Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর গন্ডগোল

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে ঘটকপুকুরে একটি অস্থায়ী মাছ বাজার রয়েছে। ওই বাজারে প্রায় ৬০ জন মাছ ব্যবসায়ী ব্যবসা করেন। ওই মাছ বাজারে পানীয় জলের সমস্যা, নিকাশি সমস্যা-সহ রোদ, বৃষ্টির মধ্যে কষ্ট করে দিনের পর দিন তাঁদের ব্যবসা করতে হয়।

এই মাছ বাজারকে কেন্দ্র করেই গন্ডগোল। —নিজস্ব চিত্র

এই মাছ বাজারকে কেন্দ্র করেই গন্ডগোল। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৯ ০০:২৪
Share: Save:

মাছ বাজারের সংস্কার করা নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মারামারিতে গুরুতর জখম হলেন বেশ কয়েকজন। শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ভাঙড়ের ঘটকপুকুর এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। কেউ গ্রেফতার হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে ঘটকপুকুরে একটি অস্থায়ী মাছ বাজার রয়েছে। ওই বাজারে প্রায় ৬০ জন মাছ ব্যবসায়ী ব্যবসা করেন। ওই মাছ বাজারে পানীয় জলের সমস্যা, নিকাশি সমস্যা-সহ রোদ, বৃষ্টির মধ্যে কষ্ট করে দিনের পর দিন তাঁদের ব্যবসা করতে হয়। মাছ ব্যবসায়ীদের আবেদন অনুযায়ী বাজারের তৎকালীন ব্যবসায়ী সমিতি ঠিক করে একটি পাকা ভবন তৈরি করে সেখানে মাছ ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে।

সেই মতো সম্প্রতি ঘটকপুকুরে ওই মাছ বাজারের নতুন ভবনের কাজ শুরু হয়। বাজারটি যেখানে তৈরি হচ্ছে সেখানে একটি বড় পুকুর রয়েছে। অভিযোগ, মাছ বাজার করতে গিয়ে ওই পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে। এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চলে যান ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আরাবুল ইসলাম ও তাঁর অনুগামীরা। আরাবুল জোর করে নবনির্মিত মাছ বাজারের কাজ বন্ধ করে দিতে চাইলে সেখানে গিয়ে প্রতিবাদ জানান ভাঙড় ১ ব্লক তৃণমূলের নেতা কাইজার আহমেদের ঘনিষ্ঠ আয়নাল আলি মোল্লা।

এ নিয়ে আরাবুলের সঙ্গে বচসা বাধে আয়নালের। অভিযোগ, আরাবুলকে তিনি বলেন, ‘‘আপনি ভাঙড় ২ ব্লক এলাকার নেতা। আপনি এ ভাবে এখানে এসে কাজ বন্ধ করে দিতে পারেন না। আপনার যদি কোনও অভিযোগ থাকে তাহলে বাজার কমিটি অথবা প্রশাসনের দফতরে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসুন।’’ অভিযোগ, এই ঘটনার পর আরাবুল ঘনিষ্ঠ কয়েকজন কর্মী-সমর্থক ভাঙড় ১ ব্লক তৃণমূলের নেতা কাইজার আহমেদের অফিসের সামনে গিয়ে হুমকি দিতে থাকে। কাইজারদের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ।

এই নিয়ে কাইজার অনুগামীরা পাল্টা রুখে দাঁড়ালে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি-মারামারি বেধে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ বাহিনী আসে। ছিলেন ডিএসপি সৌম্যানন্দ সরকার।

ঘটকপুকুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আয়নাল বলেন, ‘‘আরাবুল ইসলাম যখন ভাঙড়ের বিধায়ক ছিলেন সে সময়ে ২০১০ সালে ঘটকপুকুর মাছ বাজারের নতুন ভবনের জন্য রেজুলেশন করা হয়। সে সময়ে ঠিক হয়েছিল, মাছ ব্যবসায়ীরা ৩৫ হাজার টাকা করে দেবে এবং বাকি টাকা ব্যবসায়ী সমিতি দিয়ে ওই নতুন মাছ বাজার তৈরি হবে। সেই কাজ সম্প্রতি শুরু হয়েছে। এখন সেই কাজ আরাবুল বন্ধ করতে চাইছেন।’’

অভিযোগ উড়িয়ে আরবুল বলেন, ‘‘আমি কোনও অশান্তি বাধাতে যাইনি। যেখানেই মানুষের সমস্যা হবে, তাঁদের প্রতি অন্যায় হবে সেখানেই আমি ছুটে যাব। ওই এলাকায় পুকুর বুজিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই নিয়ে ওই এলাকার মানুষ আমাকে জানান তাই আমি গিয়েছি। প্রয়োজনে আমি আবারও যাব।’’

কাইজার বলেন, ‘‘মাছ বাজারে কী সমস্যা হয়েছে তা নিয়ে কিছু সমাজ বিরোধী আমার অফিসের সামনে এসে আমাকে গালিগালাজ করতে থাকে। এই নিয়ে আমার অনুগামীরা প্রতিবাদ করলে দু’পক্ষের মধ্যে একটা গন্ডগোল হয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওই মাছ বাজার এলাকায় একটা পুকুর ভরাট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আমি এ বিষয়ে ভূমি সংস্কার দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা ওই পুকুরটির সংস্কার করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Bhangar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE