বাড়ির দাওয়ায় চলছে পড়াশোনা। —নিজস্ব চিত্র।
টালির চালের বাড়ি থেকে শোনা যাচ্ছে ছোটদের ছড়া পড়ার আওয়াজ। খাল পেরোতেই দেখা মিলল একটি বাড়ির বারান্দায় চৌকির উপর গাদাগাদি করে বসে পড়ছে কচিকাঁচার দল। সঙ্গে রয়েছেন প্রসূতিরাও।
মন্দিরবাজারের নিশাপুর পঞ্চায়েতে টেকপাঁজা কলোনিপাড়া এমপি ২০ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব কোনও ভবন নেই।
পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশুদের অপুষ্টি দূর করা, প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়া এবং প্রসূতিদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মূল দায়িত্ব। ২০০০ সাল থেকে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের শিশু বিকাশ প্রকল্পের অধীনে অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রগুলি চালু হয়েছে। অনুমোদনের পরে অনেক কেন্দ্রেরই নিজস্ব ভবন জোটেনি। বেহাল পরিকাঠামোতেই চলছে কাজ।
ওই কেন্দ্রের কর্মী তাহারুনেশা বিবি গাজি জানান, কেন্দ্রে শিশু, প্রসূতি মিলিয়ে প্রায় ১৮২ জন রয়েছেন। উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। বাড়ির সামনে তিন শতক জমি ভবন নির্মাণের জন্য দান করা রয়েছে। কিন্তু টাকা অনুমোদন না হওয়ায় নির্মাণ কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।
মন্দিরবাজার ব্লকে এখন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংখ্যা ২৭৭টি। এর মধ্যে নিজস্ব ভবন রয়েছে ৬৮টির। বাকি কেন্দ্রগুলির কোনওটি চলছে বাড়ির বারান্দায়, ক্লাবঘরে, কোনওটি আবার পরিত্যক্ত আটচালায়।
সমস্যা সেখানেই শেষ নয়। কেন্দ্রগুলি ঠিকঠাক চলছে কিনা বা পরিষেবার কোনও সমস্যা আছে কিনা তা প্রতিনিয়ত পরিদর্শন করছেন সুপার ভাইজার। দীর্ঘ দিন ধরে নতুন কোনও সুপারভাইজার নিয়োগ না হওয়ায় সেখানেও কর্মী সংকট রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, একজন সুপারভাইজারের দায়িত্বে থাকে ২০টি করে কেন্দ্র। কিন্তু মন্দিরবাজার ব্লকে সুপারভাইজার রয়েছেন মাত্র ৫ জন। সেখানে এক এক জন কর্মীকে সামলাতে হচ্ছে ৫০-৫৫টি করে কেন্দ্র।
ব্লকের এক সুপার ভাইজার রিনা রাউত বলেন, ‘‘প্রত্যন্ত এলাকার গ্রামে অঙ্গনওয়াড়ি পরিদর্শনে সময় মতো যাওয়া যায় না। এমনকী, পরিষেবা কেমন দিচ্ছে তা-ও জানা যাচ্ছে না। তবে নিয়মিত কেন্দ্রের কর্মীদের ডেকে সভা করা হয়। সে সময়ে খুঁটিনাটি খোঁজ খবর নেওয়ার চেষ্টা করি।’’
মন্দিরবাজার ব্লকের শিশু বিকাশ প্রকল্পের আধিকারিক এমএম নজোর বলেন, ‘‘জমির অভাবে কেন্দ্রগুলির ভবন নির্মাণ করা যাচ্ছে না। এমনকী, কিছু কিছু জমি পাওয়া গেলেও চাকরির দাবি করায় তা নেওয়া যাচ্ছে না। সুপারভাইজার পদে কর্মীর সঙ্কট থাকায় সঠিক পরিষেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy