Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

কাউন্সিলরের ‘কীর্তি’ জানাতে পোস্টার পড়ল কামারহাটিতে

কারা এটা করেছেন, তা জানা না গেলেও পোস্টারের একেবারে নীচে লেখা, যাঁরা করেছেন, তাঁরা ওই পুর প্রতিনিধির হিতাকাঙ্ক্ষী, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিকবৃন্দ।

বিভিন্ন দেওয়ালে আটকানো হয়েছে এই পোস্টার। সোমবার, কামারহাটিতে। নিজস্ব চিত্র।

বিভিন্ন দেওয়ালে আটকানো হয়েছে এই পোস্টার। সোমবার, কামারহাটিতে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৮ ১৭:০২
Share: Save:

দেওয়ালে সাঁটা নীল-সাদা পোস্টারে স্থানীয় পুর প্রতিনিধির তিন বছরের কাজের খতিয়ান লেখা। তবে কোনও বছরেই তাঁর সম্পর্কে কোনও ভাল কথা লেখা হয়নি। বরং বিভিন্ন অনৈতিক কাজের অভিযোগ তোলা হয়েছে।

সোমবার সকাল থেকে কামারহাটি পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকার দেওয়ালে এমন পোস্টার দেখে চমকে উঠেছেন পথচারী থেকে স্থানীয়েরা। কারা এটা করেছেন, তা জানা না গেলেও পোস্টারের একেবারে নীচে লেখা, যাঁরা করেছেন, তাঁরা ওই পুর প্রতিনিধির হিতাকাঙ্ক্ষী, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিকবৃন্দ।

যদিও পুরো বিষয়টির পিছনে এলাকারই কিছু সুবিধাভোগী মানুষ আছেন বলে অভিযোগ কামারহাটির ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের শাসক দলের ওই কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ গণের। এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক মদন মিত্রের ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত ওই কাউন্সিলর। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি মেট্রোর সম্প্রসারণের জন্য ২০২টি পরিবারের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছি। অনেকে সেখান থেকেও আয় করতে চেয়েছিলেন, আবার প্রোমোটারদের থেকেও মোটা টাকা নেওয়া শুরু করেছিলেন। সেগুলি বাধা দেওয়ায় যাঁদের স্বার্থে আঘাত লেগেছে, তাঁরাই এই কাজ করেছেন।’’ তবে সপ্তাহের প্রথম দিন সকালে এলাকায় এমন পোস্টার দেখে স্বাভাবিক ভাবেই বিস্মিত বাসিন্দারা। আর এলাকার রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, কাউন্সিলরের অতি ঘনিষ্ঠরাই এই কাজ করেছেন। সাধারণত যে কোনও পোস্টারে একটি জায়গায় ছাপাখানার নাম লেখা থাকে। কিন্তু এই পোস্টারে তেমনটি নেই।

এ দিন এলাকায় গিয়ে দে‌খা গেল, পোস্টার বিশ্বজিৎবাবুর নাম ছাপানো হয়নি। তবে পোস্টারে শিরোনাম হিসেবে লেখা হয়েছে, ‘ছিঃ ছিঃ দুর্নীতিগ্রস্ত পৌরপিতা, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কামারহাটি পুরসভা’। এর পরে পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বছরে তাঁর বিরুদ্ধে কী কী দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তা লেখা হয়েছে। যার মধ্যে মিউটেশন বাবদ উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের থেকে আলাদা অঙ্কের ঘুষ নেওয়া, সীমানা প্রাচীর, বাড়ি তৈরিতে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে টাকা নেওয়া, এলাকায় সিন্ডিকেট চালু করা, পুরনো বাড়ি ভাঙার বরাত নেওয়া-সহ বিভিন্ন অভিযোগ তোলা হয়েছে। আবার তিনি এলাকায় একেবারেই আসেন না এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়ে ওই কাউন্সিলর স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

মদনবাবু বলেন, ‘‘কামারহাটির সকলেই আমার ঘনিষ্ঠ। তবে বিশ্বজিৎ খুবই কাজের মানুষ। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই তিনি পুনর্বাসনের বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছিলেন বলে এ সব চক্রান্ত করা হয়েছে।’’ কামারহাটির চেয়ারম্যান গোপাল সাহার দাবি, আগে কখনও কেউ ওই কাউন্সিলরের নামে এমন কোনও অভিযোগ তাঁর কাছে করেনি।

পোস্টারের শেষে বলা হয়েছে, আগামী দু’বছর ওই কাউন্সিলর কী করবেন, তা একমাত্র ঈশ্বরই জানেন! এ দিন বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘আমি থানাতেও যাব না, পাল্টা কিছুই করব না। যাঁরা এটা করেছেন, তাঁদের উত্তর দেবেন ওয়ার্ডের নাগরিকেরাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Counciller Kamarhati
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE