Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Tree

গাছ সরানো হয়নি দেড় মাসেও, বাস ভাঙা বাড়িতেই

এত দিন পরেও কোনও সাহায্য না-মেলায় নিজেরাই গাছ সরানোর কাজ শুরু করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

ভোগান্তি: আমপানে উল্টে পড়া এই গাছই নিজেরা কেটে সরানোর ব্যবস্থা করেছেন তেলিয়া পাড়ুইপাড়ার বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র

ভোগান্তি: আমপানে উল্টে পড়া এই গাছই নিজেরা কেটে সরানোর ব্যবস্থা করেছেন তেলিয়া পাড়ুইপাড়ার বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২০ ০২:৫৮
Share: Save:

আমপানের দাপটে উপড়ে পড়েছিল প্রাচীন, বিশাল একটি তেঁতুল গাছ। সেটি চাপা পড়ে ভেঙে যায় পুরনো একটি মন্দির-সহ চারটি বসত বাড়িও। তার পরে কেটে গিয়েছে দেড় মাস। কিন্তু বাড়িগুলির উপর থেকে গাছ সরাতে প্রশাসন তৎপর হয়নি বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিকদের। তাঁদের আরও অভিযোগ, ভেঙে পড়া বাড়ি মেরামতির জন্য মেলেনি সরকারি সাহায্যও। বাধ্য হয়েই বর্ষার সময়ে ভাঙা ঘরে থাকছেন তাঁরা। এমনই চিত্র দেগঙ্গা ২ পঞ্চায়েতের তেলিয়া পাড়ুইপাড়ায়।

এত দিন পরেও কোনও সাহায্য না-মেলায় নিজেরাই গাছ সরানোর কাজ শুরু করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সম্প্রতি ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, শুরু হয়েছে গাছ কাটার কাজ। এর জন্য তোলা হয়েছে চাঁদা। তবে বিশাল গাছটি কেটে, সরিয়ে কত দিনে বাড়ি মেরামত করা যাবে, তা নিয়ে ধন্দে আছেন সকলেই। প্রশাসনের তরফে এখনও গাছটি কেটে নিয়ে না-যাওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে এলাকায়।

ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়ির মালিক সাগর পাড়ুই বলেন, ‘‘আমপানের দিনে স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে ঘরেই ছিলাম। হঠাৎ বড় গাছটি ঘরের উপরে ভেঙে পড়ে। টালির ছাউনি, দেওয়াল ভেঙে আমরা চাপা পড়ে যাই। সারা রাত কোনও রকমে সবাই কাঠের চৌকির নীচে আশ্রয় নিয়েছিলাম। সকালে পাড়ার লোকজন গাছের ডাল সরিয়ে আমাদের উদ্ধার করেন।’’

ক্ষোভ ঝরে পড়ে হারানি পাড়ুইয়ের গলাতেও। তিনিও ঝড়ের রাতে ভাঙা ঘরের মধ্যে বন্দি ছিলেন। হারানি বলেন, ‘‘তখন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য আমাদের স্কুলঘরে থাকতে বলেছিলেন। ভাঙা ঘরের ছবি দিয়ে আবেদন করলেও সাহায্য মেলেনি এখনও। তাই নিজেরাই গাছ কেটে সরানোর চেষ্টা করছি।’’ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় টাকা পেয়ে পাকা বাড়ি করেছিলেন সহদেব পাড়ুই। সেই বাড়ির ছাদ ভেঙেছে তেঁতুল গাছের মোটা ডাল পড়ে। ঘরে ঢুকছে বৃষ্টির জল। সহদেব বলেন, ‘‘বারবার জানালেও কেউ কোনও সাহায্য করছেন না। সবাইকে নিয়ে ভয়ে ভয়ে ভাঙা বাড়িতেই রয়েছি।’’

ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য, তৃণমূলের অর্জুন প্রামাণিক বলেন, ‘‘ঝড়ের পরে দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের লোকেরা এসে কিছুটা ডালপালা কেটে চলে যান। তার পরে কেউ গাছটি কাটতে না-আসায় স্থানীয় মানুষদের নিয়ে আমরাই সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি।’’ সাহায্য না-মেলার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সাহায্যের দ্বিতীয় তালিকা এখনও প্রকাশ হয়নি। আশা করি ক্ষতিগ্রস্তেরা দ্রুত টাকা পেয়ে যাবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tree Deganga Amphan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE