খুব অবাক হয়েছিলাম সে দিন! এত করে বলার পরেও আয়া ডাক্তারকে খবরটা দিলেন না।
হাসপাতালে টাকা দিয়ে আয়া রেখেছিলাম। কিন্তু যখন কাকলির শ্বাসকষ্ট উঠল, তখন আয়াকে ডাকলাম। তিনি এলেন না। তিনি খাচ্ছিলেন। সরাসরি জানালেন, খাবার শেষ না হলে আসবেন না। তাঁকে বলি ডাক্তারকে অন্তত খবর দিন। তিনি তা-ও করেননি। শেষে মুখে রক্ত উঠে আমার স্ত্রী কাকলি (৩৮) মারা গেলেন। মৃত্যু শংসাপত্রে লেখা হল ‘ডেঙ্গি।’ নিমেষের মধ্যে আমার সংসারটা শেষ হয়ে গেল। খুব অবাক হয়েছিলাম। আয়া তো একটু পরেও খেতে পারতেন। একজন মানুষের জীবনের থেকেও তাঁর আয়েশ করে খাওয়াটা বড় হল?
ভাড়া বাড়িতে জীবন শুরু করেছিলাম। তখন আসবাব বলতে একখানা তক্তপোষ। অনেক কষ্টে লড়াই করে সংসারটাকে দাঁড় করিয়েছিলাম। কিছু দিনের মধ্যেই বাড়ি কেনার কথা ছিল। অন্যের গাড়ি চালাই। সাত বছরের ছেলে সম্রাট। মা ছেড়ে একদণ্ডও থাকতে পারে না। এখন আমি কী ভাবে সব সামলাব, বুঝতে পারছি না।
হঠাৎ জ্বরে পড়ে কাকলি। অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করি। রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু মেলে। কাজকর্ম সব বাদ দিয়ে হাসপাতালে পড়ে থাকতাম। স্ত্রীকে চোখের আড়াল করিনি। কিন্তু এত কিছুর পরেও ২৫ অক্টোবর দুপুরে কাকলি আমাকে ছেড়ে চলে গেল। সকাল থেকে সুস্থ বলে মনে হচ্ছিল। স্বাভাবিক ভাবে কথাও বলছিল। দুপুরে খেয়েওছিল। ভাবিনি, সেটাই ওর শেষ খাওয়া। আমার বিশ্বাস, আয়া ও ডাক্তার যদি আরও আন্তরিক হতেন তাহলে আমার স্ত্রীকে অকালে মরতে হত না। চিকিৎসায় গাফিলতিতেই স্ত্রীকে হারালাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy