ছবি: সংগৃহীত।
পোলেরহাট ২ পঞ্চায়েতের প্রথম সভা হবে ওই পঞ্চায়েতের কার্যালয়েই।
মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত ওই প্রস্তাব দেন। রাজ্যের প্রস্তাব মেনে নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ ভাঙড় ২ বিডিও ও বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে, কবে ওই সভা হবে, তা আলোচনা করে ঠিক করতে। ওই পঞ্চায়েতের প্রধান বা উপপ্রধান কে হবেন, তা ওই সভায় ঠিক হওয়ার কথা।
তবে একই সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ওই সভায় যে সব নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করবেন, তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে পুলিশ সুপারকে। পুলিশ সুপার বা মহকুমাশাসককে একটি হেল্পলাইনের ব্যবস্থা করতে হবে। সভায় যোগ দিতে গিয়ে কোনও সদস্য নিরাপত্তার অভাব বোধ করলে তিনি ওই নম্বরে ফোন করে পুলিশের কাছে প্রয়োজনীয় সাহায্য চাইবেন। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিডিওকে প্রথম সভার আগাগোড়া ‘ভিডিওগ্রাফি’ করার অনুমতিও দিয়েছে আদালত।
জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘হাইকোর্ট দ্রুত বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছে বলে শুনেছি। অর্ডারের কপি হাতে পেলে আমরা দ্রুত ওই পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে দেব।’’
এ বিষয়ে জমি কমিটির মুখপাত্র অলীক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে, তা আমরা মাথা পেতে নিয়েছি। তবে পঞ্চায়েতে দুষ্কৃতীদের প্রবেশ এলাকার মানুষ মেনে নেবেন না। দুষ্কৃতীরা পঞ্চায়েতে প্রবেশ করতে গেলেই এলাকার মানুষ বাধা দেবেন।’’
তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের ছেলে তথা ওই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান হাকিমুল ইসলামের কথায়, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন হোক। হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, দ্রুত পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের। আমরা বোর্ড গঠনের জন্য প্রস্তুত। যদি কেউ হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে বোর্ড গঠনে বাধা দেয়, তা হলে প্রশাসন তাদের মতো ব্যবস্থা নেবে।’’
বিডিও ও পুলিশ সুপারকে ওই নির্দেশ দিতে গিয়ে বিচারপতি দত্ত এ দিন পর্যবেক্ষণ করেন, ‘‘ওই সভার জন্য কোনও প্রাণহানি ঘটুক, তা কোনও মতেই কাম্য নয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পুলিশেরই।’’
গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পোলেরহাট ২ পঞ্চায়েতে প্রধান, উপপ্রধান নির্বাচনের প্রথম সভা হচ্ছিল না। গত ১৪ জুন মহকুমাশাসকের কার্যালয় জানায়, ২৫ জুন প্রথম সভা হবে। কিন্তু ২২ জুন ফের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, অনিবার্য কারণে সভা হবে না।
২২ জুনের বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেন জয়ী নির্দল প্রার্থী লতিব বৈদ্য। ৯ জুলাই বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় নির্দেশ দেন জেলাশাসকের দফতরে সভা করতে। ইতিমধ্যে বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে বিচারপতি দত্তের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন ওই পঞ্চায়েতের অন্য দুই নির্দল প্রার্থী আজিজুল মোল্লা ও ছালোয়ারা বিবি। তাঁদের বক্তব্য ছিল, পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী, জেলাশাসকের কার্যালয়ে ওই সভা হতে পারে না। সভা হতে হবে পঞ্চায়েত কার্যালয় বা পঞ্চায়েত এলাকায়।৩০ জুলাই সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি দত্তের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য বারুইপুরের পুলিশ সুপারের একটি রিপোর্ট পেশ করে। সূত্রের খবর, তাতে লেখা ছিল, ওই সভা হলে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হবে। তা দেখে বিচারপতি দত্ত পর্যবেক্ষণ করেছিলেন, যে পুলিশ সুপার আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না, তাঁর ওই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার কোনও অধিকার নেই। তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দেব, পুলিশ সুপারকে বদলি করতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy