁদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। তাঁর বক্তব্য মোবাইলে রেকর্ড করে রাখা হবে। একই সঙ্গে দাবি করা হয়, রাতেই হকারের দেহ উদ্ধার করতে হবে। তবে লি‌খিত অভিযোগ দেওয়ার কথা বলতেই আস্তে আস্তে পাতলা হয় ভিড়।
শিয়ালদহ ডিভিশনের রেলপুলিশ সুপার অশেষ বিশ্বাস বলেন, ‘‘রাতে খোঁজার পাশাপাশি দিনেও তল্লাশি চালানো হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোথাও কিছু মেলেনি।’’ তবে হকারের খোঁজ পেতে ওই ট্রেনের উপরেই নজর রাখছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE