দিলীপ জাটুয়া।
চাকরির টোপ দিয়ে টাকা তোলার অভিযোগে এক বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে মন্দিরবাজারের রঘুনাথপুর গ্রাম থেকে দিলীপ জাটুয়া নামে ওই নেতাকে ধরা হয়েছে। বুধবার ডায়মন্ড হারবার আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ৮ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
এই ঘটনায় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। বুধবার সকাল থেকে মন্দিরবাজার থানার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করে তারা। আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন দলের ব্লক সভাপতি অশোক পুরকাইত ও ধৃত নেতার স্ত্রী তথা স্থানীয় কৃষ্ণপুর পঞ্চায়েতের প্রধান রীতা জাতুয়া। তাঁদের দাবি, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির যোগ দেওয়াতেই চক্রান্ত করে ফাঁসানো হল দিলীপকে। তাঁদের আরও অভিযোগ, ওয়ারেন্ট ছাড়াই রাতবিরেতে পুলিশ বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়েছে।
ডায়মন্ড হারবারের বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী দেবাংশু পন্ডার দাবি, ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে এ ভাবে গ্রেফতার করা যায় না। পুলিশ বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুরও চালিয়েছে। রাজনৈতিক ভাবে ফাঁসানো হয়েছে ওঁকে।’’ দেবাংশু জানান, গ্রেফতারের প্রতিবাদে আজ, বৃহস্পতিবার বারো ঘণ্টার মন্দিরবাজার বন্ধের ডাক দিয়েছে বিজেপি।
এ বিষয়ে মন্দিরবাজারের তৃণমূলের বিধায়ক জয়দেব হালদারের বক্তব্য, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। লোকজনকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলেছিলেন উনি। চাকরি দিতে পারেননি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে দিলীপকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই দিলীপ নানা পদ সামলেছেন। এলাকার ডাকাবুকো নেতা দু’বার মন্দিরবাজারের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন। কৃষ্ণপুর পঞ্চায়েতের প্রধানের পদও সামলেছেন। কিন্তু দলীয় গোষ্ঠী কোন্দলে এ বার পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট পাননি। পঞ্চায়েত সমিতিতে ‘নির্দল’ হিসাবে দাঁড়ান। বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতে তাঁর কয়েকজন অনুগামীকেও নির্দল হিসাবে দাঁড় করান বলে তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে।
পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে সুশান্ত লস্কর নামে এক যুবক জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রীকে আইসিডিএসে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন দিলীপ। সেটা ২০১৬ সালের কথা। সুশান্ত পুলিশকে জানিয়েছেন, চাকরির জন্য দফায় দফায় প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন দিলীপকে। কিন্তু চাকরি মেলেনি। মাঝখানে করণিক পদে চাকরি পাওয়ে দেবেন বলেছিলেন দিলীপ। নিয়োগপত্রও দেন। কিন্তু দেখা যায়, সেটি ভুয়ো। সোমবার তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করে। আরও তিন যুবকও ওই দিন থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানিয়েছেন, নানা সময়ে চাকরি দেওয়ার নামে তাঁদের থেকে টাকা নিয়েছিলেন দিলীপ।
পঞ্চায়েত ভোটের ঠিক পরেই কলকাতার এক সভায় মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন দিলীপ।
বিজেপি শিবিরের বক্তব্য, প্রতারণার ঘটনা ঘটে থাকলেও তা দিলীপ তৃণমূলে থাকাকালীন। কিন্তু সে সময়ে কেউ কোনও অভিযোগ করল না। দিলীপ এখন রাজনৈতিক শিবির বদলের পরেই এ সব কথা সামনে আসছে। এ থেকেই বোঝা যায়, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে ফাঁসানো হচ্ছে ওই নেতাকে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রায় ১০ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে দিলীপকে গ্রেফতারের সময়ে বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুরের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy