প্রতীকী ছবি।
ঝিনুকে করে সাত মাসের মেয়েকে দুধ খাওয়ানোর সময়ে শ্বাসনালীতে দুধ আটকে গিয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও ওই দুধ আর বের করা যায়নি। মঙ্গলবার সকালে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে মারা যায় মুন দে।
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, কামারথুবা এলাকার মুনের ঘটনাটি ব্যতিক্রমী নয়। হাসপাতালের সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, ‘‘শিশুদের দুধ খাওয়ানোর সময়ে সেই দুধ শ্বাসনালীতে আটকে মৃত্যু হওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। কখনও কখনও শিশুরা বাড়িতেই মারা যাচ্ছে। কখনও হাসপাতালে আনলেও বাঁচানো যাচ্ছে না।’’ হাবড়া এলাকাতেও এ ভাবে কয়েকটি শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। কিছু দিন আগে ন’মাসের একটি শিশুও এ ভাবে মারা গিয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জেলায় অন্যান্য হাসপাতাল থেকেও এ ধরনের খবর মিলেছে।
শিশু চিকিৎসকদের অনেকে মনে করছেন, দুধ খাওয়ানোর সময়ে মায়েরা যদি কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখেন, তা হলে এই বিপদ এড়ানো যেতে পারে।
কী ভাবে শিশুদের দুধ খাওয়ানো উচিত?
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বুকের দুধ বা বোতলে দুধ খাওয়ানোর সময়ে বিশেষ মনোযোগী হতে হবে মাকে। শিশুদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকা উচিত। সে সময়ে মোবাইলে কথা বলা বা অন্য কোনও কাজে ব্যস্ত থাকা উচিত নয়। দুধ খাওয়ানোর সময়ে হাতের কাজও করা উচিত নয়। কারণ, মায়েরা অন্য কাজে যুক্ত থাকলে শিশুদের মনোযোগও সে দিকে চলে যায়। এমন সময়ে দুধ শ্বাসনালীতে আটকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শ্বাসকষ্টে ভুগছে এমন শিশুকে কখনওই ঝিনুকে বা চামচে করে দুধ খাওয়ানো উচিত নয়। তাদের ড্রপারে দুধ খাওয়াতে হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে মঙ্গলবার মৃত্যু হওয়া শিশুটি আগে থেকে শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। তাকে ঝিনুকে করে দুধ খাওয়ানোর সময়ে গলায় দুধ আটকে গিয়েছিল। হাসপাতালে আনার পরে চিকিৎসা শুরু হলেও শেষমেশ বাঁচানো যায়নি শিশুটিকে। এ নিয়ে আফসোস আছে চিকিৎসকদেরও।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, দুধ শ্বাসনালী বা গলায় আটকে গিয়েছে বুঝতে পারলেই মায়েদের উচিত, দ্রুত শিশুটিকে কিছুটা পাশ ফিরিয়ে, মাথা নিচু করিয়ে, মুখ ফাঁকা রেখে পিঠে চাপ দেওয়া। তা হলে দুধ বেরিয়ে যায়।
শঙ্করলাল বলেন, ‘‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, শ্বাসনালীতে দুধ আটকে গেলে মায়েরা শিশুকে কোলে তুলে নিয়ে পিঠে চাপড় মারেন। এটা একেবারেই উচিত নয়। এর ফলে দুধ শ্বাসনালীর আরও ভিতরে চলে যায়।’’
হাসপাতালে আয়া, নার্স ও চিকিৎসকেরা মায়েদের এ নিয়ে বোঝাচ্ছেন বলে জানালেন সুপার। তবে একজন বিশেষজ্ঞকে এই কাজে পাওয়া গেলে আরও ভাল হত বলে মনে করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy