জয়ী: বাড়ির সামনে পুতুল দাস। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
মাটির দেওয়াল, ভাঙা দরমার বেড়া। ছোট্ট ঘরে বিছানায় শুয়ে তরুণী। শরীরের প্রায় পঞ্চাশ শতাংশই প্রতিবন্ধকতায় আক্রান্ত। সেই অবস্থায় পড়াশোনা করে স্নাতক হয়েছেন। বাবা ভ্যানচালক। এক ভাই মানসিক ভারসাম্যহীন। বাবা-মা ও ভাইকে দেখভালের জন্য টিউশন করে সংসার সামলান পুতুল দাস।
এমনই এক মেয়েকে বিজেপি এ বার প্রার্থী করেছিল দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা ১ পঞ্চায়েতের ১৪৩ নম্বরের বুথে। দাপুটে তৃণমূল নেতাকে হারিয়ে সেই মেয়েই যখন জয় পেলেন, তখন দলীয় পতাকা আর আবির নিয়ে বাড়িতে হাজির সুমনা ঘোষ, চন্দনা দাস, রীতা মুন্ডার মতো মহিলারা। কিন্তু জয়ী প্রার্থী বলেন, ‘‘আবির-পটকা নয়। ভোটে হারজিত থাকেই। এই উল্লাস বিরোধীদের কষ্ট দেবে। মানুষের জন্য কাজ করেই এই জয়ের আনন্দ ভাগ করে নিতে হবে।’’
বছর তিরিশের পুতুল ভোটে জিতেছেন ২৫৬ ভোটের ব্যবধানে। জেলা বিজেপি নেতা শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘ছাপ্পা, বুথ দখল যেখানে সাধারণ মানুষ রুখে দিয়েছেন, সেখানেই মানুষ শাসকদলের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন।’’ অন্য দিকে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘বিরোধীদের কিছু আসন পাওয়া প্রমাণ করে, নিরপেক্ষ ভোটই হয়েছে। মানুষ কিন্তু উন্নয়নেরই পক্ষে।’’ চার বোন ও এক ভাইয়ের সংসারে পুতুলই বড়। তিন বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সংসারে অভাব ছাড়াও পুতুলের নিজের সমস্যা কম নয়। পিটে মস্ত বড় কুঁজ। দাঁড়াতে পারেন, কিন্তু চলতে গেলেই নুয়ে পড়ে শরীর।
এই শরীরের অবস্থা নিয়ে ভটোর শক্ত লড়াইয়ে নামার সাহস পেলেন কোথা থেকে? পুতুল বলেন, ‘‘ভোটের দিনও রাত ৮টা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে ছিলাম। মানুষ যে আমাকে এ ভাবে আশীর্বাদ করবেন, ভাবতে পারিনি। যাঁরা বিশ্বাস করে ভোট দিয়েছেন এবং যাঁরা দেননি— সকলের জন্যই কাজ করতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy