Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ, শিক্ষকদের অবস্থান

প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে ক্লাস বন্ধ রেখে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন শিক্ষকেরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে তালদি মোহনচাঁদ হাইস্কুলের প্রায় ৩০ জন শিক্ষক ওই কর্মসূচিতে সামিল হন।

স্কুলে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

স্কুলে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ক্যানিং শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৬ ০২:৩১
Share: Save:

প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে ক্লাস বন্ধ রেখে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন শিক্ষকেরা।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে তালদি মোহনচাঁদ হাইস্কুলের প্রায় ৩০ জন শিক্ষক ওই কর্মসূচিতে সামিল হন। তাঁদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক স্বৈরাচার চালাচ্ছেন। তিনি স্কুলের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ভেঙে নিজের মতো করে কাউন্সিল গঠন করে স্কুলের রুটিন, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করছেন। স্কুলের কোনও শিক্ষকের তৈরি প্রশ্নপত্র গ্রহণ করছেন না। নিজের মতো করে বুক লিস্ট, সিলেবাস, এমন কী পরীক্ষার দিনক্ষণও ঠিক করছেন। শিক্ষক শিক্ষিকাদের তিনি বিএড পড়তে দিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ।

ফলে ওই সব শিক্ষক-শিক্ষিকারা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অনৈতিক ভাবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন কেটে নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। মিড ডে মিল নিয়েও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলছেন শিক্ষকেরা করছেন। এ ছাড়াও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভুরি ভুরি।

এ দিন বিক্ষোভের খবর পেয়ে স্কুলে আসেন ক্যানিং ১ বিডিও বুদ্ধদেব দাস। তিনি ওই সব শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। কিন্তু আন্দোলনকারীরা অবস্থানে অনড় থাকেন। সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত বিডিও উভয়পক্ষের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ চেয়ে স্কুল থেকে চলে যান। বুদ্ধদেববাবু জানিয়েছেন, সমস্যার কথা তিনি মহকুমাশাসক ও স্কুল শিক্ষা পরিদর্শককে জানিয়েছেন।

স্কুলের শিক্ষক সুপ্রকাশ পোদ্দার, মসিখুদার রহমান, দিবাকর মণ্ডলরা বলেন, ‘‘কোনও সমস্যা নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে গেলে তিনি শুনতেই চান না। শিক্ষকদের অপমান করে বের করে দেন।’’ শিক্ষিকা বর্ণালী নাথ বলেন, ‘‘মহিলাদের জন্য শৌচালয় নেই। যে শৌচালয় আছে, তা ব্যবহারের অযোগ্য। মেয়েদের নানা সমস্যা থাকে। সে জন্য কোনও বিশেষ ব্যবস্থা নেই। অনেক ছাত্রী সংকোচের জন্য স্কুলে আসতেই চায় না। এ রকম নানা বিষয় নিয়ে প্রধান শিক্ষককে বলতে গেলে তিনি কোনও কথা কানেই তোলেন না।’’

স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি উমাশঙ্কর সর্দারের কথায়, ‘‘প্রধান শিক্ষক নিজের মতো করে সব কিছু করতে চাইছেন। পরিচালন সমিতিতে আলোচনা করেন না। স্কুলের ভবন ভেঙে পড়ছে। অথচ সর্বশিক্ষা মিশনের টাকার কোনও হিসাব তিনি ঠিকমতো দিচ্ছেন না।’’

তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক সঞ্জয়কুমার নস্কর বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। আসলে আমি এই স্কুলে দায়িত্ব নেওয়ার পরে স্কুলের নানা অপকর্ম বন্ধ করে দিয়েছি। স্কুলে সিসিটিভি বসিয়েছি। এতে অনেকের সমস্যা তৈরি হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, এ সবের জেরেই কিছু শিক্ষক তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করছেন। অফিসে ঢুকে সিসিটিভি ভেঙে দিয়ে গিয়েছেন কেউ।’’ সঞ্জয়বাবু আরও বলেন, ‘‘আমি দায়িত্বে আসার পরে এই স্কুল মডেল স্কুলের শিরোপা পেয়েছে। এটা অনেকে ভাল ভাবে নিতে পারছেন না। তাই চক্রান্ত করে এ সব বলছেন।’’

জেলার স্কুল পরিদর্শক বাদল পাত্র বলেন, ‘‘এমন একটি ঘটনার কথা শুনেছি। আমি এআই ও বিডিওকে পাঠিয়েছিলাম। তাঁদের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তিনি জানান, আপাতত শিক্ষকদের অবস্থান তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Teacher Position complain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE