Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
নৈহাটি পুরসভা

আর কাজ চালাতে পারছি না: পুরপ্রধান

তৃণমূলের সিংহভাগ কাউন্সিলর ইতিমধ্যে তাঁদের শিবিরে গিয়েছেন বলে দাবি বিজেপির। মঙ্গলবার পর্যন্ত পুরকর্মীদের বেতনও হয়নি। অনিশ্চয়তায় ভুগছেন পুরসভার প্রায় ৫০০ কর্মী।

নৈহাটি পুরসভা। নিজস্ব চিত্র

নৈহাটি পুরসভা। নিজস্ব চিত্র

সুপ্রকাশ মণ্ডল
শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৯ ০০:৫৪
Share: Save:

রাজ্য চেয়েছিল, এখনই প্রশাসক বসুক। তবে প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ জানিয়ে দিয়েছেন, সে ক্ষেত্রে আইনি সমস্যায় পড়তে হতে পারে। তবে নৈহাটি পুরসভায় কার্যত অচলাবস্থা চলছে, সে কথা মানছে সব পক্ষই।

তৃণমূলের সিংহভাগ কাউন্সিলর ইতিমধ্যে তাঁদের শিবিরে গিয়েছেন বলে দাবি বিজেপির। মঙ্গলবার পর্যন্ত পুরকর্মীদের বেতনও হয়নি। অনিশ্চয়তায় ভুগছেন পুরসভার প্রায় ৫০০ কর্মী। পুর পরিষেবাও বেহাল, অভিযোগ বাসিন্দাদের। পুরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, মঙ্গলবার তিনি বেতনের চেকে সই করেছেন। দ্রুত বেতন হয়ে যাওয়ার কথা। পুরসভা অচলাবস্থা নিয়ে তিনি মন্তব্য করতে না চাইলেও পুরসভা চালানো নিয়ে তাঁর অপারগতার কথা ইতিমধ্যেই সরকারকে জানিয়েছেন বলে জানান পুরপ্রধান। যাকে হাতিয়ার করে সরকার নৈহাটি পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করতে পারে বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের। ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি জেতার পরেই নৈহাটি-সহ বিভিন্ন এলাকায় দলবল শুরু হয়। তৃণমূলের বেশ কয়েকটি পার্টি অফিস বিজেপি দখল করে নেয় বলে অভিযোগ। তৃণমূল কর্মীরা বাড়ি থেকে বেরোতে পর্যন্ত পারছিলেন না বলেও অভিযোগ ওঠে। পুরসভায় হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে পদ্মশিবিরের বিরুদ্ধে।

এই পরিস্থিতিতে পুরপ্রধান-সহ বাকি চেয়ারম্যান পারিষদেরা পুরসভায় আসা বন্ধ করে দেন। শুরু হয়ে যায় প্রশাসনিক অচলাবস্থা। বিভিন্ন এলাকায় পরিষেবাও ধাক্কা খায় বলে অভিযোগ। নৈহাটি স্টেডিয়ামে আন্তঃরাজ্য অনূর্ধ্ব ১৯ ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। ডামাডোলের কারণে সেই প্রতিযোগিতাও সরিয়ে কল্যাণী স্টেডিয়ামে নিয়ে যাওয়া হয়।

পুরপ্রধান বলেন, ‘‘স্টেডিয়ামে তালা মেরে দেওয়া হয়েছিল। জোর করে ঢুকে জলের কল খুলে নেওয়া হয়েছিল। আইএফএ থেকে আমাকে ফোন করলে আমি তাঁদেরকে জানিয়েছিলাম, খেলার পরিবেশ নেই। ভিনরাজ্যের দল এলে তাতে রাজ্যের বদনাম হত।’’ নৈহাটি পুরসভার কর্মীরা অনেকে জানালেন, প্রতিমাসের শেষ দিনে তাঁদের বেতন হয়ে যায়। কিন্তু অচলাবস্থার জন্য এ মাসের বেতন ৪ তারিখ পর্যন্ত তা হয়নি। পুরপ্রধান বেতনের চেকে সই না করায় পুর প্রশাসন টাকার সংস্থান করতে পারেনি। কর্মীরা বারবার পুরপ্রধানের কাছে আবেদন করেন। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার বিকেলে অশোক বেতনের চেকে সই করেন। তিনি বলেন, ‘‘পুরবোর্ড বৈধ না অবৈধ আমি জানি না। এখনও আমিই পুরপ্রধান। ফলে কর্মীদের অনুরোধে আমি বেতনের চেকে সই করেছি। বেতনের টাকা না পেলে অনেকের সংসার অচল হয়ে পড়বে।’’ কিন্তু পুরসভায় কি প্রশাসক বসছে? ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক জানান, এমন কোনও সরকারি নির্দেশিকা তিনি পাননি। অশোকবাবু জানান, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কেন পুরসভায় প্রশাসক বসানো হবে না, তা জানানো হোক। অশোক জানান, তিনি জানিয়েছেন পুরসভায় হামলা হয়েছে। তাঁর ঘরেও ভাঙচুর চলেছে। এই অবস্থায় পুরসভা চালানো তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।

তাঁর এই চিঠির ভিত্তিতে প্রশাসক বসতে পারে বলে সরকারি আধিকারিকেরা একাংশ মনে করছেন। পুর আইনে এই পরিস্থিতিতে কী নিদান আছে, তার খোঁজ করতে শুরু করেছেন কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Naihati TMC Politics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE