Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

চালু সীমান্ত বাণিজ্য,  স্বস্তি ব্যবসায়ী মহলে

 সমস্যা মেটাতে মঙ্গলবার দুপুরে পেট্রাপোলে বৈঠকে বসেন বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ট্রাক মালিক সংগঠন,  শ্রমিক সংগঠন,  আমদানি-রফতানি সংগঠন, ট্রান্সপোর্টার্স সংগঠন,  ক্লিয়ারিং এজেন্টদের সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

ট্রাক ঢুকছে বেনাপোলে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

ট্রাক ঢুকছে বেনাপোলে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

সীমান্ত মৈত্র
পেট্রাপোল শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:২০
Share: Save:

অবশেষে পেট্রাপোল-বেনাপোল বন্দর দিয়ে দু’দেশের মধ্যে পণ্য চলাচল শুরু হল মঙ্গলবার বিকেল থেকে। শনিবার থেকে ট্রাক যাওয়া এক রকম থমকে ছিল। শুধুমাত্র পেঁয়াজ, পান-সহ পচনশীল পণ্য-বোঝাই হাতে গোনা কয়েকটি ট্রাক এ দেশ থেকে বাংলাদেশে গিয়েছে।
সমস্যা মেটাতে মঙ্গলবার দুপুরে পেট্রাপোলে বৈঠকে বসেন বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ট্রাক মালিক সংগঠন, শ্রমিক সংগঠন, আমদানি-রফতানি সংগঠন, ট্রান্সপোর্টার্স সংগঠন, ক্লিয়ারিং এজেন্টদের সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বৈঠকে নেতৃত্ব দেন। ছিলেন স্থানীয় ছয়ঘরিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষও।
দীর্ঘ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বাণিজ্য চালু করতে হবে। ফোনে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ দেশের প্রতিনিধিরা কথা বলেন। সীমান্তের ও দিক থেকে আশ্বাস মিলেছে, এখন থেকে এ দেশ থেকে যাওয়া পণ্য-বোঝাই ট্রাকের জন্য নির্দিষ্ট টাকা নেওয়া হবে।
শঙ্কর বলেন, ‘‘এ দিন দু’দেশের বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের একটি যৌথ কমিটি তৈরি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে বাণিজ্য-সংক্রান্ত কোনও সমস্যা হলে ওই কমিটি আলোচনা করে সমস্যা মেটাবে।’’ ঠিক হয়েছে, এখন থেকে ১০ চাকার ট্রাকের জন্য বাংলাদেশ নেবে ১৭০০ টাকা।
এ দেশ থেকে বেনাপোলে যাওয়া ট্রাক চালকদের কাছ থেকে নিরাপত্তা, পণ্য ওঠানো-নামানো, শৌচাগার ব্যবহার, পার্কিং ফি-সহ নানা বিষয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে মতো টাকা নিচ্ছিল বলে অভিযোগ। ১২ সেপ্টেম্বর দু’দেশের প্রতিনিধিরা বৈঠক করে একটি নির্দিষ্ট টাকা ধার্য করেন। অভিযোগ, এরপরেও বেশি টাকা চাইছিল বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ।
তারই প্রতিবাদে এ দেশের ট্রাক মালিক ও পরিবহণ ব্যবসায়ীরা আন্দোলন শুরু করেন। চালক-খালাসিরা ও দেশে যেতে অস্বীকার করেন। পণ্য রফতানি কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।
তবে বণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত একটা বড় অংশের মানুষ দাবি তুলেছেন, সমস্যা যা-ই হোক, বাণিজ্য বন্ধ রেখে আন্দোলনের পক্ষে তাঁরা নন। তাঁদের দাবি, দু’দেশেই নানা সমস্যা রয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। বাণিজ্য বন্ধ থাকলে শুল্ক দফতর রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রা আয় থেকে বঞ্চিত হয়। ব্যবসায়ীরাও আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘এমনিতে এখন পেট্রাপোল-বেনাপোলের মধ্যে ট্রাকের যাতায়াত কমে গিয়েছে। ব্যবসায়ীরা ঘোজাডাঙা-সহ অন্য জলপথ বন্দরে চলে যাচ্ছেন। তাই এখানে বাণিজ্য বন্ধ থাকলে ব্যবসায়ীরা আরও আগ্রহ হারাবেন।’’
বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচ বছর আগেও রোজ গড়ে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সাধারণ পণ্য নিয়ে সাড়ে তিনশো থেকে চারশো ট্রাক বেনাপোলে যেত। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ২০০-২৫০টি। ক্লিয়ারিং এজেন্ট সংগঠনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের বেশি টাকা নেওয়া যেমন মেনে নেওয়া যায় না, তেমনই বিনা নোটিসে বাণিজ্য বন্ধ করাটাও ঠিক হয়নি।’’ পেট্রাপোল এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক পরিতোষ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আগামী বছর জানুয়ারি মাস থেকে বাংলাদেশের আমদানিকারীরা এ দেশের রফতানিকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ও দেশের যাবতীয় খরচ মিটিয়ে দেবেন। আলাদা করে কাউকে টাকা দিতে হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Trade Border Area Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE