খুড়শাশুড়ি পুষ্পিতা এবং বৌমা মৌমিতা। নিজস্ব চিত্র
এই ক’দিন আগেও লাউ-চিংড়ির বাটি পৌঁছে যেত ও বাড়িতে। ও বাড়ি থেকে খালি বাটি ফিরত বড়ি চচ্চড়ি ভর্তি হয়ে। পড়ন্ত রোদে গা এলিয়ে চুল বাঁধার সময়ে দু’জনেরই মনে পড়ত বাপের বাড়ির কথা। এখন সে দিন গিয়েছে। এ ওর বাড়ির সামনের পথটুকু মাথা নিচু করে দ্রুত পায়ে পেরোতে পারলেই বাঁচেন। যদি বা রাস্তায় মুখোমুখি পড়ে গেলেন, কে আগে ফুটপাত বদলাবেন, তা নিয়েও চলে রেষারেষি। ভোটের আবর্তে সম্পর্কের এই হাল হয়েছে বৌমা আর তাঁর খুড়শাশুড়ির।
বাদুড়িয়ার জগন্নাথপুর পঞ্চায়েতের উত্তর দিয়াড়া গ্রামে থাকেন মৌমিতা মণ্ডল। পনেরো বছর ধরে পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য। এই নিয়ে চতুর্থবার মনোনয়ন জমা দিলেন। একই আসনে তৃণমূল দাঁড় করিয়ে দিয়েছে তাঁর খুড়শাশুড়ি পুষ্পিতা মণ্ডলকে। প্রথমবার ভোটে দাঁড়ালেন। কোথায় আনন্দ-উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটবেন, তা নয়। মনটা বেশির ভাগ সময় বিষিয়ে থাকছে বৌমার কথা ভেবেই। বললেন, ‘‘গ্রামে কোনও উন্নয়ন হয়নি। কেন যে ফের মনোনয়ন জমা দিল বৌমা, তা-ও আবার আমারই বিরুদ্ধে!’’ আর বৌমা বলছেন, ‘‘পনেরো বছর ধরে মানুষের কাজ করছি। অনেক কাজ করেছি। আমাকে হারাতে উনি যে কেন দাঁড়ালেন!’’ মাঝখান থেকে পাশাপাশি বাড়ির দুই পড়শি আত্মীয়ের ব্যক্তিগত সম্পর্কটা যে বিষিয়ে গিয়েছে, তা বেশ টের পাচ্ছেন দু’জনেই। ভোটের পরে কি কাটবে তিক্ততা? রাজনীতির উত্তাপ সম্পর্কের উষ্ণতার মাঝে এসে পড়ুক— চাইছেন না কেউ-ই। পুষ্পিতা বলেন, ‘‘বৌমা মিশতে চাইলে আমার তো আপত্তি নেই।’’ আর মৌমিতার কথায়, ‘‘জানি না কী হবে, তবে সম্পর্কটা ফের স্বাভাবিক হলেই ভাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy