Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

আলাঘরেই অস্ত্র কারখানা, ধৃত ২

পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতে কলকাতা পুলিশের অপরাধ দমন শাখা এবং মিনাখাঁ থানার পুলিশ ওই অস্ত্র কারখানার দুই কর্মী মহম্মদ সামসের আলম এবং মহম্মদ ফিরোজকে গ্রেফতার করেছে।

উদ্ধার: মিলেছে অস্ত্র। এই আলাঘরেই চলছিল তৈরি। ছবি: নির্মল বসু

উদ্ধার: মিলেছে অস্ত্র। এই আলাঘরেই চলছিল তৈরি। ছবি: নির্মল বসু

নিজস্ব প্রতিবেদন
মিনাখাঁ ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০৩
Share: Save:

মেছোভেড়ির আলাঘরের মধ্যে অস্ত্র তৈরির কারখানার হদিস মিলল বসিরহাটের মিনাখাঁ থানার ২ নম্বর চৈতলে। এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম এবং বোমার মশলা।

পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতে কলকাতা পুলিশের অপরাধ দমন শাখা এবং মিনাখাঁ থানার পুলিশ ওই অস্ত্র কারখানার দুই কর্মী মহম্মদ সামসের আলম এবং মহম্মদ ফিরোজকে গ্রেফতার করেছে। দু’জনেরই বাড়ি বিহারের মুঙ্গের। আলাঘর থেকে ২টি ওয়ানশটার, ৬টি নির্মীয়মাণ পিস্তল এবং প্রচুর পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম, অস্ত্র তৈরির মেশিন এবং বোমা তৈরির মশলা উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত বাকিদের খোঁজে রাজ্য জুড়ে তল্লাশি শুরু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি ঘটনার তদন্তে নেমে এন্টালি থানার পুলিশ সফিকুল গাজি ওরফে মির্জা নামে এক যুবককে ধরে। তাকে কলকাতার তারাতলা টাঁকশালের সামনে ঘোরাঘুরি করতে দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়েছিল। এরপরেই গ্রেফতার করা হয় তাকে। সফিকুলের বাড়ি হাবড়ায়। তাকে জেরার সময়ে পুলিশ মিনাখাঁয় মাছের ব্যবসায়ী অহিদ মোল্লার মেছোভেড়ির আলাঘরে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানার কথা জানতে পারে।

বুধবার সন্ধে ৭টা নাগাদ পুলিশের একটি দল গিয়ে আলাঘরটি বাইরে থেকে ঘিরে ফেলে। আলা ঘরের দরজায় তালা বাইরে থেকে ঝোলানো ছিল। ভিতরে অস্ত্র বানাচ্ছিল সামসের ও ফিরোজ। পুলিশ দরজা ভেঙে ঢুকে তাদের গ্রেফতার করে।

এ দিকে গ্রামের মধ্যে মেছোভেড়ির আড়ালে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি হচ্ছে, তা জানতে পেরে স্থানীয় বাসিন্দারা বিস্মিত। কয়েক জন জানালেন, মাস দু’য়েক ধরে আলাঘরে কিছু অপরিচিত মুখের আনাগোনা চলছিল। চৈতল পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য তৃণমূলের মুছা করিম মোল্লা বলেন, ‘‘সন্ধ্যা নাগাদ পুলিশের একটি দল আলাঘর ঘিরে অভিযান চালায়। তখনই আমরা অস্ত্র তৈরির কথা জানতে পারি। আগে এলাকায় শান্তি ছিল। ইদানীং দুষ্কৃতীদের আনাগোনা বেড়েছে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, অহিদের খোঁজ চলছে। কাদের নির্দেশে অস্ত্র তৈরি হত এবং কোথায় সে সব বিক্রি করা হত, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে।

লালবাজার সূত্রের খবর, মূলত মুঙ্গের থেকেই অস্ত্রের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মিনাখাঁর ওই কারখানায় এনে মজুত রাখা হত। মিনাখাঁ থেকে বন্দুক তৈরি করে লাগোয়া ইছামতী দিয়ে জলপথে বাংলাদেশে পাচার করা হত। মূলত এক নলা বন্দুকই মিনাখাঁর কারখানায় তৈরি করা হত বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে স্থানীয় পুলিশের নজর এড়িয়ে কী ভাবে দীর্ঘ দিন ধরে কারবার চলছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘মিনাখাঁয় অস্ত্র কারখানার হদিস পেয়ে বিএসএফ এবং স্থানীয় পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fishery Arms Factory Crime in Fishery
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE