Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ঘরছুট শিয়ালবাচ্চা গেল বন দফতরের হাতে

ধূসর রঙের ছোট শিয়ালের বাচ্চাটি মনিবের কোলে বসে পিট পিট করে তাকিয়ে ছটফট করছিল। ‘দুষ্টুমি করতে নেই’ বলতেই মনিবের মুখের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে চুপ হয়ে গেল অনাথ বাচ্চাটি। প্রায় দু’মাস ধরে বাচ্চাটিকে লালন পালন করে মঙ্গলবার বিকেলে তুলে দেওয়া হল বারুইপুর বন দফতরের হাতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জয়নগর শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৩১
Share: Save:

ধূসর রঙের ছোট শিয়ালের বাচ্চাটি মনিবের কোলে বসে পিট পিট করে তাকিয়ে ছটফট করছিল। ‘দুষ্টুমি করতে নেই’ বলতেই মনিবের মুখের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে চুপ হয়ে গেল অনাথ বাচ্চাটি। প্রায় দু’মাস ধরে বাচ্চাটিকে লালন পালন করে মঙ্গলবার বিকেলে তুলে দেওয়া হল বারুইপুর বন দফতরের হাতে।

কুকুর, বিড়াল, পাখি, খরগোশ পোষে অনেকে। ওই প্রাণীদের চলা ফেরা বা নিত্য খাবার অনেকের জানা। কিন্তু শিয়াল পোষার অভিজ্ঞতা অন্য রকম। মাস দু’য়েক আগে জয়নগরের পুনপোয়া গ্রামে একটি পুকুর পাড়ে অসুস্থ অবস্থায় পড়েছিল ওই শিয়াল বাচ্চাটি। গ্রামের এক কিশোর তাকে তুলে এনে গ্রামেরই একটি মন্দিরের দালানে রেখে দিয়েছিল। ভেবেছিল, শিয়ালের মা এসে নিয়ে যাবে বাচ্চাকে। কিন্তু দু’দিন কেটে গেলেও মায়ের আর দেখা মেলেনি। তাই ওই বাচ্চাটি পড়ে থেকে যাতে মারা না যায় সে কথা ভেবেই গ্রামের বাসিন্দা অরবিন্দ সর্দার বাচ্চাটিকে তুলে বাড়িতে নিয়ে যায়।

কয়েক দিন পরে সেটাকে তুলে দেন ওই এলাকার আর এক পশুপ্রেমিক দক্ষিণ বারাসতের বেলিয়াডাঙা গ্রামের মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। মিতালিদেবীর বাড়িতে রয়েছে চারটি কুকুর ও বেশ কয়েকটি বিড়াল আছে। তাদের প্রতিবেশী হয়ে থেকে যায় শিয়ালের বাচ্চাটি।

কিন্তু বিস্কুট, মুড়ি, রুটি সবেতেই অরুচি শিয়াল ছানার। ডিম সিদ্ধ, মাছ, মাংস, ভাত দিলে দিব্যি খায়। প্রথম কয়েক দিন বোতলে করে দুধও খাওয়ানো হয়েছিল তাকে।

কিন্তু বাচ্চাটি বড় হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তার মধ্যে বন্যস্বভাব চোখে পড়ছিল মিতালিদেবীর। ঠিক যেন পোষ মেনে উঠছিল না, অভিজ্ঞতা তাঁর। শেষমেশ, বন দফতরের হাতেই তুলে দেওয়া হয়েছে তাকে। বারুইপুর বন দফতরের রেঞ্জার অশোক নস্কর বলেন, ‘‘ওই মেয়ে শিয়ালের বাচ্চাটিকে স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরে নরেন্দ্রপুরে বন দফতরের জঙ্গলে ছাড়া হবে।’’

অরবিন্দবাবু বলেন, ‘‘মানুষ ফাঁদ পেতে শিয়াল ধরে মেরে ফেলে। নগরায়নের ধাক্কায় ওরা আরও প্রান্তিক হয়ে গিয়েছে। এখন আর ভোর রাতে শিয়ালের হুক্কা হুয়া ডাক শোনা যায় না। প্রায় বিলুপ্তির পথে এই প্রাণী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

baby fox run away forest department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE