তল্লাশি: এটিএম ঘুরে দেখছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে খোওয়া যাচ্ছে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকা। বসিরহাটে প্রায়ই ঘটছে এমন ঘটনা। গত কয়েকটা দিনে সাধারণ মানুষের একটাই চিন্তা, নিরাপদে রয়েছে তো ব্যাঙ্কে রাখা তাঁদের টাকা! এটিএম পরিষেবা নিয়ে উঠছেও নানা অভিযোগ। বিপদ এড়াতে রক্ষী আছে এমন এটিএম-ই ব্যবহার করতে বলছেন পুলিশ ও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি গ্রাহকদের সচেতনতা বাড়ানোর কথাও বলছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।
শনিবার এটিএম গুলির বিষয়ে খোঁজখবর করতে বেরিয়েছিল বসিরহাট থানার পুলিশ। তারা লক্ষ করে, বসিরহাট থানা এলাকার বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ৩৩টি এটিএমের মধ্যে মাত্র ২টিতে রক্ষী আছেন! বাকি সব অরক্ষিত। কোনও কোনও এটিএমের দরজা পর্যন্ত নেই। এ দিকে লালবাজারের পুলিশ কর্তা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বলছেন, এটিএম কোনওমতেই রক্ষীবিহীন থাকা চলবে না।
ফাঁকা এটিএম-এ দুষ্কৃতীরা গোপনে কি-প্যাড, ক্যামেরা এবং স্কিমার বসিয়ে রেখে পিন নম্বর জেনে নিচ্ছে। পরে জাল কার্ডের মাধ্যমে রাতারাতি অ্যাকাউন্ট শূন্য করে দিচ্ছে। এত কিছু বিপদ ওত পেতে আছে তা সত্ত্বেও বসিরহাটের প্রায় নিরানব্বই শতাংশ এটিএমই অরক্ষিত থাকে কী ভাবে? যে এজেন্সির দায়িত্বে এটিএম বসানো হচ্ছে বিষয়টা তাদের ঘাড়ে চাপিয়েই দায় সারছে বেশ কিছু ব্যাঙ্ক। স্টেট ব্যাঙ্কের বসিরহাট শাখার ম্যানেজার রাজেশ কুমার বলেন, ‘‘বসিরহাট শহরে আমাদের একটি মাত্র এটিএম আছে ব্যাঙ্কের সামনে ইটিন্ডা রাস্তার পাশে। সেখানে রাত-দিন রক্ষী থাকেন। বাকি এটিএমগুলির দায়িত্ব অবশ্য এজেন্সির। তা ছাড়া এসব ক্ষেত্রে গ্রাহকদের সচেতনতাও জরুরি।’’
সচেতনতা বাড়াতে এটিএম ব্যবহার সম্পর্কে নির্দেশিকার কথা উল্লেখ করছেন কেউ কেউ। কিন্তু সমস্যা সেখানেও। টহলরত এক পুলিশ অফিসার সে দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘‘এটিএমে এমন বহু মানুষ আসেন যাঁরা ইংরেজি-হিন্দি জানেন না। তাঁদের জন্য কি বাংলায় কিছু লেখা থাকে?’’ অধিকাংশ এটিএমেই তা থাকে না। বিষয়টি যে ঠিক হচ্ছে না, তা স্বীকার করে নিয়েছেন অধিকাংশ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষই। তাঁরা আশ্বাস দিচ্ছেন যে, এ বার থেকে নির্দেশিকা বাংলাতেও লেখা থাকবে।
বসিরহাট থানা এলাকায় ১০টি ব্যাঙ্কের ২৮টি শাখা। তাদের ৩৩টি এটিএম। এর মধ্যে মাত্র ২টিতে রক্ষী আছেন। রক্ষীবিহীন এটিএম এড়ানো-সহ হ্যাকারদের ব্যাপারে সচেতন হওয়া নিয়ে আজ, সোমবার বসিরহাট থানা এলাকার সব ব্যাঙ্কের শাখার ম্যানেজারদের নিয়ে এসডিপিও আশিস মৌর্য এবং আইসি প্রেমাশিস চট্টরাজের উপস্থিতিতে এক বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।
এক ব্যাঙ্ক আধিকারিকের কথায়, প্রতিটি এটিএমে সব সময় রক্ষী থাকতে হবে। টাকা খোওয়া গেলে ৩ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে তা জানাতে হবে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সেই টাকা ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে। কিন্তু কোনও ভাবে যদি দেখা যায়, গ্রাহকের নিজের ভুলেই বিপদ ঘটেছে, তা হলে টাকা ফেরতের বিষয়ে ব্যাঙ্কের কোনও দায় থাকবে না। ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে কখনোই গ্রাহকদের ফোন করে পিন নম্বর জানতে চাওয়া হয় না। এসএমএস বা ফোনে কেউ পিন নম্বর জানতে চাইলে তা যেন কোনও ভাবেই তাদের না জানানো হয়, এই মর্মে সচেতনতার প্রসার চাইছে ব্যাঙ্ক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy