Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

যানজটে থমকে পথ 

শনিবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ সংস্যার সূত্রপাত। অশোকনগর থানার গুমা ঘোষপাড়া এলাকার যশোর রোড ধরে বারাসতের দিক থেকে ট্রাকটি বনগাঁর দিকে যাচ্ছিল। একটি চাকা হঠাৎ খুলে যায়।

বিপত্তি: গাড়ি খারাপ হওয়ার ফল ভুগতে হল অনেককে। সুজিত দুয়ারি

বিপত্তি: গাড়ি খারাপ হওয়ার ফল ভুগতে হল অনেককে। সুজিত দুয়ারি

নিজস্ব সংবাদদাতা
অশোকনগর শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫৮
Share: Save:

চাকা খুলে গিয়ে একটি ট্রাক রাস্তার উপরে বিকল হয়ে পড়ে। ওই ট্রাকের পাশ দিয়ে যেতে গিয়ে আরও দু’টি ট্রাক আটকে যায়।

তার জেরে যশোর রোড দিয়ে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকল প্রায় ৬ ঘণ্টা। দিনভর দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হল সাধারণ মানুষকে।

শনিবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ সংস্যার সূত্রপাত। অশোকনগর থানার গুমা ঘোষপাড়া এলাকার যশোর রোড ধরে বারাসতের দিক থেকে ট্রাকটি বনগাঁর দিকে যাচ্ছিল। একটি চাকা হঠাৎ খুলে যায়। ট্রাকটি সড়কের মাঝখানে মুখ থুবড়ে পড়ে। যশোর রোড বা ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক এমনিতেই সরু। বিশেষ করে বারাসত থেকে বনগাঁ পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার অংশ বেশি সরু। পাশাপাশি বড় গাড়ি যাতায়াত করতে পারে না। চাকা খুলে যাওয়া ট্রাকটির পাশ দিয়ে দু’টি ট্রাক যেতে গিয়ে আটকে যায়। অশোকনগর থানার পুলিশ এসে ট্রাক সরিয়ে রাস্তায় যান চলাচলের ব্যবস্থা করতে করতে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা বেজে যায়। দু’দিকে সড়কে ততক্ষণে প্রায় দেড়-দু’কিলোমিটার গাড়ির লাইন। সকালে পথে বেরিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে পৌঁছতে পারেননি অনেকেই। অনেকে বাড়ির পথ ধরেছেন। বাস, অটো, ট্রেকার বা ছোট গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করেন অনেকে।

বনগাঁর এক মহিলা গাড়ি ভাড়া করে যাচ্ছিলেন কলকাতায় চিকিৎসকের কাছে। সকাল ৯টার মধ্যে তাঁর পৌঁছনোর কথা ছিল। বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। মহিলার কথায়, ‘‘বনগাঁ লোকালে ট্রেনে সকালের দিকে প্রচুর ভিড় থাকে। দাঁড়ানোর জায়গা পাওয়া যায় না। আমার মতো অসুস্থ রোগীদের পক্ষে ট্রেনে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই গাড়ি ভাড়া করেছিলাম। ডাক্তার দেখানো হল না। উল্টে গাড়ি ভাড়াটাও জলে গেল।’’

বনগাঁ-হাবড়ার মানুষের সড়ক পথে বারাসত বা কলকাতায় যেতে হলে যশোর রোডই একমাত্র ভরসা। কোনও কারণে যান চলাচল বন্ধ থাকলে মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকে না। বনগাঁ হাবড়া থেকে অ্যাম্বুল্যান্স করে কলকাতায় রোগী নিয়ে যেতেও এ দিন সমস্যায় পড়েছেন চালকেরা। পেট্রাপোল থেকে সড়ক পথে বহু বাংলাদেশি কলকাতায় যান। তাঁরাও এ দিন দীর্ঘক্ষণ আটকে ছিলেন। এ দিনের ঘটনার পরে সাধারণ মানুষ ও যান চালকেরা ফের সড়ক সম্প্রসারণের দাবি জানান। বহু চালক জানান, যশোর রোড সম্প্রসারণ করে চওড়া না করলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। যত দিন না তা সম্ভব হচ্ছে, দুর্ভোগ মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।

যানজট সমস্যা মেটাতে কেন্দ্র ও রাজ্য মিলে বারাসত থেকে বনগাঁ পর্যন্ত পাঁচটি রেলসেতু তৈরির পরিকল্পনা করে কয়েক বছর আগে। বারাসতে একটি, অশোকনগরে একটি, হাবড়ায় দু’টি এবং বনগাঁয় একটি রেলসেতু হওয়ার কথা। জমি শনাক্তকরণ, মাটি পরীক্ষার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিছু দোকানঘর, বাড়ি-অফিস সরানোর কথা ছিল। ওই কাজের জন্য বনগাঁ শহরে গাছ কাটার কাজ শুরু হয়। কিন্তু এত পুরনো গাছের সারি কাটা হলে পরিবেশের উপরে প্রভাব পড়বে বলে নানা মহলে আপত্তি ওঠে। গাছ কাটায় স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট। বিষয়টি গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক নির্বাহী বাস্তুকার বলেন, ‘‘রেলসেতু তৈরি হওয়া খুব জরুরি। কিন্তু আপাতত আমাদের কিছু করণীয় নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ashoknagar Truck
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE