Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সেজে উঠছে বারাসত জংশন

আর তাতেই আপাদমস্তক বদলে যেতে পারে স্টেশনের চেহারা। কারণ, ফুট ওভারব্রিজ থেকে যাত্রী-ছাউনি কিংবা প্ল্যাটফর্মকে উঁচু করা—সংস্কারের তালিকাভুক্ত হয়েছে সব কিছুই।

জোরকদমে কাজ চলছে। শুক্রবার, বারাসত স্টেশনে। ছবি: সুদীপ ঘোষ

জোরকদমে কাজ চলছে। শুক্রবার, বারাসত স্টেশনে। ছবি: সুদীপ ঘোষ

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:২৭
Share: Save:

অবশেষে বারাসত জংশন স্টেশনের সংস্কারের কাজ শুরু করল রেল মন্ত্রক। আর তাতেই আপাদমস্তক বদলে যেতে পারে স্টেশনের চেহারা। কারণ, ফুট ওভারব্রিজ থেকে যাত্রী-ছাউনি কিংবা প্ল্যাটফর্মকে উঁচু করা—সংস্কারের তালিকাভুক্ত হয়েছে সব কিছুই।বারাসত স্টেশন থেকে বনগাঁ এবং হাসনাবাদ শাখার ট্রেন দু’টি পৃথক লাইনে ভাগ হয়ে যায়। আবার, উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদরও বারাসত। সেখানে জেলাশাসকের দফতর থেকে জেলা আদালত— সবই রয়েছে। ফলে যাত্রীর সংখ্যাও অনেক বেশি। আর এ সব মিলিয়ে স্বাভাবিক ভাবে উত্তর শহরতলির গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন বারাসত। কিন্তু তার সংস্কারে তেমন ভাবে রেল উদ্যোগী হয়নি বলেই অভিযোগ যাত্রীদের। পাঁচটি প্ল্যাটফর্ম বিশিষ্ট বারাসত স্টেশনে শেডের সংখ্যা নিয়েও দীর্ঘদিনের ক্ষোভ রয়েছে তাঁদের। কারণ, পাঁচটি প্ল্যাটফর্মেই মাত্র একটি করে শেড। যা যাত্রী-সংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল। বাধ্য হয়ে রোদ-ঝড়-বৃষ্টিতে যাত্রীদের খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে সহ্য করতে হয়। অথবা, স্টেশনের বিভিন্ন প্রান্তে গজিয়ে ওঠা ছোটখাটো দোকানকে ভরসা করে মাথা বাঁচাতে হয়।

পাশাপাশি, লাইনের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার কারণে ট্রেন আর প্ল্যাটফর্মের মধ্যে অন্য স্টেশনের মতোই ফাঁক বাড়ছিল বারাসত স্টেশনে। ফলে ট্রেনে ওঠানামার সময়ে সমস্যায় পড়ছিলেন যাত্রীদের একটা বড় অংশ। এমনকি স্টেশনে অপেক্ষারত যাত্রীদের বসার জায়গা নিয়েও অভিযোগ ছিল বিস্তর। নিত্যযাত্রী শ্যামল মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এত বড় স্টেশন, অথচ বসার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। সে ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া উপায় নেই।’’

এ বার সেই সব সমস্যা থেকে হয়তো পাকাপাকি মুক্তি পেতে পারেন বারাসত স্টেশনের যাত্রীরা। কারণ, প্ল্যাটফর্মের সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। সব ক’টি প্ল্যাটফর্মের মধ্যে কয়েক ইঞ্চি ঢালাই করে তা সিমেন্ট দিয়ে মসৃণ করার সঙ্গে সঙ্গেই ধারে টাইল্‌স বসানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এমনকি যাত্রীদের বসার জায়গার জন্য ইট গাঁথার কাজও চলছে।

বারাসত স্টেশনে একটি ফুট ওভারব্রিজের পরিকল্পনাও করেছে রেল মন্ত্রক। পাশাপাশি ওই স্টেশনের ব্যস্ততম প্ল্যাটফর্ম তিন নম্বর। সঙ্গে রয়েছে দু’নম্বরও। সেখানে ১৬০ মিটারের ছাউনি হতে চলেছে। এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে দীর্ঘ না হলেও নতুন শেডের নীচে কয়েক মাস পরে দাঁড়াতে পারবেন যাত্রীরা। আবার, চার-পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে থাকা শেডকে আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রেল মন্ত্রক।

ভুক্তভোগী এক যাত্রী মনোজ দাসের বক্তব্য, ‘‘বারাসত স্টেশনে শেড না থাকায় রোদ-ঝড়-বৃষ্টিতে সমস্যায় পড়তে হয়। শেড হলে সুবিধা তো হবেই।’’ সংস্কারের প্রয়োজনে স্টেশনে থাকা গুমটি দোকানগুলি সরানো হয়েছে। তবে দুই এবং তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের সংস্কারের খানিকটা কাজ শেষ হওয়ায় সেখানে ফের বসতে শুরু করেছে ছোট ছোট গুমটি দোকান। যাত্রীদের বক্তব্য, ‘‘এই গুমটির সংখ্যা কমানো না গেলে আমাদের হাঁটাচলার জায়গা সরু হয়ে যায়। এই বিষয়টি রেলের দেখা উচিত।’’ শিয়ালদহ ডিভিশন সূত্রের খবর, আগামী দু’মাসের মধ্যে বারাসত স্টেশনের সংস্কারের কাজ শেষ হতে পারে। রেলের এক কর্তার কথায়, ‘‘যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Railway Ministry Rail Barasat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE